Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নাইটগার্ড থেকে মাদক সম্রাট : পতেঙ্গায় এক লাখ ইয়াবাসহ গ্রেফতার ৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

পতেঙ্গা সৈকতে আট বছর ধরে নৈশ প্রহরীর কাজ করেন আব্দুল মালেক (৫২)। বাড়ি আনোয়ারার গহিরায়। সৈকতে প্রহরীর কাজ করতে গিয়ে হয়ে উঠেন ইয়াবা সম্রাট। গড়ে তোলেন এক মাদক সিন্ডিকেট। তাতে তার প্রতিবন্ধী ছেলেকেও রাখা হয়। এই সিন্ডিকেটের হাত ধরেই সরাসরি মিয়ানমার থেকে আসে ইয়াবার বড় বড় চালান। একটি স্পিড বোট ও একটি লাইফ বোটসহ এক লাখ ইয়াবার বড় চালান উদ্ধারের পর তার সম্পর্কে এমন চাঞ্চল্যকর তথা পায় এলিট বাহিনী র‌্যাব।

এ সময় আব্দুল মালেক সিন্ডিকেটের আরো চার সদস্যকে পাকড়াও করা হয়। মিয়ানমার হয়ে টেকনাফ থেকে সরাসরি স্পিড বোট যোগে ইয়াবার চালান আসার খবরে শনিবার রাতে পতেঙ্গা সংলগ্ন গভীর সাগরে এ অভিযান চালায় র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের একটি বিশেষ টিম। গ্রেফতার তার অপর চার সহযোগী হলেন- পতেঙ্গা থানার মো. ছালেহ আহম্মদের ছেলে মো. নিজাম উদ্দিন (৩০), আনোয়ারা থানার গহিরার আব্দুল মালেকের ছেলে মো. হাসান মিয়া (২১), পতেঙ্গা বিমানবন্দর এলাকার মৃত ওবায়দুল হকের ছেলে মো. ওমর ফারুক (৪০), আনোয়ারা গহিরার মো. নুর নবীর ছেলে মো. ইমরান হোসেন (২০)।
র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বলেন, আমাদের কাছে খবর আসে কিছু মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে স্পিড বোটযোগে সাগরপথে পতেঙ্গা সৈকতের দিকে আসছে। চালানটির কিছু অংশ সৈকতের কিছুটা দূরে একটি লাইফ বোটে দেওয়া হবে। এরপর স্পিড বোট ও লাইফ বোটটি পতেঙ্গা সৈকতের মেইন পয়েন্ট ঘাট হয়ে অন্যত্র যাবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সৈকতের মেইন পয়েন্ট ঘাট থেকে একটি লাইফ বোট ও একটি স্পিড বোট পালানোর সময় পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরে এসব বোট থেকে এক লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার ইয়াবার আনুমানিক মূল্য তিন কোটি টাকা।
গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, এদের মধ্যে আব্দুল মালেক পতেঙ্গা সৈকতে নাইটগার্ডের কাজ করছেন। তিনি নাইটগার্ডের আড়ালে গড়ে তুলেছেন ইয়াবা সাম্রাজ্য। তার সঙ্কেত পেলেই পতেঙ্গায় লোড-আনলোড হয় ইয়াবার চালান। মালেক দীর্ঘদিন ধরে মাদকের কাজের সঙ্গে জড়িত। তার ইশারায় স্পিড বোট ইয়াবা নিয়ে সৈকতে আসে। পরে ইয়াবাগুলো তিনি বিক্রি করেন। আর নিজাম উদ্দিন মূলত স্পিড বোটের চালক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই পেশায় থাকার পর সম্প্রতি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। তবে ছুটির দিনে অবৈধ মাদক পাচারে ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করেন।
এছাড়া হাসান মিয়া বেশিরভাগ সময় টেকনাফে থাকেন। ইয়াবার চালান আনার জন্য টেকনাফ থেকে তিনি সবকিছু গুছিয়ে দেন। জন্মগতভাবে তার এক পা পঙ্গু। প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে কেউ সন্দেহ করে না। গ্রেফতার মো. ইমরান হোসেন চার বছর ধরে স্পিড বোটের চালকের সহকারী হিসেবে চাকরি করেন। মাঝে মাঝে মাদকের চালান আনার কাজে সহযোগিতা করে সে। মো. ওমর ফারুক ওরফে প্যাকেজ ফারুক স্পিড বোটের মালিক। তার অনেকগুলো বোট থাকলেও নির্দিষ্ট একটি বোট শুধুমাত্র মাদক চোরাচালানের কাজে ব্যবহার করেন। এভাবেই তারা পরস্পরের যোগসাজশে ইয়াবার বড় চালান টেকনাফ থেকে সাগরপথে মহেশখালী-কুতুবদিয়া হয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে নিয়ে আসেন।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ