পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৬৪ জেলায় দুদকের অফিস নির্মাণের উদ্যোগ
অটোমেশন ও প্রযুক্তিনির্ভর অনুসন্ধান চালু
মালেক মল্লিক : দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৬-২০২১ সালের পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনা, দুর্নীতি প্রতিরোধে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন, অটোমেশন পদ্ধতি চালু, প্রযুক্তিনির্ভর অনুসন্ধান। এছাড়াও পর্যাপ্ত অবকাঠামো নির্মাণসহ সকল জেলার দুদকের অফিস স্থাপন, জনসংযোগ উন্নয়ন, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ। আগামী ১৫ ডিসেম্বর দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ পরিকল্পনাটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া যায়। দুদক কমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ বলেন, আমরা দুর্নীতি দমনেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলপত্র অনুসারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানেরই দায়িত্ব। জনগণের নিকট আমাদের সবার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে। গতকাল শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এদিকে দুদকের এসব কর্মপরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দুর্নীতি প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করেন এমন সব ব্যক্তিবর্গ। তাদের মতে, পরিকল্পনাগুলো নিলেও হবে না এর বাস্তবায়ন।
দুদকের সূত্রে জান যায়, গত ২৪ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট বরাবর বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করেন দুর্নীতি দমন কমিশন। এতে ২০১৫ সালের নানা দিক তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, দুদকের মামলায় ৬৮ শতাংশ আসামি খালাস পেয়েছেন। সাজা হয়েছে ৩২ শতাংশের। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করলেও গত বছর সফলতা কমও ছিল। এরপর আগামী বছরগুলোতে দুদকের অপরিসীম সম্ভাবনার ভিত্তি হিসেবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন কমিশন। বিশেষ করে দুর্নীতি প্রতিরোধে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এ নীতিমালার আলোকে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে। দুর্নীতি কমাতে এ নাীতিমালা ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারবে বলে আশা করা যায়। সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সামর্থ্য, দক্ষতা ও নৈপুণ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। এজন্য দুর্নীতি শনাক্তকরণ, অনুসন্ধান ও প্রতিরোধ কমিশনের কর্মকর্তাদের দক্ষ ও নিপুণ করে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেয় কমিশন। এজন্য দেশের বাইরেও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও অটোমেশন করা হবে। যাতে করে কমিশনের কর্মপদ্ধতিতে দাপ্তরিক কার্যাবলি সহজতর করার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটা হলে যে কেউ নিজের পরিচয় গোপন রেখে দুদকে অভিযোগ দিতে পারবে। একই সঙ্গে দুদকের অন্যান্য বিষয়ে প্রযুক্তিনির্ভর করা হবে। যাতে করে অভিযুক্ত অপরাধীদের অবস্থান ও কার্যকলাপ চিহ্নিত করা যায়। এজন্য আগামীতে দুদক আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর নিজস্ব ট্র্যাকিং ইক্যুইপমেন্ট ইউনিট স্থাপন করবে। এসব অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার আদলে হবে। অটোমেশন শুধুমাত্র ভোটারের রয়েছে। জনসংযোগ উন্নয়নে সাধারণ মানুষের কাছে যাবে কমিশন। বিশেষ করে সুশীল সমাজ ও দেশের গণমাধ্যমকে তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করবে। সংস্থাটির পর্যাপ্ত অবকাঠামো নিশ্চিতকরণসহ সকল জেলার দুদকের অফিস স্থাপন করার পরিকল্পনা।
জানা যায়, দেশের এক-তৃতীয়াংশ জেলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সরাসরি কার্যক্রম আছে। বাকি দুই-তৃতীয়াংশ জেলায় দূর থেকে দুদকের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে মাত্র ২২ জেলায় দুদকের কার্যালয় আছে। আর ৪২ জেলায় দুদকের কোনো কার্যালয় নেই। শুধু তাই নয়, ওইসব জেলা কার্যালয়ের অধিকাংশই ভাড়া বাড়ি। জেলা অফিসগুলোতেও রয়েছে নানা সমস্যা। এসব কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মারাত্মক আবাসন সমস্যায় রয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে সংকীর্ণ পরিসরে কাজ করছেন। ফলে তাদের অনেকেই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে থাকেন। এসব বিষয় বিবেচনা করে সংস্থাটি সকল জেলায় দুদকের নিজস্ব অফিস ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। যা বিবেচনাধীন রয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্নীতি দমনে ৫৪ জেলার দুদক অফিস থাকা উচিত। যাতে করে দ্রুত সময়ে অপরাধীকে শনাক্ত করা যায়। আশা করছি সরকার বিষয়টি দ্রুত সমাধান দিবেন। বার্ষিক প্রতিবেদনে এই বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে দেখেছেন বর্তমান কমিশন। প্রতিবেদনের বিষয়ে দুদকের সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, দুদকের কর্মকর্তাদের অধিকতর দক্ষতা বাড়াতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বেশকিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য ইনকিলাবকে বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে কতগুলো পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৬-২০২১ সালের পঞ্চবার্ষিক মহাপরিকল্পনাও রয়েছে। বর্তমানে চেযারম্যান স্যার দেশের বাইরে রয়েছেন, তিনি আসলে আগামী বৃহস্পতিবার পরিকল্পনাগুলোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন এক অনুষ্ঠানে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন অনেক ভালো কাজ করছে। তবে আমার মনে হয়, তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে দুর্নীতিবিরোধী গণসচেতনতা সৃষ্টি করা। তিনি বলেন, কমিশন গার্লস গাইড, বয়েজ স্কাউটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে যেভাবে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত করছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।