Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অঘোষিত পরিবহনের ধর্মঘটের পর ট্রেনও বন্ধ, চরম দুর্ভোগে যাত্রীদের আরও একদিন

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২২ পিএম

খুলনাগামী অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের পর শনিবার সকালে ট্রেন না আসায় বিপাকে পড়েন শ’শ’ যাত্রী। সকালের দু’টি ট্রেন যশোর স্টেশনে না আসায় ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ভারত ফেরত রোগীদের। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত যশোর রেলস্টেশনে অবস্থান করতে দেখা যায় তাদের। অনেকেই হয়ে পড়েন অসুস্থ। পরিবহনের পর ট্রেন বন্ধ থাকায় ক্ষোভ ঝাড়েন স্টেশনে উপস্থিত যাত্রীরা।

স্ট্রেশন মাস্টার আয়নাল হাসান বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে যশোর ছাড়ে। তবে বগির সমস্যার কারণে সেটি বেনাপোল আসেনি। সকাল ১১টার সাগরদাঁড়ী এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী স্টেশনে ইঞ্জিন নষ্ট হওয়ায় মেরামতের জন্যে সেটিও না পৌঁছানোয় শনিবারে দিনের বেলা কোনো ট্রেন খুলনায় যেতে পারেনি। তবে বিকেলে সাগরদাঁড়ী এক্সপ্রেস যশোরে পৌঁছালে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

শনিবার সারাদিন মণিহার, মুড়লি, টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ থেকে ছেড়ে আসা বাস যশোরে থেমে যাচ্ছে। একই সাথে আঞ্চলিক রুটের বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে। যাত্রীরা ভেঙে ভেঙে বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যে যাচ্ছেন। এজন্য গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

পরিবহন শ্রমিকরা জানান, শুক্রবার সকাল থেকে খুলনাগামী সব ধরণের পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ১৯ রুটের বাস যশোর টার্মিনালে এসে থেমে যাচ্ছে। যাত্রীদের ভোগান্তি হলেও শনিবার সন্ধ্যা থেকে সবকিছু স্বাভাবিক হতে পারে বলে মনে করেন তারা। এদিকে, যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে ইজিবাইক বা নছিমনে করে কেটে কেটে যেতে হচ্ছে। এতো ভোগান্তিতে পড়েন সবাই। অন্যদিকে, খুলনায় যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম ট্রেন শনিবার সকালে যশোরে স্ট্রেশনে না আসায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন হাজার হাজার খুলনাগামী যাত্রী।

যশোর রেলস্ট্রেশনে অবস্থানরত ভারতফেরত যাত্রী গোলাম মোস্তফা বলেন, ভারতে চিকিৎসা শেষে সকাল সাড়ে সাতটায় বেনাপোলে পৌঁছান তারা। সেখানে ট্রেনে করে খুলনায় যেতে চেয়েছিলেন। তবে সেটি হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা করায়, যশোর বাস টার্মিনালে যান। সেখানেও বাস বন্ধ পেয়ে আবার রেলস্ট্রেশনে আসেন। এখানে বিকেলের পর ট্রেন আসবে বলে জানতে পারেন তিনি। ক্ষোভ প্রকাশ করে গোলাম মোস্তফা বলেন, সমাবেশ করে বিএনপি আর ভোগান্তিতে পড়ে সারাদেশের মানুষ।

একইভাবে ভারতে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধা নিত্যানন্দ বিশ্বাস ও তার স্ত্রী অনিলা বিশ্বাস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অসুস্থ অবস্থায় টানা আট ঘণ্টা দাঁড়িয়ে কাটা খুবই কষ্টকর। ট্রেন বন্ধ থাকায় তাদের মতো শত শত ভারতফেরত যাত্রী বিপাকে পড়েছেন। ভারতে তীর্থকাজ থেকে ফিরে মিলন কুমার কুন্ডু জানান, শুক্রবার একাদশী থাকায় সারাদিন না খেয়েই দিন কেটেছে। শনিবার খুলনায় বাড়িতে গিয়ে খাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে সারাদিন স্ট্রেশনেই কাটাতে হবে এটা বুঝতে পারেননি তিনি।

যশোর জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু বলেন, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ যেনো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য মালিকপক্ষ পরিবহন বন্ধ রেখেছে। তবে সন্ধ্যার পর থেকে পরিবহন যাতায়াত স্বাভাবিক হতে পারে বলে শুনতে পেরেছেন তিনি।

যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু জানান, খুলনার মহাসবেশে যাওয়া ঠেকাতে সরকার অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এতে পরিবহন মালিকরা দু’দিন খুলনা রুটে বাস চলাচল বন্ধ ও শনিবার সকালে ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে। তবে সব বাধা পেরিয়ে যশোরের উজ্জীবীত নেতাকর্মীরা খুলনার মহাসমাবেশে পৌঁছে গেছেন বলে জানান তিনি। সমাবেশে জনসমাগম ঠেকাতে বিএনপির অন্তত ৬৩ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার ও রেলস্টেশনে কর্মীদের মারপিট করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ