Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্গাপূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনে কক্সবাজার সৈকতে লাখো মানুষের ঢল

প্রধান অতিথি শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী

কক্সবাজার ব্যুরো ও উখিয়া সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২২, ১১:০১ পিএম

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন, সাপ্তাহিক ছুটি ও ঈদে মিলাদুন্নবী (স:) এর ছুটিসহ টানা ছুটি উপলক্ষে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। বুধবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শেষ হয়। শেষদিনে সবচেয়ে বড় আয়োজন ছিল সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান। এতে ভক্ত ও পূজারীরা প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন।

তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি দ এ বিসর্জন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ নানা ধর্ম, বর্ণ, পেশাজীবী ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে। বুধবার (৫ অক্টোবর) শারদীয় দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমীতে সৈকতের লাবণি পয়েন্টে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। অতীতের মতো এবারও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন উদযাপন করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানকে ঘিরে কক্সবাজার সৈকতের লাবণি পয়েন্টে বুধবার দুপুর ২টার পর থেকে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে যথা: কক্সবাজার সদর, উখিয়া, টেকনাফ, সদর, ঈদগাহ, চৌফলদন্ডী ছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে শোভাযাত্রা সহকারে পুজারিরা আসতে শুরু করে। লাবণি পয়েন্টে বিকাল ৩টা থেকে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। বিকাল প্রায় ৫টা পর্যন্ত সৈকতের বালুচরে রাখা দুর্গা প্রতিমা ঘিরে চলে ভক্তদের শেষ আরাধনা। শুধু তাই নয়, নাচে-গানে এক অন্যরকম আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকতে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে সমাগম ঘটে পর্যটকসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মানুষের।

আয়োজকরা জানান, শুধু সৈকতের লাবণি পয়েন্টে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা শতাধিক প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। একই সময়ে কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদী, চকরিয়ার মাতামুহুরী, টেকনাফের সাগর ও নাফনদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত এবং রেজুনদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে বলে জানা পূজা কমিটি। রামু ও চকরিয়ায় পৃথক প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সৈকতের লাবণি পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে শুরু হয় বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা। কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জল করের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী আলহাজ্ব মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন-কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম ও র‌্যাব ১৫ এর অধিনায়ক খায়রুল ইসলাম সরকার। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মো: মুজিবুর রহমান।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ জানান, এ বছর জেলায় ৩০৫টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে কক্সবাজার সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জল কর জানান, দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান হচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছরও এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে। গত বছর করোনা মহামারির কারণে এই উৎসবটি ব্যাপকভাবে পালন করা সম্ভব হয়নি।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, তিন স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসোব অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। শুধু সৈকত এলাকায় প্রায় কয়েকশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়। যানজট নিরসনে সৈকতের কলাতলী থেকে আশপাশের সড়কগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়।

এদিকে সাপ্তাহিক ও পূজার ছুটি এবার একই দিনে পড়েছে। তাই কেউ পূজা উপলক্ষে, কেউ সপ্তাহ শেষে অবসর কাটাতে জড়ো হয়েছেন সৈকতে। বুধবার সকাল থেকে পর্যটকের ঢল নামে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে। কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্টে হাজার হাজার পর্যটক দেখা গেছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায়ও ভিড় রয়েছে। রীতিমতো দেখা দিয়েছে যানবাহন সংকট। গণপরিবহণগুলো পর্যটকদের রিজার্ভ ভাড়া ধরতে গিয়ে স্থানীয়দের এড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে প্রতিনিয়ত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ