Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গাড়ী বন্ধ করে ঠেকানো যাবে না সমাবেশ

সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

সরকার বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে গাড়ী বন্ধ করে দিয়ে জনসমাগম ঠেকানোর অপচেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আগামী ২২ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ২১ ও ২২ অক্টোবর আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি ও খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। গাড়ী বন্ধের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ময়মনসিংহেও গাড়ী বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। গণসমাবেশ ঠেকাতে পেরেছে? পারেনি। মানুষ ট্রলারে, রিক্সায়, ভ্যানে, পায়ে হেঁটে সমাবেশে উপস্থিত হয়েছে। খুলনাতেও পারবে না। এখানে একইভাবে জনগণ গাড়ী বন্ধ করলেও গণতন্ত্রের দাবিতে অংশগ্রহণ করবে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে চলমান দ্বিতীয় দফা রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে জাতীয় দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। সরকার প্রধান বলেছিলেন বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হবে, কোন বাধা দেয়া হবে না- এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ যে কথা বলেছে সেটা তারা রাখেনি। কারণ তারা বিশ্বাস করে যা বলবো তা করবো না। যা বলে তার ঠিক উল্টোটা করে। সুতরাং আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই। বিএনপি ১/১১ করার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্যের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ১/১১ করেছে এজন্য তারা এটা বলছে। আমরা স্বপ্ন দেখি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার।

সংলাপের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অনির্বাচিত, অবৈধ, ভোটাধিকার হরণকারী, লুটেরা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে তাদের পদত্যাগের দাবিতে ঐক্যমত সৃষ্টি করে আন্দোলনে যাওয়ার যাওয়ার জন্য কথা বলছি। প্রথম পর্যায় শেষ করেছি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৪টি দলের সাথে ইতোমধ্যে কথা হয়েছে। এখানে যে দাবিগুলো উত্থাপন করেছি সেগুলো হচ্ছে- এই সংসদকে ভেঙে দিয়ে, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ করে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকার গঠন করতে হবে। সেই সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। নতুন কমিশন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করে জাতীয় বা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মাতা, আমাদের নেত্রী, যিনি গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যাকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে তাকে মুক্তি দিতে হবে। একইসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।যে হারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য, জ্বালানি তেল এবং সকল জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে সেগুলো মানুষের জন্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে ভয়াবহ দুর্নীতি চলছে, সেই দুর্নীতি যারা করছে তাদের চিহ্নিত করার জন্য কমিশন গঠন করা হবে এবং বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। আমরা একমত হয়েছি জাতীয় দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সঙ্গে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করবো।
জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, আমরা যে দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলো জনগণের দাবি। এই দাবিগুলোর বিষয়ে আমরা বিএনপির সাথে ঐক্যমত পোষণ করেছি। আগামীতে বিএনপির সাথে সকলকে সাথে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচিতে জাতীয় দল অংশগ্রহণ করবে। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকবো।

ইসলামিক পার্টির মহাসচিব এড. আবুল কাশেম বলেন, এই সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, সেটা প্রমাণিত। এজন্য জনগণ অধির আকাক্সক্ষা নিয়ে অপেক্ষা করছে সরকারের কাছ থেকে মুক্তি পেতে। বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করবে আমরা সর্বশক্তি নিয়ে সাথে থাকবো।

সংলাপে বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এহসানুল হুদা’র নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন- মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুল আহাদ, সারোয়ার আলম, লুৎফুল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাসুদ চৌধুরী, সাইফুল আলম রুমেল, শহীদ আলী, প্রচার সম্পাদক বেলায়েত হোসেন শামীম, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আতিকুর রহমান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।

ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাসেমের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি এজাজ হোসেন, সহ-সভাপতি সিদ্দিক আহমেদ নোমান, অতিরিক্ত মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুর রহমান, ছাত্র শক্তির সভাপতি আদেল উদ্দিন মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সুজন মাহমুদ, সদস্য সাইফুর রহমান।



 

Show all comments
  • মো মামুনুর রশীদ ২০ অক্টোবর, ২০২২, ২:৩০ এএম says : 0
    আরও ৩দিন পরে সমাবেশ করতে হবে তা হলে সরকারই ৫দিন হরতাল করুক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ