বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রার্থী মোছাদ্দেক হোসেন বাবলুর জন্য বেশ বেকায়দায় আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডঃ ইলিয়াছ আহম্মেদ। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা বাবলুর পক্ষে গোপনে কাজ করায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইলিয়াছ আহম্মেদ এর বিজয় নিয়ে আশংকা প্রকাশ করছেন দলের নেতাদের অনেকেই। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছেন না।
আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইলিয়াস আহমেদ আনারস প্রতীক নিয়ে লড়বেন এবং আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত বিদ্রোহী প্রার্থী মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়বেন।
মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ বর্তমানে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিপূর্বে তিনি প্রায় ২০ বছর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা ছিলেন। স্বাধীনতার আগে তিনি রংপুর সদর (মহকুমা) জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক, রংপুর সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন।
এদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী মুক্তিযোদ্ধা মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। তিনি ১২ বছর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের জেলা কমান্ডার ছিলেন। এ ছাড়া তিনি রংপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রেসিডেন্ট ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ছিলেন।
রাজনৈতিক দিক থেকে আওয়ামীলীগের প্রবীণ এই দুই ব্যক্তির দলীয় ও সাংগঠনিক অবস্থান ভালো। কিন্তু নির্বাচনে পরস্পরের বিরুদ্ধে মাঠে নামায় উভয়েই চরম বেকায়দায় পড়েছেন। দলীয় নেতাকর্মীরাও দু’ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করছে। তবে দল থেকে বহিস্কৃত মোছাদ্দেক হোসেন বাবলুর পক্ষে নেতাকর্মীরা গোপনে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে, নির্বাচনী হলফনামায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইলিয়াস আহমেদ উল্লেখ করেছেন তিনি পেশায় আইনজীবী। কৃষি খাতে তার আয় দেখানো হয়েছে ১ লাখ টাকা, পেশা থেকে আয় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে পোস্টাল সেভিংস রয়েছে ৫ লাখ টাকা, স্বর্ণ ও মূল্যবান ধাতু রয়েছে ৬ ভরি, নিজের নামে ১০ বিঘা ও স্ত্রীর নামে ২০ বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। এ ছাড়া অকৃষি জমি ৩০ শতক, গ্রামে দোতলা বাড়ি এবং স্ত্রীর নামে টিন সেড বাড়ি রয়েছে। তার মুক্তিযোদ্ধা ঋণ রয়েছে ১০ লাখ টাকা।
মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু তার হলফ নামায় উল্লেখ করেছেন- তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। কৃষিখাতে তার রয়েছে ২৭ হাজার ২৯০ টাকার সম্পত্তি। বাড়ি, এপার্টমেন্ট, দোকানসহ অন্য ভাড়া বাবদ আয় রয়েছে ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৭৬০ টাকা। ব্যবসা বাবদ আয় রয়েছে ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৫১ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, একচেঞ্জ ইত্যাদিতে রয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। বাস, ট্রাক, ছোট গাড়ি ইত্যদি বাবদ দেখানো হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। স্বর্ণ অন্য মূল্যবান পাথর রয়েছে ৫৫ হাজার টাকার। ইলেক্টনিক্স সামগ্রী রয়েছে ১ লাখ টাকার। আসবাবপত্র ১৫ হাজার টাকা। কৃষি জমি রয়েছে ৫৮ লাখ ৩ হাজার ২৫০ টাকার। এ ছাড়া অকৃষি জমি রয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭০ টাকার। দালান, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে ১৫ কোটি ৮০ লাখ ২৩ হাজার ৪৯৬ টাকার। বাড়ি এপার্টমেন্ট ১ কোটি ৫৫ লাখ, ৪০ হাজার ৪৫০ টাকার। অন্য ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৬ টাকা। অপরদিকে তার জামানত বিহীন ঋণ ৫০ লাখ এবং ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ১৯ কোটি ২৩ লাখ ৫১ হাজার ১৯৩ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।