Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিয়ম মানছে না অর্ধশত ইটভাটা, নীরব প্রশাসন

| প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এসএম হুমায়ুন কবীর, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) থেকে : ত্রিশালে কৃষি জমিতে ও আবাসিক এলাকায় সরকারের কোন প্রকার নিয়মনীতি না মেনেই গড়ে উঠেছে অর্ধ শত ইটভাটা। পরিবেশকে বিপন্ন করে ও কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই এসকল ইটভাটা পরিচালিত হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে ইটভাটা মালিকরা বলছেন, আমরা সমিতির মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করার জন্য ২৫ হাজার করে টাকা জমা দিয়েছি। জানা গেছে, ত্রিশাল উপজেলায় ১২টি ইউনিয়নে প্রায় ৫০টির মত ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে অধিকাংশ ইটভাটাগুলো সরকারের কোন অনুমোদন না নিয়েই প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের অনুমোদিত যে কটি ইটভাটা রয়েছে সেগুলোতেও মানা হচ্ছে না কোন নিময়নীতি। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ ইটভাটাগুলি কৃষি জমি ও আবাসিক এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলে ইটভাটা এলাকার পার্শ্ববর্তী বাড়িঘর ও পরিবেশের চরম সংকটাপন্ন দেখা দিয়েছে । অপরদিকে কৃষি জমি দখল করে ইটভাটা নির্মাণ করায় কৃষি ক্ষেত্রেও ব্যাপক ক্ষতি স্বাধন হচ্ছে। প্রায় প্রত্যেকটি ইটভাটাতেই শিশুশ্রমেরও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি ইটভাটা আবাসিক এলাকার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিস-আদালত সংলগ্ন  গড়ে উঠলেও কোন প্রকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের নামাবরগাঁও গ্রামের মেসার্স এস এ ব্রিক্সটি আবাসিক এলাকা ও কৃষি জমিতে স্থাপন করা হয়েছে। এর আশপাশে অসংখ্য বসতভিটা রয়েছে। এস এ ব্রিক্স এর প্রোপাইটর মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি সরকারের কাগজপত্র ঠিক রেখেই ইটভাটা চালাচ্ছি। বালিপাড়ার ছোটপোল এলাকার মেসার্স ভাই ভাই ব্রিক্স এর প্রোপাইটর আহম্মদ আলী (ভুলু) জানান, আমাদের সকল কাগজপত্র ঠিক রয়েছে তার পরেও বিভিন্ন ঝামেলা এড়াতে ত্রিশাল ইটভাটা সমিতির মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে হয়েছে। চকরামপুর বাহাদুরপুর এলাকার এবিসি ব্রিক্স ও তার পার্শ্ববর্তী একই এলাকায় টিবিসি ব্রিক্স কৃষি জমি ভাড়া নিয়ে ইটভাটা স্থাপন করেছেন। অভিযোগ উঠেছে এ দুটি ব্রিক্সই ঘনবসতি ও আবাসিক এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে টিবিসি ব্রিক্স এর প্রোপাইটর খোকন মিয়া জানান, আমরা প্রত্যেকে ইটভাটার মালিকরা প্রশাসনের বিভিন্ন মুখ বন্ধ করার জন্য ইটভাটা মালিক সমিতির মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা করে জমা দিয়েছি। কানিহারি ইউনিয়নের মান্দাটিয়া এলাকায় বিশাল এলাকায় কৃষি জমির উপর স্থাপন করা হয়েছে মদিনা ব্রিক্স। এই ব্রিক্সটির চারপাশেই রয়েছে ঘনবসতি পুন্ন বাড়িঘর। এছাড়াও এই ব্রিক্সটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ৮/৯ বছরের শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এ সকল বিষয়ে মদিনা ব্রিক্স এর প্রোপাইটর  অবসর প্রাপ্ত লেঃ কর্নেল আব্দুর রউফ বলেন, আমার ইটভাটায় যা অনিয়ম আছে তা লিখে সরকারকে জানিয়ে দিন এটার সরকার ব্যবস্থা নেবে। এদিকে ত্রিশাল উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ আব্দুল মতিন সরকারের সাথে মোবাইলে ইটভাটা মালিকদের কাছ থেকে প্রশাসনকে ম্যানেজ করার জন্য ২৫ হাজার টাকা করে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়টি অস্বীকার করেন। এছাড়াও ত্রিশালে সরকার অনুমোদনবিহীন ছাড়া যেসকল ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে সে ব্যাপারে সমিতির পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি জানান এটা প্রশাসন দেখবে। ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু জাফর রিপনের কাছে লাইসেন্সবিহীন ও সরকারের নীতিমালা না মেনে ইটভাটা স্থাপনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে দ্রুত সময়ের ভিতরে তদন্তপূর্বক  আইনগত ব্যবস্থা নিব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ