বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সুনামগঞ্জের ছাতকে দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ কলেজ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় মধ্যস্থকারী, পথচারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০জন ব্যক্তি আহত হয়েছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের আয়াজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ে অন্যান্য দিনের ন্যায় রুটিন মোতাবেক এসএসসি পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরিক্ষা শেষে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে বুড়াইরগাঁও এলাকায় পৌঁছামাত্র দুই পরিক্ষার্থী ছাত্রের মধ্যে পূর্ব বিরোধ নিয়ে বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে তারা মারা মারি করে। প্রথম দফা মারা মারি শেষে এখান থেকে তারা গোবিন্দগঞ্জে ফেরার পর দুই ছাত্রসহ তাদের পক্ষের লোকজনরা ফের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া করে। এসময় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত তারা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হন। পথচারিরা দিকবিদিক ছুটাছুটি করে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজেন। পয়েন্ট এলাকা থেকে চালকরা সব ধরণের যানবাহন নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে দেখা গেছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ ও ছাতক সড়কে প্রায় আধঘন্টা সব ধরণের যানচলাচল বন্ধ ছিল। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা থামাতে গিয়ে মধ্যস্থকারী, পথচারীসহ দুই পক্ষের অন্তত ২০ ব্যক্তি আহত হয়েছে। মধ্যস্থকারী সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাকিম আহমেদ রায়হানকে ছাতক স্বাস্থ্য কপ্লেক্সে ও পারভেজ নামের এক এসএসসি পরিক্ষার্থীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। খবর পেয়ে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান, উপ-পরিদর্শক মহিন উদ্দিনসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হন। পরে সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ইট পাটকেল ছাড়াও দুই পক্ষের লোকজনের হাতে রামদাসহ ধারালো অস্ত্র দেখা গেছে।
আহত গোবিন্দনগর গ্রামের আশরাফ আলীর পুত্র ও গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরিক্ষার্থী মারুফ আহমদ বলেন, মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রে পরিক্ষা দেয়ার জন্য গেলে তকিপুর গ্রামের জনৈকের পুত্র ও এসএসসি পরিক্ষার্থী আজিজ এবং তার সাথে থাকা অন্যরা তাকে গত সোমবার কেন গালাগাল করেছি এ বিষয়ে জানতে চায়। সে কাউকে গালাগাল করেনি বলে জানিয়ে পরিক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে। পরিক্ষা দিয়ে সহপাঠী আল আমিনকে সাথে নিয়ে বের হয়ে অটো-রিকশা যোগে বাড়ি ফিরার পথে আজিজসহ গংরা তাকে গতিরোধ করে মারধর করে। পরে অন্য অটো রিকশা যোগে গোবিন্দগঞ্জ কলেজ এলাকায় পৌঁছার পর তার স্কুলের শিক্ষক ফজলুল করিম বকুল তাকে নিরাপদে নিয়ে যান। এদিকে, আজিজের সাথে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
মধ্যস্থতা করতে গিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাকিম আহমেদ রায়হান বলেন, এসএসসি পরিক্ষার্থী গোবিন্দনগর গ্রামের মারুফ ও পুরানবাজার মাধবপুরের নাহিদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। বুড়াইরগাঁও এলাকায় প্রথম দফা ও দ্বিতীয় দফা ঘটনা ঘটেছে গোবিন্দগঞ্জ কলেজ এলাকায়। এমন খবর পেয়ে তিনি মধ্যস্থতা করতে গিয়েছিলেন কলেজ এলাকায়। এসময় গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ফজলুল করিম বকুল আহত মারুফকে সাথে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন। আমাকেও স্কুলে যাওয়ার জন্য তিনি বলায় আমিও তার পিছনে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আল্লাহু চত্ত্বর এলাকায় পৌঁছার আগেই চিহৃত অস্ত্রধারিরা হঠাৎ তার উপর অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করে। তার হাত, পা ও মাথাসহ শরিরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্বক আঘাত রয়েছে।
ছাতক থানার উপ-পরিদর্শক, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের বিট অফিসার মুহিন উদ্দিন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেছে। মূলত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাহিদ ও মারুফ নামের দুই এসএসসি পরিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।