বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেশের তিনটি বিভাগীয় সদরের পরে ৫ নভেম্বর বরিশাল মহানগরীতে বিএনপি’র বিভাগীয় মহাসমাবেশ ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রাণ সঞ্চার হলেও নানামুখি সন্দেহের সাথে আতংকও কাজ করছে। গত শণিবার খুলনায় মহাসমাবেশকে ঘিরে কয়েকদিন তান্ডব সহ যে অস্থিরতা আর অস্বাভাবিক পরিবেশ চলছিল, তারই ধারাবাহিকতা বরিশালেও শুরু হবে কিনা, সে প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলে বিএনপি’র নেতা-কর্মী সহ সাধারন মানুষের মাঝেও। সাধারন জনগনের মাঝেও বিষয়টি নিয়ে নানা অস্বস্তি শুরু হয়েছে। নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেল পার্ক) ৫ নভেম্বরের বরিশাল বিভাগীয় মহাসমাবেশের জন্য জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে বলে বিএনপি নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন।
কিন্তু বিশেষ করে মহাসমাবেশের আগের দুটি দিন বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলে কি পরিবেশ সৃষ্টি হয় তা নিয়ে জনমনেও অস্বস্তি শুরু হয়েছে। এমনকি ৫ নভেম্বর যেসব বিয়ের অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারিত ছিল তা ইতোমধ্যে বাতিল হতেও শুরু করেছে। মহানগরীর অভিজাত ‘বরিশাল ক্লাব’এ ৫ নভেম্বরের বিয়ের অনুষ্ঠানও বাতিল করেছেন আয়োজকরা। বিশেষ করে খুলনার মহাসমাবেশ কেন্দ্রীক গত কয়েক দিনের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ইতোমধ্যে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের জনমনে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
তবে বরিশাল বিভাগীয় মহাসমাবেশকে সফল করতে ইতোমধ্যে বরিশাল জেলা এবং মহানগর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন সহ দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলাগুলোতেও প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। গত শণিবার খুলনার মহাসমাবেশে যোগদানকারী কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বরিশালে একটি প্রস্তুতি সভায় অংশ গ্রহন করেই সেখানে পৌছান। এখানে তারা ৫ নভেম্বরের মহাসমাবেশ সফল করতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে বেশ কিছু দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন বলেও জানা গেছে।
অপরদিকে, বরিশাল মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সারোয়ারও রোববার তার বাস ভবনে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এক দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠানে সমবেত দলীয় নেতা কর্মীদের ৫ নভেম্বর বরিশাল বিভাগীয় মহাসমাবশ সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন। বরিশাল সদর আসনে ৪ বারের এমপি এবং সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র সারোয়ার আসন্ন এ মহাসমাবেশে সর্বকালের সর্বোচ্চ জনসমাগমের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি যেকোন বাধা বিঘœ ও দমন পীড়ন অতিক্রম করেই সমাবেশে যোগদানের প্রস্তুতি গ্রহনেরও পরামর্শ দেন। তবে খুলনা সহ অন্য কয়েকটি মহাসমাবেশে শাষক দল ও প্রশাসনের দমন পীড়ন থেকে শিক্ষা নিয়ে বরিশালের মহাসমাবেশে সে ধরনের পরিাস্থিতি সৃষ্টি করা হবেনা বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন সারোয়ার।
অপরদিকে বরিশাল মহানগর বিএনপি’র আহবায়ক মুনিরুজ্জামান ফারুখ জানিয়েছেন, ৫ নভেম্বর বেল পার্কে বরিশাল বিভাগীয় মহাসমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বরিশাল মহানগরী সহ দুটি সাংগঠনিক জেলা ছাড়াও দক্ষিণাঞ্চলের অপর ৫টি জেলার নেতৃবৃন্দের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতা-কর্মীগন এ মহাসমাবেশে যোগদানের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে বলেও জানান তিনি। এ মহাসমাবেশকে ঘিরে খুলনা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামের মত বাধা আসলেও তা অতিক্রম করেও সবাই সমাবেশস্থলে আসবেন বলেও দৃড় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ফারুখ।
এদিকে ৫ নভেম্বরের মহাসমাবেশ সফল করতে বরিশালের বাইরে পটুয়াখালী, ভোলা,পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালবাঠীর নেতৃবৃন্দরা কিছুটা সক্রিয় হতে শুরু করেছেন বলেও জানা গেছে। যেসব জেলা নেতৃবৃন্দ এতদিন রাজধানীতে বসেই জেলার দলীয় রাজনীতি পরিচালনায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন, তাদের কেউ কেউ ইতোমধ্যে এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। আবার কেউ এখনো এলাকায় না ফিরলেও খুব সহসা এলাকায় ফেরার প্রস্তুতি সহ ঘনিষ্ঠ নেতা-কর্মীদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছেন। তারা বরিশালের মহাসমাবেশে যোগদানের বিষয়টি স্মরন করিয়ে দিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
তবে মহাসমাবেশের আগে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক ও নৌ যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে নদ-নদী বহুল দক্ষিণাঞ্চলের বিভাগীয় সদরে পৌছতে কোন বিকল্প পথে কতজনের পক্ষে সম্ভব হবে সে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে প্রশ্ন উঠেছে ইতোমধ্যে। পাশাপাশি বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচীতে বাঁধা দিয়ে সরকার বা সরকারী দলের কতটা লাভ হচ্ছে, তা মূল্যায়নেরও তাগিদ দিয়েছেন মহলটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।