Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্মৃতিসৌধে বিজয়ের আড্ডা

| প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মুন্নী আক্তার : ১৯৭১ সালে ভয়াবহ এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের সোনার বাংলাদেশ। ৩০ লাখ বীর শহীদ আর হাজারো মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়েছে এই বিজয়। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস।
জাতি হিসেবে আমরা বাঙালিরা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ। আর সেই আবেগটা যদি হয় দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় নিয়ে তাহলে সেটা কোন পর্যায়ে পৌঁছায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
বছর ঘুরে আবার এলো বিজয়ের মাস। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। আর এ বিজয়ের মাসে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিজয় দিবসের আবেশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আড্ডায় এখন আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজয়ের মাস। ক্লাস ও পরীক্ষার ফাঁকে ক্যাম্পাস চত্বর কিংবা ক্যান্টিন আড্ডায় বারবার উঠে আসছে মুক্তিযুদ্ধ, বিজয় দিবসের ইতিহাস, পটভূমি এবং আমাদের বিজয় অর্জন।
এমনই আড্ডা চলছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। মুক্তিযুদ্ধে নিহত মহান বীর শহীদের স্মৃতিতে নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ গণ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পাশেই অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া এই তরুণরা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি কিন্তু তাদের রক্তে রয়েছে অকৃত্রিম দেশপ্রেম আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এই শিক্ষার্থীরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে শপথ নিয়েই তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করেছে আর বিজয়ের মাসে তাই তাদের আড্ডাটা চলছে জাতীয় স্মৃতিসৌধে।
তাদের একেকজনের ভাষায় বিজয় দিবসের আবেগ এক এক রকম। সিহাবের ভাষায়, ‘বিজয় মানে নিরাপদে ঘর থেকে বের হয়ে আবার নিরাপদে ফিরে আসা।’ আবার ইমরান হাসান জনির ভাষায়, ‘বিজয় মানে যাদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে এ স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তাদের কথা চিন্তা করে সেই আলোকে জীবন পরিচালনা করা, দেশের জন্য কাজ করা।’
আর নিশুর ভাষায়, বিজয় দিবস মানে একটা চেতনা যা লালন করে প্রতিটি বাঙালি তাদের অন্তরে।’
মহান জাতীয় স্মৃতিসৌধের মুক্ত মঞ্চে বসে কথা হচ্ছিল সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে, এদের সঙ্গে আরও যোগ দিলেন সামিয়া ইসলাম উপমা, এস এম আহমেদ মনির, সুরাইয়া পারভীন ইতি, মিষ্টি রহমান, শাহীনুর আলম এবং মুন্নী আক্তার। মিষ্টির কথায়, ‘বিজয় দিবস মানে পতাকা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি আর মুক্ত পাখির মতো ডানা মেলে নীল আকাশে ছুটে চলা।’ কথায় কথায় এভাবেই জমে উঠে তাদের আড্ডা।
আড্ডা চলতে চলতে সময় বয়ে যায়, প্রসঙ্গক্রমে কথা হয় বিজয়ের ৪৫ বছরে আমাদের প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তি নিয়ে। শাহীনুরের মতে, ‘প্রাপ্তির চেয়ে প্রাপ্তির পাল্লাই বেশি ভারী। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের এ অল্প কয়েকদিনে আমাদের অর্জন অনেক বেশি। আমরা ধীরে ধীরে বিশ্বের মানচিত্রে নিজেদের গৌরবান্বিত একটি জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি নানাভাবে।’
কিন্তু মনির আর সামিয়া ইসলাম উপমা তর্ক জুড়ে দেন মুন্নীর সঙ্গে। মনির বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতাকে চেয়েছি কিন্তু পেয়েছি কি-না তাই নিয়ে আজও আমাদের মনে সংশয়। নিজের ভেতরে প্রশ্ন জাগে, কেননা আজও আমরা নিজের মতো করে আমাদের মাতৃভূমিকে পাইনি। শুধু মাতৃভাষায় কথা বলতে পারাটা কখনই স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ না।’ এর সঙ্গে উপমা যোগ করেন, ‘চলমান সহিংসতা, হত্যা আর অপরাধের কথাও। তবে যে যাই বলুক না কেন সবার প্রত্যাশার জায়গা একটাই। একটি সোনার বাংলাদেশ।’
ছবি : সাহাদাত রাফি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ