Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সিংড়ায় মা খুনের ২০বছর পর ছেলে খুন॥ ১৮বছরে ১১খুন!

সিংড়া,(নাটোর) থেকে প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২২, ৪:২৬ পিএম | আপডেট : ৪:৪২ পিএম, ১৫ অক্টোবর, ২০২২

মা চম্পা বেগম খুনের প্রায় ২০বছর ছেলে আফতাব খন্দকার নিহত হয়েছেন। সেই সাথে নিহত হয়েছেন প্রতিপক্ষ রুহুল আমিন। সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিত চলনবিল অঞ্চলের বামিহাল গ্রামে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নতুন করে দুইজন নিহত হওয়ার ঘটনায় আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে নাটোরের সিংড়া। গত ১৮বছরে সন্ত্রাসী হামলায় ৩আমর্ড পুলিশ সহ ১১জন নিহত এবং ৪জনের পা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। রাষ্ট্র ক্ষমতার পট পরিবর্তনের সাথে সাথে এদের রাজনৈতিক পরিচয়ও পরিবর্তন হয়।

স্থানীয়রা জানান,২০০৫সালে বামিহাল পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ফাঁড়িলুট সহ ৩আমর্ড পুলিশকে হত্যা করে সর্বহারা সদস্যরা। এরপর থেকে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটতে থাকে। প্রতিপক্ষদের হামলায় ইতিপূর্বে শাজাহান, আনসার আলী,সোহান,আইয়্যুব আলীসহ অনেকেই খুন হয়েছেন। রাষ্ট্র ক্ষমতার পট পরিবর্তনের সাথে সাথে এদের রাজনৈতিক পরিচয়ও পরিবর্তন হয়। গত ১৮বছরে দুই পক্ষের বিরোধের জেরে ১১জন নিহত এবং ৪জনের পা বিচ্ছিন্ন সহ অনেকেই আহত হয়েছে।

২০০৮সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর আফজাল বাহিনী দল পাল্টে আওয়ামীলীগ যোগ দেন। অপরদিকে বিএনপি নেতা কুদ্দুস বাহিনীর অনুসারিরা ও তার ভাই ফরিদ উদ্দিন আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে বনে যায়। ২০১৩সালে ফরিদ ও কুদ্দুস বাহিনীর অনুসারিরা মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিলকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ২০১৪ সালে ফরিদকে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। ২০১৯সালে আফজাল বাহিনীর প্রধান আফজাল ও তার ভাই আনসার বন্দুক যুদ্ধে নিহত হওয়ার পর আফতাব খন্দকার এই গ্রুপের নেতৃত্বে আসে। সন্ত্রাসী হামলার শিকার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল সাংবাদিকদের বলেন,বামিহাল গ্রামের নেতৃত্বদানকারীরা সুযোগ সন্ধানীরা যে দল যখন ক্ষমতায় আসে তখনই এরা ভোল পাল্টে সেই দলেই ভিড়ে যায়। সম্প্রতি ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দিনের অনুসারি দুলাল আকন্দের বাড়ি থেকে পুলিশ চোরাই বৈদ্যুতিক মোটর উদ্ধার করে। আর এঘটনায় অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়। জামিনে বেড়িয়ে এসে ৯অক্টোবর রাত ৮টার দিকে আফতাবের কয়েকজন অনুসারী ইউপি সদস্য ফরিদ উদ্দিনের অনুসারী আবু মুসাও রুহুল আমিনের দশোপাড়া গ্রামের বাড়িতে হামলা করে। এঘটনার জেরে বামিহাল বাজারে আফতাব ও তার সমর্থকদের ওপর পাল্টা হামলা করে রহুল আমিন ও মুসার লোকজন। দুই পক্ষের এই সংঘর্ষে আফতাব ও রুহুল আমিন নিহত হয়। হামলা-মামলার ভয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই।

এরআগে ২০০৩সালে আফতাব খন্দকারের মা চাম্পা বেগম সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন। সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান,৯অক্টোবর খুনের ঘটনায় উভয় পক্ষের দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় ৬২জনকে আসামী করেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত, পুলিশী অভিযানে ইতোমধ্যে উভয়পক্ষের ৫জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ