Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বৃদ্ধ ও শিশুদের মাঝে দেখা দিয়েছে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব

পঞ্চগড়ে দিনে গরম রাতে শীত

| প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা : হিমালয় পাদদেশে অবস্থিত উত্তরের সীমান্তে জেলা পঞ্চগড়ে শীত শুরু হয়েছে। দিনে গরমের তীব্রতা কমতে না কমতেই রাত গড়াতে বাড়ে শীতের তীব্রতা। রাত গভীরের সঙ্গে সঙ্গে গোটা এলাকা কুয়াশায় ঢেকে যায়। রাতভর বৃষ্টির মতো শিশির ঝরতে থাকে। ভোরে ধানক্ষেত, গাছের পাতা ও ঘাসের উপর শিশিরফোটা চিকচিক করে। শীতে মধ্যবিত্ত আর নি¤œ মধ্যবিত্তদের কাঁথা-কম্বল আর শীতে কাপড় দিয়ে চলে শীত নিবারণ। এদিকে শীতের উপকরণের জোগান দিতে স্থানীয় লেপ-তোষক দোকানে কারিগরদের ব্যস্ততা বাড়ছে চোখে পড়ার মতো। স্থানীয় বাজারগুলোতে শীতকালীন বিভিন্ন সবজির সমারোহ জানিয়ে দিচ্ছে শীতের গভীরতা। এছাড়া জেলার হতদরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে শীত নিয়ে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। তীব্র শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে তাদের কোন প্রস্তুতি দেখা যায়নি। অন্যদিকে দিনে গরম আর রাতে শীত। এমন বৈরী আবহাওয়ায় বৃদ্ধ ও শিশুদের মধ্যে দেখা দিয়েছে শীতজনিত নানা রোগ। পঞ্চগড়ে সাধারণত নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি এবং ডিসেম্বরের শুরুর দিকে শীতের তীব্রতা অনুভূত হয়। কিন্তু চলতি শীত মৌসুমে নভেম্বরের শুরু থেকে শীত শুরু হয়েছে। এতে জেলার অনেক স্থানে ঠা-াজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। শীত থেকে বাঁচতে রাতে মোটরসাইকেল চালকরা বিকেল থেকে গরম কাপড় পরছেন। কুয়াশার কারণে সকাল পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। সকাল ১১টা নাগাদ জেলায় ঘন কুয়াশা দেখা যায়। দিনে গরম আর রাতে ঠা-া আবহাওয়ার কারণে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত নানা রোগে। শিশুদের জন্য বাড়তি সতর্কতা নিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। সর্দিকাশি লেগেই থাকছে। গত এক সপ্তাহে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শতাধিক শিশু শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা এবার শীতের তীব্রতা অন্য মৌসুমের তুলনায় বেশি হতে পারে। পঞ্চগড় শহরের জুদান স্টোরের মালিক ও পৌরসভা এলাকার রাজনগর মহল্লার আব্দুল ওয়াদুদ বাবু বলেন, গতকাল বুধবার তার পাঁচ বছর বয়সের ছেলে সিনানের আকস্মিক সর্দিকাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। শহরের তুলার ডাংগা মহলার ভ্যানচালক আব্দুর রউফ বলেন, শীত এলে আমাদের আয় রোজগার কমে যায়। দুই বেলা খাবারের টাকা আয় করা যায় না। শীতের কারণে মানুষজন রিকশায় উঠতে চায় না। বর্তমানে আগের তুলনায় কম আয় হচ্ছে বলেও জানান তিনি। শহরের রামের ডাংগা এলাকার রিকশাচালক মো. রফিজল বলেন, আগে দিনে দুই থেকে আড়াইশ টাকা আয় হতো। এখন শীতের কারণে কেউ রিকশায় উঠতে চায় না। আয় কমে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছি। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মনোয়ার হোসেন বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় বিশেষ করে শিশুদের নানান সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমানে দিনে গরম এবং রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে। এ জন্য শিশুরা সর্দিকাশি এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের ঠা-া থেকে দূরে রাখাসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও সরকারিভাবে যেসব শীত বস্ত্র দেওয়া হয় তা ততোটা মানসম্মত নয়। ফলে এক বছর যেতে না যেতেই এসব শীত বস্ত্র নষ্ট হয়ে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ