Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সখিপুর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের শাল-গজারি বিলুপ্তির পথে

| প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. শরীফুল ইসলাম, সখিপুর (টাঙ্গাইল) থেকে : সখিপুর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী শাল গজারি কপিচ বাগান বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বলে এলাকায় বসবাসকারী লোকজন জানান। বনবিভগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারী, অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের কারণে শাল-গজারি কপিচ বাগান কর্তন করে উজাড় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। আবার বন মামলা থেকে বাঁচার জন্য এবং বনবিভাগের লোকজন ঝামেলা এড়াতে কর্তনকৃত শাল-গজারির মোথা সমূলে উপরে ফেলছে। সংগত কারণে মোথা থেকে বংশ বিস্তারে মারাত্মকভাবে ব্যাঘাত ঘটছে। কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে সখিপুর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের হাজার বছরের ঐতিহ্য শাল-গজারি এই বাগান রক্ষার্থে ২০০১-২০০৪ সালে বনবিভাগের পক্ষ থেকে প্লট ভিত্তিক উপকারভোগী নিয়োগ করা হয়। কিন্তু প্লটের অংশীদারদের প্লটের সীমানা নির্ধারণ করে না দেয়ায় শাল-গজরি কপিচ বাগান রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গেছে। এছাড়া কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে প্লটের পার্শ্ববর্তী লোকদের অংশীদার না করে ১৫/২০ কি.মি. দূরের লোকদের  অংশীদার করায় অবৈধ বৃক্ষ নিধন করা হলেও প্রতিবাদ করার কেউ নেই। সঙ্গত কারণে হাজার বছরের ঐতিহ্য শাল-গজারি বাগান ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল দক্ষিণ বাশতৈল, হতেয়া, বহেড়াতলী, ধলাপাড়া রেঞ্চের প্রতিটি বিটের একই অবস্থা। সরে জমিনে বহেড়াতৈল রেঞ্জের কাকড়াজান (মরিচা), সদর বিটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শাল-গজারি কপিচ বাগানের ৫ শতাধিক উপকারভোগী নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮০/১০০ জন অংশীদার কালিহাতি উপজেলার নাগবাড়ী, রতনগঞ্জ এবং সখিপুর উপজেলার শেষ সীমানা ডাবাইল গোহাইল বাড়ি এলাকার। স্থানীয় উপকারভোগী হেলালউদ্দিন, বাচ্চু, মহর আলী, সুরুজ, লাল মিয়া, হারুনসহ আরো অনেকেই জানান, শাল-গজারি কপিচ বাগানের সীমানা নির্ধারণ করে না দেয়ায় প্লটের বৃক্ষ রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি প্রশাসনিকভাবেও  কোনো কার্যকর পদক্ষেপে ফলপ্রসূ সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বায়নের যুগে অবাধে শাল-গজারি কপিচ বাগানের বৃক্ষ নিধন করার ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে এবং জলবায়ুর আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শাল-গজারি কপিচ বাগান যেভাবে দ্রুত বিলুপ্ত হচ্ছে তাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঐতিহ্যবাহী শাল-গজারি ক’পিচ বাগানের বৃক্ষ দেখার জন্য জাদুঘরে যেতে হবে। স্থানীয়ভাবে বনবিভাগের চৌকস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে টহল বাহিনী গঠন করলে শাল-গজারি ক’পিচ বাগান রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে বিজ্ঞ মহলের ধারণা। বনপ্রহরীদের সাথে দুর্বৃত্তদের আঁতাত থাকায় টাঙ্গাইল বনবিভাগের পক্ষ থেকে রাতে টহল দেয়ার পরও আশানুরূপ সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কাকড়াজান (মরিচা) বিটের। কাকড়াজান (মরিচা) বিটের বিট কর্মকর্তা দেবব্রত বলেন, পূর্বের বিট কর্মকর্তার সময় এ বিটের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এব্যাপারে বহেড়াতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আতাউল মজিদ বলেন, বহেড়াতৈল বিটের বিশাল এরিয়া-লোকবল কম থাকায় রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করেও শাল-গজারি ক’পিচ বাগান রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগের তুলনায় বন অপরাধ অনেকাংশে কমে গেছে।  



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ