পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতি ও লুটপাট করে দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কেন বারবার দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন? সমস্যাটা তো আমরাও বুঝতে পারছি না। কারণ, উনারা কিছুদিন আগেও দাবি করেছেন যে তাঁরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছেন। আজকে কী এমন ঘটল যে তাঁরা এখন ভয় পাচ্ছেন, একটা খাদ্যসংকট দেখা দেবে?
গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে সংলাপ শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এত বেশি দুর্নীতি সবখানে, প্রতিটি খাতে, প্রতিটি ক্ষেত্রে, তাদের এখন এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সবখানে এত বেশি দুঃশাসন হয়েছে, মিস রুল হয়েছে যে নাথিং ইজ আন্ডার দেয়ার কন্ট্রোল। যে কারণে বিদ্যুতের সমস্যাটা তৈরি হয়েছে। তারা এখন বিদ্যুৎ দিতে পারছে না।
এ প্রসঙ্গে বিপুল অর্থ ব্যয়ে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ক্রয় এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিবের জন্য বাড়ি তৈরির বিষয় উল্লেখ করেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৮ হাজার কোটি টাকায় ইভিএম কিনতে যাচ্ছে একটা জালিয়াতির ভোট করার জন্য। অন্যদিকে, ৪৩ কোটি টাকা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদের সচিব ও মুখ্য সচিবের জন্য বাড়ি তৈরি করা হবে। আপনি কি আশা করেন, এটা অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা। এ রকম প্রতিটি ক্ষেত্রে, একটা-দুইটা নয়, আজকে প্রতিটি খাতে এ রকম দুর্নীতি হচ্ছে। সে জন্যই আজকে তারা এ অবস্থায় উপনীত হয়েছে।
কয়েকটি সমাবেশ করলেই সরকার পড়ে যাবে, এমনটি যাঁরা ভাবেন, তাঁরা বোকার স্বর্গে বাস করছেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব এটাকে সরকারির দলের ‘আতঙ্ক’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের পর ময়মনসিংহে জনতা ঢলের মতো নেমেছে। ময়মনসিংহে কারফিউয়ের মতো অবস্থার সৃষ্টি করেছে। নজরুল ইসলাম খান যে হোটেলে ছিলেন, সেখানে তারা গুলিবর্ষণ করেছে, ককটেল নিক্ষেপ করেছে। তারপরও তারা কোনো বাধার সৃষ্টি করতে পারেনি।
সমাবেশের পরদিন বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, উল্টো দেখেন, পুলিশকে ব্যবহার করে তারা ৪০০ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এভাবে দমন করে, গুলি করে, হত্যা করে, গুম করে কোনো দিনই ক্ষমতায় থাকা যাবে না, যতই তারা চেষ্টা করুক।
যুগপৎ আন্দোলনে একমত জমিয়ত ও এনডিপি: এর আগে গতকাল বেলা ১১টায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও দুপুর ১২টায় এনডিপির নেতাদের সঙ্গে গুলশানের কার্যালয়ে পৃথক সংলাপ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান।
সংলাপের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আলোচনার মাধ্যমে কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছি, এ সরকারের পতনে লক্ষ্যে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দেশের সব বিরোধী দলের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করব। এনডিপির সভাপতি কে এম আবু তাহেরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল, অন্যদিকে মাওলানা মনসুরুল হাসানের নেতৃত্বে জমিয়তে উলামায়ের ইসলামের নেতৃত্বে ১০ জন নেতা সংলাপে অংশ নেন।
পরে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান বলেন, আমরা বিএনপির সঙ্গে ঐকমত্য হয়েছি, বর্তমানে যে অবৈধ ও অনির্বাচিত সরকার, এ সরকারের পদত্যাগের জন্য, নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এনডিপির সভাপতি কে এম আবু তাহের বলেন, এই যে ভোটচোর সরকার, তারা যেভাবে ১৪টি বছর দুঃশাসন চালিয়ে, ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে প্রতিটি পরিবারকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে, এই হিংসাত্মক রাজনীতি থেকে আমাদের ফেরত আসতে হবে। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব।
ভোলায় পুলিশের গুলিতে নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা: এদিকে গতকাল বিকেলে ভোলায় পুলিশের গুলিতে নিহত জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিমের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে বিএনপি। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ইন্টারনেটে যুক্ত থাকা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপস্থিতিতে এই সহযোগিতা প্রদান করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী অনির্বাচিত সরকারের হাতে নিহত আব্দুর রহিম ও নুরে আলমের রক্ত কখনো আমরা বৃথা যেতে দেবো না। আমরা প্রতিশ্রুতি দিতে চাই যে, বিএনপি সবসময় এই শহীদ পরিবারের পাশে থাকবে। আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব সবসময় তাদের খোঁজ-খবর রাখছেন। নুরে আলম ও আব্দুর রহিমের পরিবারকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলীয় ফান্ড থেকে আর্থিক অনুদানের চেক দেয়া হয়। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী হাবিবুর রহমান ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাইফুল আলম কদর এই দুই পরিবারের জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তারেক রহমানও বক্তব্য রাখেন।
দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, বিএনপির জেলা সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর, নিহত আব্দুর রহিমের স্ত্রী খাদিজা বেগম এবং নুরে আলমের স্ত্রী ইফফাত জাহান বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল আউয়াল মিন্টু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, হাফিজ ইব্রাহিম, বিলকিস জাহান শিরিন, শরিফুল আলম, হায়দার আলী লেলিন, ছাত্র দলের রওনুকুল ইসলাম শ্রাবণ, জেলা বিএনপির হারুন অর রশীদ, আসিফ আলতাফ প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।