বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গোয়াইনঘাটের বার্কিপুর গ্রামের প্রবাসী মো. মখলিছুর রহমান অভিযোগ করেছেন, জায়গা-সম্পত্তির লোভে পড়ে এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে নিজের বড় ভাই ও তাদের পরিবারের সদস্য হয়রানি ও নির্যাতন করছেন। প্রাণভয়ে এখন তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বাড়িছাড়া। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। এর আগে, তার বড় ভাই তাজ উদ্দিন সিলেটে অপর এক সংবাদ সম্মেলন করে মখলিছের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন। এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে এই প্রবাসী নিজের অবস্থান তুলে বলেন, ‘আমার জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে প্রবাসে। সব প্রবাসীর মতো আমিও নিজের আরাম-আয়েশের কথা চিন্তা না করে পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য রাত-দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেছি। কিন্তু আপন ভাইদের প্রতিহিংসা ও লোভের শিকার হয়ে আজ আমি বাড়িছাড়া।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে অপপ্রচার চালাচ্ছেন এবং সমাজে আমার সম্মানহানী করছেন। অথচ, আমি প্রবাসে থাকা অবস্থায় পরিবারের সব প্রয়োজন মিটানোর চেষ্টা করেছি। পাশপাশি ২০০৮ সালে আমার নামে ৮ শতক জায়গা ক্রয়ের জন্য আমার বড় ভাই তাজ উদ্দিনের কাছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। তিনি ওই টাকা দিয়ে স্থানীয় উসমান গনি নামের একজনের কাছ থেকে ৮ শতক জায়গা কিনে নিজের নামে দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন। ’ মখলিছুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। দেশে ফিরে আমার নামীয় দলিল চাইলে নানা টালবাহানা শুরু করেন তিনি। দলিলের জন্য চাপ দিলে তিনি আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র এবং হয়রানির শুরু করেন। আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন তিনি। সম্পদের লোভে তার অপকর্মের সহযোগী হন আমারই আরও দুই বড় ভাই তোতা মিয়া ও ইমাম উদ্দিন।’
মূলত জায়গা-সম্পত্তির লোভ থেকেই আপন ভাইয়েরা তার শত্রুতা করছেন অভিযোগ করে এই প্রবাসী আরও বলেন, ‘পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া আমাদের ১৭ বিঘা জমিও দখল করে রেখেছেন তারা। এর মধ্যে ৬ বিঘা জমি স্থানীয় আলাউদ্দিন, রমজান আলী ও জালাল মিয়ার কাছে বন্ধক দিয়ে টাকা নিয়ে এসেছেন। আমার নিজের কেনা একটি জায়গায় বাগান করেছি। প্রবাসে থাকা অবস্থায় সেই বাগান থেকে ২৫টি গাছ কেটে নিয়েছেন তারা।’
এসব বিষয়ে আমার প্রতিবাদ করায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ অন্তসত্তা স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ করেন মখলিছ। তিনি বলেন, ‘ওই দিন আমার স্ত্রীকে প্রাণে মারার উদ্দেশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোাতাড়ি আঘাত করা হয়। অনেক ব্যয়বহুল চিকিৎসার পর আমার স্ত্রী সুস্থ হয়েছেন। তাদের নির্যাতনের কারণে এবং প্রাণের ভয়ে এখন পর্যন্ত আমি ও আমার স্ত্রী-সন্তানরা বাড়িছাড়া।’ গত ১১ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে মখলিছুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন বড় ভাই তাজ উদ্দিন। এসব কিছু তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলে জানান এই প্রবাসী। তিনি বলেন, ‘এসব কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মূলত আমার স্ত্রীকে তারা মারধরের পর আমি যে মামলা দায়ের করি, সে মামলার তদন্তে গিয়ে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। খোঁজ নিলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।’ তিন ভাই সন্ত্রাস প্রকৃতির লোক মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা এলাকার বিভিন্নজনের সঙ্গে এভাবেই মারমুখী আচরণ করেন। তারা মাদকাসক্ত। সহযোগিদের নিয়ে ইতোপূর্বে আমাদের গ্রামের আবু বক্কর নামের একজনকে প্রাণে মেরে ফেলেছেন। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা বিচারাধীন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বনবিভাগের কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায়ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দুই ঘটনা ছাড়াও আমাদের গ্রামের ফরিদ আহমদ নামের এক যুবককে তারা মারধর করে গুরুতর আহত করে। পরবর্তীতে ওই যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এমন অনেক ভয়ঙ্কর ঘটনা তারা ঘটিয়েছেন।’ সংবাদ সম্মেলনে ভাই তাজ উদ্দিন ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটতরাজ, মিথ্যা মামলা দায়ের, প্রবাসে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও মাদকাসক্তির যে সব অভিযোগ করেছেন সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে জানান মখলিছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাকে হয়রানি ও নির্যাতনের পাশাপাশি সমাজে মান-সম্মান ক্ষুন্ন করতে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব বানোয়াট ও মিথ্যা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। ’
বড় ভাইদের অত্যাচার থেকে পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা এবং নিজের জায়গা-সম্পত্তি নির্বিঘেœ ভোগ দখলের সুযোগ করে দিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।