Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনের ‘অনিয়ম’ খতিয়ে দেখতে ইসির তৃতীয় দিনের তদন্ত অনুষ্ঠিত

গাইবান্ধা থেকে স্টাফ রিপোটার | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০২২, ৯:৩৫ পিএম

বন্ধ হওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনের ‘ব্যাপক অনিয়ম’ খতিয়ে দেখতে মাঠে নামে ইসি গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। এতে মাঠ প্রশাসন, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাসহ তিনদিনে ৬৮৫ জনকে শুনানির আওতায় আনা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার শেষদিনে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের বন্ধ হওয়া উপ-নির্বাচনে অংশ নেওয়া পাঁচ প্রার্থীর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ, ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার, সকাল ৯টা থেকে গাইবান্ধা সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে এই শুনানি শুরু করেন ইসির অতিরিক্ত সচিব ও গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অশোক কুমার দেবনাথ, সদস্যসচিব ও ইসির যুগ্ম সচিব মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী এবং যুগ্ম সচিব মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস। সেখানে প্রত্যেক প্রার্থী তাদের লিখিত বক্তব্য তদন্ত কমিটির কাছে জমা দেন।

তৃতীয় দিনের শুনানিতে ওই নির্বাচনের পাঁচ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ১৭ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি ও র্যাবের দুজন কমান্ডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক অলিউর রহমানগ উপস্থিত ছিলেন। সকাল ৯টায় প্রথমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে শুনানি শুর হয়।

শুনানিতে অংশ নেওয়া আওযামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন জানান, তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বিভিন্ন অনিযমের অভিযোগে যে ৫১টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হযয়েছিল সেগুলো বাদ দিয়ে বাকি ৯৪ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু হয়ছে দাবি করে সেগুলোর ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

অন্যদিকে ভোট বর্জন করা চার প্রার্থী জাতীয় পার্টি সমর্থিত এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু (লাঙ্গল প্রতীক), স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল প্রতীক), বিকল্পধারার জাহাঙ্গীর আলম (কুলা প্রতীক) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান (ট্রাক প্রতীক) জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে তারা লিখিত বক্তব্য পেশ করেছেন। কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেবে তারা তা মেনে নিবেন।

উল্লেখ্য ১৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গাইবান্ধা সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে প্রথম দিনের তদন্ত কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১১টি ভোট কেন্দ্রের ১১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৬৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, ৫৫ জন পোলিং এজেন্ট, গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ১৩৬ জনের শুনানি করা হয়।

দ্বিতীয় দফায় ১৯ অক্টোবর বুধবার সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে ৫২২ জন নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের শুনানি সম্পন্ন করা হয়। এরমধ্যে ৪০ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২৭৮ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২০০ জন পোলিং এজেন্ট, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। গত দুইদিনে মাঠ প্রশাসন, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ৬৫৮ জনের শুনানি সম্পন্ন করে তদন্ত কমিটি।

উল্লেখ্য গত ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেয় নির্বাচন কমিশন। সিসিটিভি ক্যামেরায় ভোট পর্যবেক্ষণ করে পর্যায়ক্রমে ৫১টি ভোটকেন্দ্রে ভোট বন্ধ ঘোষণা করেন ইসি। পরে ওই উপ-নির্বাচনের ভোট পুরোপুরি বন্ধ করা হয়।

ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে তদন্তের প্রেক্ষিতের্ শুনানির জন্য আদেশ জারি করে নির্বাচন কমিশন

উল্লেখ্য গত ২৩ জুলাই জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য হয়। আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে এই উপ-নির্বাচনের শেষ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে তবে বিশেষ পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন কমিশন তার বিশেষ ক্ষমতাবলে অনুষ্টিতব্য নির্বাচনের আরও ৯০ দিনের সময় বাড়িয়েছে। সেই হিসেবে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ