পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : রাশিয়া ও তালিবানের মধ্যকার সম্পর্ক আফগান ও আমেরিকান কর্মকর্তাদের কপাল ভাঁজ ফেলেছে। তারা বলছেন, তাদের মধ্যে সম্পর্ক আরো গভীর হয়ে উঠলে তা আফগানিস্তানের ইতোমধ্যে অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটাবে। আফগানিস্তানে মার্কিন কমান্ডার রাশিয়ার বিরুদ্ধে তালিবানকে বৈধতা প্রদানের অভিযোগ করেছেন।
তালিবান কর্মকর্তারা বলেন, কমপক্ষে ২০০৭ সাল থেকে রাশিয়ার সাথে তালিবানের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ রয়েছে। তবে তা তালিবানের সাথে রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা নৈতিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের বেশী নয়। একজন তালিবান কর্মকর্তা বলেন, আমাদের শত্রু অভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানে তার মিত্রদের হাত থেকে আমরা মুক্তি পেতে চাই। আর রাশিয়া চায় যত দ্রুত সম্ভব সকল বিদেশী সৈন্য আফগানিস্তান ত্যাগ করুক।
যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো যেভাবে আফগান পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে, মস্কো তার সমালোচনা করে। তবে প্রথমদিকে মস্কো আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনীকে হেলিকপ্টার দিয়ে সাহায্য করেছিল এবং রাশিয়ার মধ্য দিয়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সরঞ্জামের সরবরাহ পথের ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল।
এদিকে রুশ কর্মকর্তারা তালিবানদের কোনো সাহায্য প্রদানের কথা অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, তালিবানদের সাথে তাদের সীমিত যোগাযোগের উদ্দেশ্য তাদেরকে আলোচনার টেবিলে আনা।
কাবুলের নেতারা বলছেন, তালিবানদের প্রতি রাশিয়ার সমর্থন এ পর্যন্ত অধিকাংশই রাজনৈতিক বলে মনে হচ্ছে। তবে তারা বলছেন, সাম্প্রতিক কালে মস্কো ও তাজিকিস্তানে তাদের মধ্যে উপর্যুপরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে যা আফগান গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা তালিবানকে অস্ত্র ও অর্থায়নসহ মস্কোর আরো সরাসরি সমর্থনের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
আফগানিস্তানের একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা তালিবানের প্রতি রুশ সমর্থনকে এক মারাত্মক প্রবণতা বলে আখ্যায়িত করেন। আফগানিস্তানে শীর্ষ মার্কিন কমান্ডার জেনারেল জন নিকলসন তারই প্রতিধ্বনি করেছেন। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আফগানিস্তানে যাদের অশুভ প্রভাব রয়েছে সেই ইরান ও পাকিস্তানের সাথে রাশিয়া যোগ দিয়েছে। তিনি বলেন, মস্কো তালিবানকে বৈধতা প্রদান করছে।
কাবুলে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ম্যান্টিটস্কি বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, তালিবানদের সাথে তার সরকারের যোগাযোগের উদ্দেশ্য হচ্ছে রুশ নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধান ও শান্তি আলোচনাকে উৎসাহিত করা। তিনি বলেন, তালিবানের সাথে আমাদের ব্যাপক যোগাযোগ নেই। রাশিয়া আফগানিস্তানে একটি শান্তি আলোচনার পক্ষপাতী যা শুধু তালিবানসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমেই হতে পারে।
ম্যান্টিটস্কি তালিবানের সাথে রাশিয়ার সহযোগিতার বর্তমান অভিযোগ সম্পর্কে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, আমেরিকান ও আফগান কর্মকর্তাদের বক্তব্য হচ্ছে অবনতিশীল যুদ্ধ পরিস্থিতি থেকে মনোযোগ সরানোর চেষ্টা। তিনি বলেন, তারা তাদের ব্যর্থতার দায় আমাদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে।
তালিবান ও আফগান সরকারী সূত্রে বলা হয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তালিবান প্রতিনিধিরা রুশ কর্মকর্তাদের সাথে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছেন। কুন্দুজ প্রদেশের পুলিশ প্রধান কাসিম জাঙ্গালবাগ বলেন, এ সব বৈঠকের মধ্যে রয়েছে কুন্দুজের তালিবান ছায়া গভর্নর মোল্লা আবদুস সালামের তাজিকিস্তানে গিয়ে বৈঠক।
কাবুলে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের একজন কর্মকর্তা জানান, আরেকটি সাম্প্রতিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় খোদ মস্কোতে।
এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে আফগান আইন প্রণেতারা বলেন, তারা তালিবানকে রুশ সাহায্য প্রদানের খবর তদন্ত করে দেখার পরিকল্পনা করেছেন। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে তারা মস্কোর কাছে চিঠি লিখেছেন।
আফগান কর্মকর্তারা তালিবানকে রাশিয়ার সরাসরি সাহায্য প্রদানের সাক্ষ্যপ্রমাণ দেননি। কিন্তু জাঙ্গালবাগ বলেন, সাম্প্রতিককালে অজ্ঞাতপরিচয় হেলিকপ্টারের সীমান্ত অতিক্রম ও নতুন রুশ অস্ত্র আটক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে যে, আঞ্চলিক শক্তিরা সম্ভবত বৃহত্তর ভূমিকা পালন করছে।
আরেকজন ঊর্ধ্বতন আফগান কর্মকর্তা বলেন, তালিবানরা যদি কোনোভাবে বিমান বিধ্বংসী কামান পায়, উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে রাশিয়া যদি তাদের তা দেয় তাহলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে এবং শান্তির কথা ভুলে যেতে হবে।
আফগান ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, রুশ প্রতিনিধিরা বলছেন যে, মার্কিন বিশেষ বাহিনী ও বিমান সমর্থনপুষ্ট সরকারী সৈন্যরা আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শক্তিবৃদ্ধি রোধে যথেষ্ট করতে পারেনি। আইএস অনুগত জঙ্গিরা পাকিস্তান সীমান্তে কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তারা শুধু আফগান ও বিদেশী সৈন্যদের বিরুদ্ধেই লড়াই করছে না, তালিবানের সাথেও লড়াই করছে।
তালিবান রাশিয়ার সাথে তাদের সম্পর্ককে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেছে। একজন ঊর্ধ্বতন তালিবান কর্মকর্তা বলেন, ২০০৮ সাল থেকে রাশিয়া আমাদের সমর্থন করতে শুরু করে। তখন আইএসের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে আমাদের শক্তিশালী করাই রাশিয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য।
তালিবান মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মাসউদও এ কথা সমর্থন করেন।
তবে জেনারেল নিকলসন বলেন, রুশ নীতির যৌক্তিকতা প্রতিপন্ন করার জন্যই তারা আইএসের কথা বলছে। তাদের কথায় মনে হয় যেন একা তালিবানই আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, আফগান সরকার নয়। তাই তালিবানকে রাশিয়া যে সমর্থন করছে তার বাস্তব ভিত্তি নেই। এর উদ্দেশ্য আফগান সরকার ও ন্যাটোর প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করা ও তালিবানকে শক্তিশালী করা।
সূত্র ঃ রয়টার্স
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।