Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঝিনাইদহে ১১ মাসে ৫৩ খুন

| প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহ জেলায় ১১ মাসে সামাজিক বিরোধ, বিএসএফের গুলি ও কথিত বন্দুকযুদ্ধসহ বিভিন্নভাবে ৫৩ জন খুন হয়েছেন। বিভিন্ন থানায় প্রায় ১৪ জন নিহত হয়েছে কথিত বন্দুকযুদ্ধে। এর মধ্যে পুলিশ শিশু ও মহিলার ৬টি লাশ উদ্ধার করেছে। পুলিশের তথ্যমতে কিছু লাশ উদ্ধারের পর আত্মহত্যার আলামত মিলেছে। অন্যদিকে ঝিনাইদহের ৭ ব্যক্তির লাশ মিলেছে অন্য জেলায়। পুলিশ পরিচয়ে এদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে তাদের পরিবারের অভিযোগ। কোটচাঁদপুর উপজেলায় ১১ মাসে কোনো হত্যাকা-ের তথ্য না থাকলেও গত ৪ এপ্রিল মাসে সোলাইমান নামে এক পুলিশ কনস্টেবল থানায় ডিউটি করা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তার মৃত্যুটি আজো রহস্যজনক রয়ে গেছে। পুলিশ সুপারের অফিস ও বিভিন্ন সূত্রে এসব খুনের তথ্য মিলেছে। প্রদত্ত তথ্য মোতাবেক ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার মধ্যে ঝিনাইদহ সদরে ১১ মাসে ১৯ জন খুন হয়েছে। এছাড়া শৈলকুপায় ১২ জন, মহেশপুরে ৮ জন, কালীগঞ্জে ৬ জন ও হরিণাকু-ু উপজেলায় ৮ জন নিহত হয়েছেন। শৈলকুপার কবিরপুর গ্রামে একসাথে তিন শিশু সাফিন, আমিন ও মাহিনকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যা করে তার চাচা। বছর শুরুর প্রথমে জেলায় এটি একটি আলোচিত হত্যাকা-। এরপর দেশ বিদেশে আলোচিত হয় সদর উপজেলার কালুহাটী গ্রামের বেলেখালে খৃস্টান হোমিও চিকিৎসক সমির খাজা, কালীগঞ্জে শিয়া মতবাদের হোমিও চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক, সদর উপজেলার করোতিপাড়া গ্রামে মন্দিরের পুরোহিত আনন্দ গোপাল ও উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামে সেবায়েত শ্যামানন্দ দাসকে হত্যার ঘটনা। এসব হত্যার দায় স্বীকার করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন কথিত আইএস বিবৃতি দেয়। পুলিশ আইএস-এর দায় শুরু থেকেই প্রত্যাখ্যান করে আসে। দেশ-বিদেশে আলোচিত এসব হত্যাকা- পুলিশ প্রশাসনকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। ঝিনাইদহ পুলিশ, র‌্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এসব হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করতে সমর্থ হয়। গ্রেফতার হয় আসামিরা। অনেক আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। সেবায়েত ও পুরোহিত হত্যার রহস্য উদ্ধারে ঝিনাইদহ পুলিশ অভিযান শুরু করে সফলতা অর্জন করে। এদিকে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাসহ রাজনৈতিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মন্দিরের পুরোহিত ও সেবায়েত হত্যার নিন্দা জানিয়ে ঝিনাইদহ সফর করেন। সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ঝিনাইদহে জঙ্গিবিরোধী সমাবেশ করেন। অল্পদিনের মধ্যে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মনিরুজ্জামান ও সাবেক পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন এসব আলোচিত হত্যার সাথে জামায়াত শিবিরের সদস্যদের সম্পৃক্ততার কথা জানান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজহার আলী শেখ সে সময় সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আলোচিত সব হত্যার ক্লু উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ দ্রুত সময়ে ঘাতকদের মোটিভ জানতে পারে। তিনি জানান, জেলা এখন শান্ত। সামাজিক বিরোধের জের ধরে ২/১টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলায় শান্তিশৃঙ্খলা পরিবেশ বিরাজ করছে। সার্বিক পরিস্থিতিও ভালো। পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। এতে দাগি আসামি ছাড়াও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিরা গ্রেফতার হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ