রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ভোলার চরফ্যাশনের উপকুলীয় এলাকায় জনপ্রিয় হচ্ছে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ। পরিবেশবান্ধব এ পদ্ধতি ব্যবহার করে বিভিন্ন রঙের তরমুজ চাষ করে সফল চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা গ্রামের কৃষক ‘মানিক পাটোয়ারি ও আমিনাবাদ গ্রামের আক্তার মহাজন’। এ পদ্ধতিতে বছরের যেকোনও সময় একাধিকবার তরমুজ উৎপাদন করা সম্ভব।
পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর যৌথ উদ্যোগে তাদের কৃষি ইউনিটের মাধ্যমে প্রথম এই পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারেন চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা গ্রামের কৃষক মানিক পাটোয়ারি। পরে তিনি পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) কৃষি ইউনিটে যোগাযোগ করে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ উৎপাদনে উৎসাহিত হয়। মালচিং পদ্ধতি অনুযায়ী, মালচিং পেপারে মুড়িয়ে অঙ্কুরিত বীজ জমিতে রোপণ করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রথমে মালচিং পলিথিন দিয়ে একটি বীজতলা নির্মাণ করা হয়। এরপর তরমুজের বীজ সেখানে স্থাপন করা হয়। এবার মালচিং পেপার ছিদ্র করে বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার পর মাচা করে লতা জুলানো হয়। বীজগুলো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো থাকে, তাই কোনো কীটপতঙ্গ আক্রমণ করতে পারে না। ফলে কীটনাশক ব্যবহারেরও প্রয়োজন হয় না। একই কারণে ক্ষতিকর সূর্যালোকও এর ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। সাধারণ পদ্ধতিতে অনেক সময় বৃষ্টি হলে বীজতলা বা ক্ষেত থেকে সার ধুয়ে যায়। মালচিং পেপার দিয়ে মোড়ানো থাকায় এখানে সেই আশঙ্কাও নেই। সাধারণ পদ্ধতির চেয়ে নতুন এ পদ্ধতিতে গাছগুলো দেড়গুণ তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে।
তার মতো আগ্রহী হয়ে আমিনাবাদ ইউনিয়ন হালিমাবাদ গ্রামের একজন আর্দশ কৃষক আকতার হোসেন মহাজন শুরু করেন মালচিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন রঙের তরমুজ চাষে। প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন জাতের সবজি ও ফলমূল চাষাবাদে এসেছে তার সফলতা। তবে দেশের অন্যান্য জায়গার মতো এখানেও নতুন জাতের তরমুজের চাহিদা থাকায় প্রথমবারের মতো তার খামারে মালচিং পদ্ধতিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ শুরু করেছে। সবুজ, কালো ও হলুদ রঙের এই তিন জাতের তরমুজগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও সুস্বাদু।
আকতার হোসেন মহাজন বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ইউনাইটেড নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ ফলন শীল বারোমাসি তরমুজের বীজ সংগ্রহ করেন। এরপর প্রাথমিকভাবে এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় হাইব্রিড জাতের এই তরমুজের চাষ শুরু করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে মালচিং পদ্ধতিতে জৈষ্ঠ্যে মাসের মাঝামাঝি ৮ শতক জমিতে ১শ ২০ টি ট্রেতে ৩শ ৫০ টি তরমুজের চারা রোপণ করেন। রোপণের ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যেই গাছের তরমুজ বিক্রয়ের উপযোগী হয়। প্রতিটি তরমুজের ওজন হয়েছে ২ থেকে ৩ কেজি। প্রাথমিক সাফল্যের পর বেশি আকারে এই জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষাবাদ করবেন বলে জানান কৃষক আকতার হোসেন।
চরফ্যাশন কোষ্ট ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় রেডিও মেঘনার ষ্টেশন ম্যানেজার মৌসুমী মালচিং পদ্ধতির এই তরমুজ চাষ দেখে মুগ্ধ। তার মতে অসময়ে এ ধরনের তরমুজ চাষ করে কৃষক আক্তার মহাজন ও মানিক পাটোয়ারী এই সাফল্য কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সংযোজন হয়েছে। কৃষকের ক্ষেতে এ প্রদর্শনী দেখতে তার মতো বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক জনতা এসে ভীড় করছে।
চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘মালচিং মেথড’ ভারত ও ইসরাইলে খুবই জনপ্রিয় একটি চাষ পদ্ধতি। প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে কমপক্ষে ৫০ ভাগ সার ও কিটনাশকের ব্যবহার কম লাগে, এই পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ পরিবেশবান্ধব। প্রচলিত পদ্ধতিতে জমিতে ৫/৬ বার সেচ দিতে হয়, সেখানে এ পদ্ধতিতে মাত্র দুবার সেচ দেওয়াই যথেষ্ট। বাংলাদেশের অনেক জায়গায় মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ আবাদ হলেও ভোলার উপকূলীয় চরফ্যাশন উপজেলায় এই প্রথমবারের মতো বিভিন্ন রঙের তরমুজ চাষ শুর হয়। এ পদ্ধতিতে চাষবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হবে। আগ্রহী চাষীদেরকে কৃষি অফিস থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।