Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাইরাসজনিত রোগে এক গ্রামেই আক্রান্ত ৬০

গুরুদাসপুর (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

নাটোরের গুরুদাসপুরে ভাইরাস জনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন একই মহল্লার প্রায় ৬০ জন। দেড় বছর যাবৎ বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে গিয়েও রোগের কোন প্রতিকার না পেয়ে হতাশা গ্রস্থ্য হয়ে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। বুধবার সকালে উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পাবনা পাড়া মহল্লায় গিয়ে দেখাযায় ওই চিত্র। চিকিৎসকরা বলছেন ভাইরাস জনিত রোগ। চর্ম রোগের লক্ষণ।
জানা যায়, গত প্রায় দেড় বছর আগে পাবনা পাড়া মহল্লার সুলতানের স্ত্রী লিমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘামাচির মত বের হয়। পরে ব্যপক চুলকানোর কারণে লাল হয়ে যায়। তার তিন দিন পরে তার মেয়ের শরীরেও ওই লক্ষণ দেখা দেয়। প্রথমে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা সেবা নেয়। কিন্তু চুলকানি আরো বেশি হতে থাকে। এক পর্যায় নাটোর শহরের একটি বেসরকারী ক্লিনিকে চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ একজন চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ সেবন করেন। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। লিমার পরে তার মেয়ে তার পরে প্রতিবেশীদের শরীরেও দেখা দেয় ওই রোগের লক্ষণ। ধীরে ধীরে ভাইরাস জনিত এই রোগটি ছড়িয়ে পরে মহল্লা ব্যাপী। বর্তমানে ওই মহল্লায় নারী-পুরুষ শিশুসহ প্রায় ৬০ জন আক্রান্ত। আক্রান্ত রোগীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘামাচির মত লাল ও গুটি গুটি হয়ে পরেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রত্যেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষুধ সেবন করেছেন কিন্তু কেউ প্রতিকার পায়নি। এমনকি রোগের সঠিক নির্ণয়ও করতে সক্ষম হয়নি কেউ।
লিমা জানান, দেড় বছর আগে হঠাৎ করেই আমার শরীরে ঘামাচির মত বের হয়ে চুলাকানো শুরু করে। ব্যপক যন্ত্রনায় না থাকতে পেরে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্মে ঔষধ সেবন করি। কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি। এছাড়াও যখন শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানি বেশি হতে লাগলো তখন নাটোর শহরের একজন চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ সেবন করি। তিনিও বলেছেন এটি চর্ম রোগ। ঔষধ সেবনের পরেও কোন কাজ হয়না। পরবর্তীতে চর্ম ও মেডিসিন রোগ বিশেষজ্ঞ প্রায় ৭ জন ডাক্তার দেখিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাইনি। এমনিক এই রোগের নাম কি তাও কেউ সঠিক ভাবে বলতে পারেনি।
আক্রান্ত হাজেরা, রিমা, সুলতান,মেহেদীসহ প্রায় ১৫ জন জানান, দিন রাত ২৪ ঘন্টা শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকায়। এমনকি অনেক সময় আক্রান্ত স্থানে চুলকানোর কারণে রক্ত বের হয়। ফুলে লাল হয়ে যায়। অনেক ঔষধ খেয়েছি কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। সরকারী ভাবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখলে মনে হয় ভাল হতে পারে বলেও জানান তারা।
আক্রান্ত শিশু সুয়াইবার মা জানান, আমার ছোট্ট শিশু চুলকাতে না পেরে চিৎকার করে। শিশু বিশেষজ্ঞ, চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। এখনও রোগ থেকে মুক্তি পাইনি। শিশু সন্তান নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প.প কর্মকর্তা ডা.মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম মুঠোফনে বলেন, আক্রান্ত রোগীরা কখনও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেনি। তাদেরকে হাসপাতালে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত রোগী ও আক্রান্তের স্থান পরীক্ষা নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ