Inqilab Logo

সোমবার ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সান্তাহার জংশন বাবুই পাখির গানে মুখরিত

বিকালে কৃষ্ণচূড়া গাছের সামনে ভিড় জমে

মো. মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০১ এএম

ঋতু বদলের সাথে সাথে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় সান্তাহার রেলওয়ে জংশনের চারপাশে নতুন এক ভিন্ন পরিবেশ বিরাজ করছে। শেষ বিকাল থেকে সন্ধ্যা এবং ভোর বেলা সম্মিলিত কণ্ঠে পাখির গানে চারদিক মুখরিত হয়ে উঠে। শুধুই কিচিরমিচির শব্দ এবং এই শব্দ অনেক দূর পর্যন্ত শোনা যায়।
সান্তাহার জংশনের ৩ নম্বর প্ল্যাট ফরমের পাশে একটি বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছ। এই গাছই বাবুই পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়। আকাশ ফর্সা হলেই গাছ ছেড়ে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে যায় বাবুই পাখির দল। দিন গড়িয়ে শেষ বিকাল থেকে আবার ফিরতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো কৃষ্ণচূড়া গাছের সবগুলো ডালে দেখা যায় শুধুই বাবুই পাখি। সেই সাথে শুরু হয় তাদের সম্মিলিত কণ্ঠের গান।

বাবুই পাখির এমন সুন্দর মেলা দেখতে প্রতিদিন কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে অপেক্ষামান ট্রেনযাত্রীসহ এলাকার লোকদের ভিড় জমে। বিশেষ করে ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে আসেন তাদের বাব কিংবা বড় ভাইরা। বাবুই পাখির কিচিরমিচির শব্দ বড়দের পাশাাপশি ছোটদের অনেক আনন্দ দেয়।
বাবুই পাখি ও তার গড়া সুনিপুন বাসা এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না। বিশেষ করে গ্রামের যেখানে তালগাছ সেখানেই বাবুই পাখির বাসা। যেমন দৃষ্টিনন্দন তাদের বাসা ঠিক তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড় বৃষ্টি-বাতাসেও টিকে থাকে বাসা।

খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচিপাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতা দিয়ে উঁচু তালগাছে চমৎকার আকৃতির বাসা তৈরি করে বাবুই পাখি। একান্নবর্তী পরিবারের মত এক গাছে থাকে অনেকগুলো বাস। বাবুই পাখি একাধারে শিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনেরও প্রতিচ্ছবি। শক্ত বুননের এ বাসা টেনেও ছেঁড়া কঠিন।
বাবুই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করার জন্য জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় রাখে। বন-জঙ্গলের চেয়ে লোকালয়ে থাকতে বেশি পছন্দ করে। বাবুই পাখি সন্ধ্যা হওয়ার আগেই বাসায় চলে আসে এবং সকাল হলেই বাসা ছেড়ে খাবারে সন্ধানে বেরিয়ে যায়।

সান্তাহার এলাকায় সাইলো সড়কে তালগাছেও আর বাবুই পাখির দেখা মিলে না। তবে হঠাৎ করে সান্তাহার রেলওয়ে জংশনে কৃষ্ণচূড়া গাছে বাবুই পাখির মেলা দেখার জন্য সব বয়সের লোকদের ভিড় বেড়েই চলেছে। বাবুই পাখি দেখে সবাই মুগ্ধ হয়ে ঘরে ফিরছেন। আবার অনেককে প্রতিদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝাকে ঝাকে বাবুই পাখি বসা কৃষ্ণচূড়া গাছকে পেছনে রেখে মোবাইল ক্যামেরায় সেলফি তোলায় ব্যস্ত দেখা যায়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ