Inqilab Logo

রোববার ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাসিকের ১১ নং ওয়ার্ডে ময়লা ফেলে পরিবেশের বারোটা, ছড়াচ্ছে নানা প্রকারের রোগ

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০২২, ৪:৩৭ পিএম | আপডেট : ৪:৩৭ পিএম, ২ অক্টোবর, ২০২২


সড়কের পাশের ডোবায় ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। নিস্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় পানি বেড়ে উঠছে বাড়িতে, সেখান থেকে দুর্গন্ধ আর মশা মাছি ছড়াচ্ছে। ছড়াচ্ছে নানা প্রকারের রোগ।
স্থানীয়রা টিকতে না পেরে কেউ বাড়ি ছেড়েছেন, কেউ আবার লড়াই করছেন টিকে থাকার।নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ডের হাজিগঞ্জ এলাকায় প্রতিদিনের চিত্র এটি। এলাকার প্রায় ১৫টি বাড়ির ১৫০ পরিবারের সদস্যরা চরম কষ্টে জীবন যাপন করছে।এলাকাবাসীরা
আক্ষেপ করে বলেন, টিভিতে দেখি রোহিঙ্গারা এতো ভালো ভাবে থাকছে। অথচ, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনকে বছরে বছরে ট্যাক্স দিয়ে কি কারণে এমন পরিবেশে থাকবো?
গত ১৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ডের হাজিগঞ্জে শোক দিবস উৎযাপন করতে যান মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। স্থানীয় বাসিন্দা নূর হোসেন জানান, ‘মেয়রের কাছে দাবি করা হয়েছিলো রেলওয়ের মালিকানাধীন জমিতে একটি ঈদগাহ করে দেওয়ারার জন্য। এরপর দিন ঈদগাহের নির্ধারিত স্থানে ময়লা ফেলা শুরু হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাষাঢ়া থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ পর্যন্ত রেল পথে নতুন করে রাস্তার কাজ চলমান। সেই সড়কের পাশেই বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন ডোবায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের গাড়ি ময়লা ফেলছেন। এতে ডোবার ময়লা যুক্ত পানি বেড়ে আশপাশের বাসাবাড়িতেও প্রবেশ করেছে। বন্ধ এই জল বের হওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। তাই পথচারীরা দূগন্ধে রয়েছে ও আশপাশের বাসিন্দারা দুগন্ধের পাশাপাশি ভোগছে জলাবন্ধতা, মশা, মাছি আর চর্মরোগে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কাজে পরিচালিত ড্রাম্প ট্রাকের চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের আবাসিক বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলাউদ্দিন বলেন, ‘সিটি করপোরেশন ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করেছে কিন্তু পানি সরার ব্যবস্থা করেনি। ফলে ডোবায় ময়লা ফেললেই পানি বেড়ে আশপাশের বাসা বাড়িতে ডুকছে। ময়লা আর্বজনা যুক্ত পানি মারিয়ে চলাচল করতে করতে পায়ে ঘাঁ হয়ে গেছে। আমার মা এই পানিতে পরে কমড়ের হার ভেঙ্গে বিছানায় পড়ে আছে। ২ লাখ টাকা খরচ করেছি, তারপরেও দাঁড়াতে পারছে না। কোথায় আমরা সিটি করপোরেশনে বসবাস করি, কিসের সিটি করপোরেশন।’
একই এলাকার বাসিন্দা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘কিছু দিন পূর্বেই আমাদের বাড়ির এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তখন বাড়িতে মধ্যে হাটু পানি ছিল, তাই লাশটা পর্যন্ত বাড়িতে আনতে পারিনি। রাস্তাতে রাখা হয়েছে, রাস্তাতেই গোসল করানো হয়েছে।
মুনসুর আহম্মেদ নামের একজন জানান, ‘ময়লা জীবাণুযুক্ত এই পানির কারণে মানুষের বিভিন্ন চর্মরোগ দেখা গিয়েছে। ২৪ ঘন্টাই থাকে দুর্গন্ধ, দিনে মাছির উপদ্রপ আর রাতে মশার যন্ত্রণায় থাকতে পারছি না। প্রতিটি বাড়ির বেশির ভাগ ভাড়াটিয়া চলে গেছে। কিছু কিছু বাড়িওয়ালাও বাড়ি রেখে ভাড়া বাসায় থাকছেন। আমরা যারা নি¤œ আয়ের মানুষ, তারাই সব কিছু সহ্য করে বসবাস করছি।
ওয়াডের বাসিন্দা নূর হোসেন বলেন, আমরা এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চাই।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অহিদুল ইসলাম ছক্কু জানান, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ওই জমিতে ঈদগাহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একটু সুফল ভোগ করতে গেলে দুর্ভোগ তো পোহাতেই হবে। সিটি করপোরেশনের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নেই, তাই খরচ কমাতে ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। পাশাপাশি পিছনের বাড়ি গুলোর জন্য নতুন রাস্তা ও ড্রেনের আবেদন করেছি। অনুমতি পেলেই কাজ করবো।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ