Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

লোহাগাড়ায় মাদকের রমরমা বাণিজ্য

‘এসব রোধ করতে পুলিশের পাশাপাশি আসক্তদের অভিভাবক, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’

তাজ উদ্দীন, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ক্রসফায়ার বন্ধ হলেও বন্ধ হয়নি মাদকের উপদ্রপ, বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে বিভিন্ন মাদকের অবৈধ বাণিজ্য। ফেনসিডিল, বাংলামদ ও ইয়াবাসহ হরেক রকম মাদক বিভিন্ন গ্রাম কিংবা পাড়া মহল্লায় অবাধে সেবন ও বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন মাদকের মধ্যে এখন ইয়াবার ছড়াছড়ি বেশি, এই ইয়াবা প্রতিবেশি দেশ মায়ানমার থেকে উখিয়া ও টেকনাফ হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে। যা সড়ক ও নৌপথে মাদক বিক্রেতারা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দিচ্ছে। এসব মরণ নেশায় বুঝে না বুজে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর-যুবকরা। প্রায় প্রতিদিন চুনতি জাঙ্গালিয়া নামক স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ প্রশাসন তাদের সাধ্য মতো হাজার হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করার পরেও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে ইয়াবা কারবারিরা। এ মাদক তথা ইয়াবা সেবনে নৈতিক চরিত্র হারিয়ে সমাজে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে উঠতি বয়সীরা।
ওষুধ কোম্পানির চাকরিজীবী মো. শাহজানের কাছে ইয়াবা ও মাদকসেবীর বিরুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোম্পানির কাজে সপ্তাহে তিন চারদিন এই চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়ত করি এবং দাড়িয়ে থেকে দেখেছি পুলিশের তৎপরতা অনেক এবং ইয়াবা উদ্ধার করে ইয়াবা বিক্রেতা ও জড়িতদের ধরতে দেখেছি। প্রশাসন যথেষ্ট চেষ্টা করে যাচ্ছে। এসব রোধ করতে পুলিশের পাশাপাশি আসক্তদের অভিভাবক, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং যার যার ধর্মীয় অনুশাসন রীতিনীতি মেনে চললে অনেকটা কমে যাবে বলে আমি মনে করি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চুনতির এক কৃষক মাদকের ছড়াছড়ির বিষয়ে তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, এই ইয়াবা ও মাদক খোরদের জন্য আমরা গরু লালন-পালন করতে পারছি না, রাত জেগে পাহারা দিতে হয়, অনেক সময় বাধা দিতে গেলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। বিভিন্ন বাড়ির গেট ভেঙে দামি মোটরসাইকেলও নিয়ে যায়। মাদক আসক্তদের দ্বারা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই অনেক বেড়ে গেছে।
উত্তর আমিরাবাদ ৫নং ওয়ার্ডের এক সওদাগর নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাদকের ছড়াছড়ির প্রসঙ্গে বলেন, আমি এক সময় নেশা খোর, মাদক আসক্তদের ধরে ধরে পিটাইছি, তখন কমে গিয়েছিল, ইদানিং আবার দেখা যাচ্ছে। জলদাশপাড়ায় বাংলা মদ বেচাকেনার ব্যাপারে তিনি বলেন, দৈনিক ৩০-৪০ লিটার হবে। এরা দিনদুপুরে বেচাকেনা ও পান করে।
এ প্রসঙ্গে ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি অনেকবার পুলিশ দিয়ে তাড়া করেছি, কিন্তুু যতক্ষণ তাড়াই ততক্ষণ। এছাড়াও গত ৯ অক্টোবর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহাজাহান কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে চরম্বা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড় জমাদারপাড়া এলাকায় মাস্টারহাট নামক স্থানে স্বীপন কান্তি দাশ (২৪), ধোপিপাড়ার বাসিন্দা মাদক পরিবহনের অপরাধ উদ্ঘাঠিত হওয়ায় তাকে ভ্রাম্যমান আদালত ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
এসব ব্যাপারে লোহাগাড়া থানার ওসি আতিকুর রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা এসব নিষ্ঠার সাথে ও গুরুত্ব সহকারে মনিটরিং করছি, মাদকসেবী ও ইয়াবা বিক্রেতাদের ধরছি ও মামলা দিচ্ছি এবং কখনো এসব অপরাধীকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। এবং মাদক সেবনকারী ও মাদক বিক্রেতার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যহত থাকবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ