Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুই জনের জন্য ইভিএম, ভোটার ৮১, দায়িত্বে ৮৩ জন

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০৭ পিএম

ভোটের শুরুতেই হাজির হন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান ও ইউনিয়ন মেম্বার মো. জুয়েল। তবে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে এসে তাদের আঙুলের ছাপ মিলছিল না বলে ভোট দিতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত খবরটি পৌঁছানো হয় নির্বাচন কমিশনে।

নিয়ম অনুসারে শতকরা এক হিসেবে একজন ভোটারকে শনাক্ত করে ভোট দেওয়াতে পারবেন প্রিসাইডিং অফিসার।

বাকি একজনের কী করবেন? এ অবস্থায় কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন ইভিএম মেশিন এনে ওই দুজনের ভোট নেওয়া হয়। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার। বিভিন্ন কার্যক্রম শেষে নির্ধারিত সময় পার হওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ভোট নেওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।

ভোটার ৮১ জন, দায়িত্বে ছিলেন ৮৩ জন। এমন ঘটনা আখাউড়ায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ছয়জন অস্ত্রধারী পুলিশ, ১৭ জন আনসার, সাতজনের একটি মোবাইল টিম, আট সদস্য বিশিষ্ট একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স, থানার ওসির নেতৃত্বে আট সদস্য বিশিষ্ট একটি স্ট্যান্ডবাই টিম এখানে কাজ করে। ছুটে আসে পাঁচ সদস্যের র‌্যাবের টিম। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ছিলেন একজন প্রিসাইডিং অফিসার, দুজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, চারজন পোলিং অফিসার ও প্রার্থীদের ২২ জন পোলিং এজেন্ট।

সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটারেদের এমন ‘মর্যাদা’ দিয়ে ‘মর্যাদার ভোট’ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়া নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলার নয় উপজেলাতেই সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ব্যাপক নিরাপত্তা লক্ষ্য করা যায়। সরেজমিনে ঘুরে ও তথ্য নিয়ে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কথা হলে চেয়ারম্যান, মেম্বার প্রার্থীসহ ভোটারদের মাঝে ভোট নিয়ে স্বস্তির কথা শোনা যায়।

সকাল সাড়ে ৯টা। উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকটি আটকানো। পরিচয় নিশ্চিত করে পকেট গেট দিয়ে ঢুকছেন ভোটাররা। একজন ‘প্রভাবশালী’ জনপ্রতিনিধি কেন্দ্রের ভোট কক্ষের সামনে বেশি সময় দাঁড়ালে এ নিয়ে আপত্তি উঠতেই ওনাকে সরে যেতে বলা হয়। ভোটকক্ষে দুজনের বেশি সাংবাদিক প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

৯টায় শুরু হয়ে বেলা ১২টা ২৫ মিনিটেই ৮১ ভোটের মধ্যে ৮০ ভোট পড়ে সেখানকার কেন্দ্রে। উপজেলা মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুব আলম চৌধুরী দীপক অসুস্থ থাকায় তিনি আসবেন না জেনেও নির্ধারিত সময় ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়। ২টা বাজার দুই মিনিট আগে প্রিসাইডিং অফিসার জুয়েল মজুমদার বাইরে এসে কোনো ভোটার থাকলে ভোট দেওয়ার জন্য আসতে আহ্বান জানান।

এদিকে, জেলার নবীনগর উপজেলায় বেলা পৌনে ২টার দিকে বেশ কয়েকজন ভোটার নিয়ে লাইনে দাঁড়ান পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস। নিয়ম অনুসারে ভোটার লাইনে থাকলে সময় পার হলেও ভোট নিতে হবে- এমন নিময় থাকায় সেটি মেনে বেলা পৌনে ৩টা পর্যন্ত ভোট নেওয়া হয়।

কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় কথা হলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুল আলম ভোটগ্রহণের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। একই কথা বলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার।

নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম এবং পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বিভিন্ন উপজেলার ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসময় তারা কমিশনের সব ধরনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান। সুষ্ঠু, সুন্দর ভোট হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার আনারস প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন পেয়েছেন ৮২২ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি শফিকুল আলম মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫৫৩ ভোট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ