Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাড়ছে খুনাখুনি, তিন মাসে ১১খুন

গত রাতেও খুন হয়েছে এক যুবক, অস্থিরতা বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝেও

কক্সবাজার ব্যুরো ও উখিয়া সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৩:৪০ পিএম

উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে থামছেনা খুনাখুনি। গত বুধবার রাতেও এরশাদ (২২) নামের এক রোহিঙ্গা যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত এরশাদ উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশন এর এইচ ব্লকের বাসিন্দা।

বৃহস্পতিবার (২৯-সেপ্টেম্বর) ভোরের দিকে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় বলে নিশ্চিত করেছেন এপিবিএন-১৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আনোয়ার।

তিনি বলেন, গত রাত সাড়ে তিনটার দিকে এক রোহিঙ্গা যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা হত্যার কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করছি এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোঃ আলী বলেন, গত দু'দিনে ৩ জনকে হত্যা করেছে কিছু রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। আমরা অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কারণ অনুসন্ধান করে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, গত জুলাই মাস থেকে প্রায় ৩ মাসে ১১ জন খুন হবার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক ( ভলান্টিয়ার) হিসেবে কাজ করত। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক দলকে অকার্যকর করতে এবং সাধারণ রোহিঙ্গাদের মনোবল ভেঙ্গে দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই ইচ্ছেকৃতভাবে এ ধরনের পরিকল্পিত টার্গেট কিলিং এর মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন।

মিয়ানমারে নির্যাতিত ১২ লাখের মত রোহিঙ্গা গত ৫ বছর ধরে
উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ টি ক্যাম্পে অবস্থান করছে। যখনই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তুড়জোড় শুরু হয় তখনই মহল বিশেষ সীমান্তে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। সচেতন মহলের মতে সম্প্রতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিশষটি বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব সম্প্রদায়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের উপর চাপ বাড়ালে সীমান্তে মিয়ানমার সরকার বিদ্রোহ দমনের নামে যুদ্ধাবস্থার তৈরী করা।

যদিও বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে, মিয়ানমার সরকার তাদের আভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমনের নামে অবিরত মর্টারশেল, কামানের গোলা, হেলিকপ্টার ও বিমানের মাধ্যমে ছোঁড়ে যুদ্ধাবস্থা তৈরী করেছে। এতে করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার জনসাধারণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অন্যদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্থানীয়দের মাঝে চরম হতাশা ও অস্থিরতা কাজ করছে বলে জানা গেছে।

কিছু রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে গুম, খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ইয়াবা ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাচালান ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আশ্রয় ক্যাম্প গুলো অস্থির হয়ে উঠেছে। এসব কর্মকান্ড আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতি চ্যালেঞ্জ স্থানীয়ের মাঝে ভীতি ছড়িয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত করাই তাদের মতলব বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।

সচেতন মহলের মতে দ্রোত রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন করাই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ