Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মায় রাতের আঁধারে ইলিশ শিকার

দৌলতপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য

মাহফুজুল আলম, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে চলছে রাতের আধারে ইলিশ শিকার। চলতি ৭-২৮ অক্টোবব প্রজনন মৌসুম হওয়ায় পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরা, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় বন্ধ থাকার কথা থাকলেও পদ্মা নদীতে কোন ধরনের বাধা বিপত্তি ছাড়াই দেদারছে চলছে ইলিশ শিকার। ফলে দৌলতপুরের আনাচে কানাচে হাত বাড়ালেই মিলছে মা ইলিশসহ বিভিন্ন আকারের ছোট বড় ইলিশ মাছ। ইলিশ মাছ ধরা বন্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তেমন কোন তৎপরতা না থাকার কারণে দেদারসে চলছে মা ইলিশসহ ইলিশ নিধন। এমন কথা জানিয়েছেন নদীপাড়ের লোকজন।
স্থানীয়দের তথ্য মতে, পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছ শিকার বন্ধে প্রতি বছর যে ধরনের কার্যক্রম চালানো হয় এ বছর তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। নদীতে অভিযানের পরিবর্তে নামমাত্র সভা-সেমিনার করেই দায়িত্ব শেষ করেছেন দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য দপ্তরসহ সংশ্লিষ্টরা। ফলে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের উদ্দেশ্য ও নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন হতে দেখা যাচ্ছে না। তবে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেছেন পদ্মা নদীতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে।
পদ্মায় মাছ শিকারী একাধিক জেলে ও মাছ বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞার শুরুতে দু’একদিন পদ্মা নদীতে মাছ শিকার বন্ধ থাকলেও এখন স্বাভাবিক ভাবেই মাছ ধরা হচ্ছে। রাতে নদী থেকে ইলিশ মাছ ধরে দিনে তা বিক্রয় করা হয়। ইলিশ মাছ শিকারী জেলে বা বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করে যে কোন আকারের ইলিশ কিনছেন ক্রেতারা। প্রতিদিন মন মন ইলিশ মাছ পদ্মা নদী থেকে ধরা হচ্ছে বলে তারা জানান। হাটবাজারে এসব ইলিশ বিক্রয় না হলেও নির্ধারিত জায়গায় প্রতিদিন মাছ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। দাম একটু বেশি দিলে ক্রেতার বাড়িতেও ইলিশ মাছ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে এমন তথ্যও তারা দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলেরা জানান, এবার পদ্মা নদীতে প্রশাসনের তেমন কার্যক্রম না থাকায় অনায়াসেই ইলিশ শিকার করা যাচ্ছে। জাটকা থেকে শুরু করে দেড় কেজি পর্যন্ত ওজনের ইলিশ পদ্মায় ধরা পড়ছে। বন্ধের সময় হওয়ায় নদী ও এর আশপাশে সোর্স রাখা হয়। নদীতে প্রশাসনের অভিযানের খবর পেলেই ওইসব সোর্সরা নদীতে মাছ শিকারী জেলেদের দ্রুত খবর পৌঁছে দেয়। ফলে মাছ শিকার করে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারেন জেলেরা।
জিয়া নামে স্থানীয় এক মাছ বিক্রেতা জানান, ভোরে নদীর পাড়ে গিয়ে সরাসরি মাছ ক্রয় করতে পারছেন। এছাড়াও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও মাছ বিক্রয় করা হচ্ছে। মাছের সাইজ অনুযায়ী দাম হাকা হয়। দাম একটু বেশি হলেও নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ক্রয়-বিক্রয় করতে পারায় খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে।
নিষিদ্ধ মৌসুমে পদ্মায় মাছ শিকারের বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ স্বপন বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় নদীপাড়ের জেলেদের নিয়ে সচেতনতা সভা করা হয়েছে। পদ্মা নদীতে অভিযানও চালানো হচ্ছে। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে মাছ শিকারী জেলেদের অর্থদন্ডও করা হয়েছে। তবে জনবল কম থাকার পরও ইলিশ শিকার বন্ধে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ