Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ফুলপুরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, স্বামী ও শাশুড়ি আটক

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০২২, ৬:২৭ পিএম

ময়মনসিংহের ফুলপুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী আনারুলের বিরুদ্ধে। বুধবার রাত আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার পয়ারী ইউনিয়নের আমলিতলা গ্রামে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘাতক স্বামী ও শ্বাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে। এ ব্যাপারে স্বামীসহ ৮ জনের নাম ও অজ্ঞাত ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে নিহতের মা।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফুলপুর উপজেলার পয়ারী ইউনিয়নের গড়পয়ারী (আমলিতলা) গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে আনারুল ইসলাম (৩৬) সাথে ১০ বছর আগে ফুলপুর পৌরসভার গোদারিয়া গ্রামের তহুর আলীর মেয়ে রোজিনা খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ৩ সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্বামী আনারুলের সাথে স্ত্রী রোজিনা খাতুনের (৩০) পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। প্রায় সময়ই স্ত্রীকে মারপিট করত স্বামী আনারুল। বুধবার রাত অনুমান ১ টার দিকে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া ও কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে স্বাামী আনারুল তার স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী অন্তঃসত্ত্বা রোজিনা খাতুনকে দা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্বক আহত করে উঠানে ফেলে রাখে। সাথে সাথে লোক মারফত সংবাদ পেয়ে পৌর এলাকার গোদারিয়া গ্রাম থেকে রোজিনার মা রোকেয়া মেয়ের বাড়ি আমলিতলা গিয়ে নাতী মীমের (৯) সহযোগিতায় রোজিনাকে উদ্ধার করে ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। সংবাদ পেয়ে ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ডিউটিরত কিলো অফিসার এসআই বকুল সাহা সঙ্গীয় ফোর্স সহ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে রোজিনার লাশ উদ্ধার করেন এবং লাশের সুরতহাল পূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেই সাথে অভিযান চালিয়ে রোজিনার স্বামী আনারুল ও শ্বাশুড়ি জেবুন নাহার (৬০)কে গ্রেফতার করেন। এ ব্যাপারে স্বামী আনারুল ইসলাম, তার ভাই ওয়াজেদুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম,জহিরুল ইসলামসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামী করে রোজিনার মা রোকেয়া খাতুন বাদি হয়ে ফুলপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে রোজিনার মা রোকেয়া জানান, নাতী চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মীম আমাকে মোবাইলে সবকিছু জানানোর পর দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে যাওয়ার পর আমার দিকেও তেড়ে আসে আনারুল। পরে কম কথা বলে কোনমতে রোজিনাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজিনাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাত অনুমান ৪ঃ৩০ ঘটিকার সময় ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে ডিউটিরত ডাক্তার ফোন দিয়ে জানান যে, হাসপাতালে একজন মহিলাকে মৃত অবস্থায় নিয়ে এসেছেন,যার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে আমি ও ডিউটিরত কিলো অফিসার এসআই বকুল সাহা সঙ্গীয় ফোর্স সহ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে একজন মৃত মহিলার লাশ দেখতে পাই। তার নাম রোজিনা খাতুন (৩০)। সাথে সাথে স্বামী আনারুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে রক্ত মাখা দা ,কাপড়-চোপড়, রক্ত মাখা মাটি সহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল পূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ