মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় আমন ধানে দেখা দিয়েছে মাজরা পোকা। পোকার আক্রমণে ধান গাছের আগা (মাইন) পঁচে লাল হয়ে যাচ্ছে। ফলে ধানের ফলন নিয়ে শঙ্কার পাশাপাশি পোকার আক্রমণ থেকে ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে উপজেলায় ১৭ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। আগাম ধানের খেতে মাজরা পোকার আক্রমণের খবর পাওয়ার পর কৃষি অফিস থেকে এসব এলাকার কৃষকদেরকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। কীটনাশক ছিটানোর মাধ্যমে মাজরা পোকা চলে যাবে বলে জানা যায়। পোকায় যেসব ধানের মাইন কেটেছে এসব ধানের মাইন আবার গজাবে।
কৃষকরা জানান, তীব্র গরম ও অনাবৃষ্টি অপেক্ষা করে আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। ধানের রঙ কালচে হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের পোকায় আক্রমণ করে ধানের মাইন কেটে দিচ্ছে। ফসল রক্ষার জন্য কৃষকেরা এখন কীটনাশক ছিটাচ্ছেন। আমন ধানের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন উপজেলার কৃষকেরা। তাদের আশঙ্কা, সময় মতো পোকা দমন করতে না পারলে আমন উৎপাদন ব্যাহত হবে।
সরেজমিনে উপজেলার, আলীনগর, সদর ইউনিয়ন, শমশেরনগর ও পতনঊষার ইউনিয়নে ঘুরে দেখা যায়, আমন ধানের গাছে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। পোকা ধানের মাইন কেটে দিচ্ছে ও পাতা শুকিয়ে বাদামি রং ধারণ করছে। পোকা থেকে ধান রক্ষার জন্য কৃষকেরা বাজার থেকে সিতারা নামক কীটনাশকসহ বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ছিটাচ্ছেন।
পতনঊষার ইউনিয়নের কৃষক মুক্তার মিয়া বলেন, আমি প্রায় ২ একর জমিতে এবার আমন ধান চাষ করেছি। আমার সব জমিতে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। কৃষি দোকান থেকে সিতারা নামক কীটনাশক স্প্রে করেও পোকা দমন করা যাচ্ছে না।
তার মতো উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের কৃষক আলাল মিয়া বলেন, ৩ একর আমন ধানে পোকায় ধরেছে। হঠাৎ করে পোকায় আক্রমণ করে ফসল নষ্ট করে ফেলছে। এখন কীটনাশক স্প্রে করেছি পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান বলেন, আমন ধানে কিছু এলাকায় পোকার আক্রমণের কথা শুনেছি। পোকার আক্রমণ থেকে ধানগাছ রক্ষায় কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া মাজরা পোকা এখন আর ক্ষতিকর পোকা নয়। যেসব এলাকায় পোকা ধানের মাইন কেটেছে এগুলো কিছু দিনের মধ্যে আবার গজাবে। কীটনাশক ছিটালে পোকা দমন হবে বলে তিনি জানান।