বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মো: মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে : আদমদীঘি ও সান্তাহার ক্রীড়া সংস্থার রশি টানাটানিতে সাপ-বেঁজি-শিয়ালসহ নানা ধরনের জন্তুর বাসায় পরিণত হওয়া সান্তাহার স্টেডিয়ামটি অবশেষে বগুড়া জেলা প্রসাশকের নির্দেশে দীর্ঘ ৮ বছর পর এর সংস্কার কাজ শুরু করেছে সান্তাহার পৌরসভা। সেই সাথে উজ্জীবিত হয়েছে সান্তাহার পৌর ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম। দীর্ঘ পাঁচ বছর এ সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর গত ২৬ নভেম্বর সান্তাহার পৌরসভার সভাকক্ষে এই সংস্থার কার্যনির্বাহী কমিটির এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি পৌর মেয়র আলহাজ তোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সীদ্ধান্ত হয় ,আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বগুড়ার সান্তাহার আধুনিক স্টেডিয়ামকে খেলাধুলার উপযোগী করে এলাকার যুব সমাজকে খেলাধুলার মধ্যে ফিরিয়ে এনে সান্তাহার স্টেডিয়ামটিকে ধ্বংসের দারপ্রান্ত থেকে রক্ষা করা হবে।
১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর তৎকালীন বিএনপি সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে তিন একর জমির উপর এই আধুনিক মানের স্টেডিয়মের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৯৭ সালের ১৮ আগস্ট তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই স্টেডিয়ামের শুভ উদ্বোধন করেন। এরপর আদমদীঘি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থাকে দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়া হয়। সান্তাহার শহর থেকে আদমদীঘি উপজেলা সদরের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। ফলে উপজেলা পরিষদ বা উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা এ পর্যন্ত কোনো খেলাধুলা এমনকি কোনো জাতীয় প্রোগ্রামও করেনি। ১৯৯৮ সালে সান্তাহার পৌর ক্রীড়া সংস্থা গঠন হওয়া পর থেকে ওই স্টেডিয়ামে খুলনা, যশোহর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, নাটোর, রাজশাহী নওগাঁ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, নীলফামারী, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা দল নিয়ে জিয়া স্মৃতি, বঙ্গবন্ধু পৌর গোল্ডকাপসহ বড় বড় টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। ওই টুর্নামেন্টে সাব্বির, আলফাজ, মুন্না, জয়, নকিব, কায়সার হামিদ, মুনসহ বহু দেশসেরা খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেন। এরপর স্টেডয়িামের তত্ত¡াবধান নিয়ে সান্তাহার ক্রীড়া সংস্থা ও আদমদীঘি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার মধ্যে শুরু হয় রশি টানাটানি। যেহেতু সান্তাহার শহর থেকে আদমদীঘি উপজেলা সদররে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। ফলে বন্ধ হয়ে যায় সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহর পৌরসভা এবং আশপাশ এলাকার খেলাধুলা। একপর্যায়ে এলাকার খেলাধুলার স্বার্থে সান্তাহার পৌরসভা গত ২০০০ সালের ৪ এপ্রিল স্টেডিয়ামটি দেখাশোনার দায়িত্ব চেয়ে বগুড়া জেলা প্রসাশক ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে একটি আবেদন করে। উল্লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং জেলা প্রশাসক, বগুড়া স্মারক নং-জে প্র-বগুড়া-৩৫-২০০১-২৯, তারিখ ২৮-০১-২০০১ ইং এর পত্রের প্রেক্ষিতে সান্তাহার স্টেডিয়ামটিকে সান্তাহার পৌরসভা বরাবরে ন্যস্ত করা হলো বলে উল্লেখ করে তৎকালীন জাতীয় ক্রীড়া পরষিদের পরিচালক মো: হাবিবুর রহমানের স্বাক্ষরকৃত অনুমোদনের অনুলিপি বগুড়া জেলা প্রশাসক ও আদমদীঘি উপজেলা পরিষদকে দেয়া হয়। এরপরও স্টেডিয়ামটি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে থাকায় খেলাধুলার মাঠ অভাবে বন্ধ হয়ে যায় সান্তাহার পৌর ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম। এর ফলে একদিকে এলাকায় খেলাধুলার স্থবিরতা সৃষ্টি হয়, অন্য দিকে সাপ-বেঁজি-শিয়ালসহ নানা ধরনের জন্তুর বাসা ও গোচারণ ভ‚মি পরিণত ধ্বংস কোটি কোটি টাকায় নির্মিত এই স্টেডিয়াম। এক পর্যায়ে সান্তাহারে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বগুড়া জেলা প্রসাশক মো: আশরাফ উদ্দীন সান্তাহার স্টেডিয়াম পরির্দশনে এসে স্টেডিয়ামটির দুরবস্থা দেখে অসন্তুষ প্রকাশ করেন এবং সান্তাহার পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে স্টেডিয়ামের ঝোপ জঙ্গল পরষ্কিার করার নির্দেশ দেন। অবশেষে দীর্ঘ দিন পর শুরু হয় এই অবহেলিত স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ।
এতে খেলাধুলার উদ্দ্যম সৃষ্টি হয় এলাকার শিশু-কিশোর, যুবকসহ সর্বশ্রেণির খেলোয়াড়দের মাঝে। এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রেজাউল করিমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এর পর আর এই স্টেডিয়ামের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে না, এখন থেকে এর উন্নয়ন করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।