Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবশেষে মরিয়মের মা রহিমাও জীবিত উদ্ধার, তাহলে ফুলপুরের বস্তাবন্দী লাশটি কার?

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:৫৭ পিএম

ময়মনসিংহের ফুলপুরে গত ১০ সেপ্টেম্বর উপজেলার বওলা ইউনিয়নের বওলা গ্রামের বস্তাবন্দী অজ্ঞাতপরিচয় (২৮) এক নারীর অর্ধলগিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর প্রথমে একজন এসে এটা তার মেয়ে তুলি বলে সনাক্ত করতে চায়। পরে তুলিকেও জীবিত পাওয়া যায়। পরে শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনার মরিয়ম মান্নান এসে এটা তার মা রহিমা বেগমের লাশ বলে সনাক্ত করেন। কিন্তু পরদিন তার মাকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। তাহলে ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দি মরদেহটি কার?

জানা যায়, ফুলপুর উপজেলার বওলা ইউনিয়নের বওলা পূর্বপাড়া গ্রামের ফজলুর রহমানের বাড়ির দক্ষিণ পাশে একটি পারিবারিক কবরস্থান থেকে ১০ সেপ্টেম্বর সকালে বস্তাবন্দি অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়না তদন্তশেষে পরিচয় না পাওয়ায় অজ্ঞাত হিসেবে ঐ নারীর লাশ আঞ্জুমানের কবরস্থানে দাফন করা হয়। হত্যাকাণ্ডটি বেশ কয়েক দিন আগে হওয়ায় এবং এ লাশের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে না পারায় লাশ শনাক্ত করা যায়নি। উক্ত অজ্ঞাতনামা লাশ পরিচয় পাওয়ার জন্য স্থানীয় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়াতে সংবাদ প্রচার করে পুলিশ। ফুলপুর থানার পুলিশ লাশের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগানোর ব্যবস্থা করে। একদিন হঠাৎ করে নাটোরের তুলির মা ফুলপুর থানায় এসে চিৎকার-চেঁচামেচি করে বললো ফুলপুরে বস্তাবন্দি লাশটি তার মেয়ে তুলির। তুলির মা ফুলপুর থানায় থাকতে থাকতেই তুলি ঢাকা থেকে ফোন করে জানালো সে বেঁচে আছে। থেমে গেল কান্না।

এরপর গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে মায়ের খুঁজে সাংবাদিক সম্মেলন করে আলোচিত মরিয়ম মান্নান পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফুলপুর থানায় এসে হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে বলল ফুলপুরে বস্তাবন্দি লাশের ছবি ও কাপড় দেখে সে নিশ্চিত হয়েছে এটি তার মা রহিমা বেগম। সেই লাশ নিজের মায়ের বলে দাবি করে মরিয়ম মান্নান তখন বলেন, ২৭ দিন ধরে আমার মা নিখোঁজ। আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের মাকে খুঁজছি। গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানায় একটি অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে এখানে ছুটে আসি। লাশের ছবি দেখে আমার মায়ের কপাল, হাত স্পষ্ট বোঝা গেছে। আমি মনে করি মায়ের শরীর চিনতে কোনো প্রমাণ লাগে না। তারপরও আমরা অফিসিয়াল সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবো।’ পায়জামাটা আমার মায়ের। তবে জামাটা তাদের বাসার ভাড়াটে মহিলার বলে জানান তিনি। এসময় তিনি লাশের ডিএনএ-এর সঙ্গে তার ডিএনএ মিলিয়ে দেখারও আবেদন করেন। এরমাঝে হঠাৎ করে খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে ‘নিখোঁজ’ বহুল আলোচিত সেই রহিমা বেগমকে শনিবার রাতে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগম জীবিত উদ্ধারের পর থেকে ঘটনার মোড় ঘুরতে থাকে। শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা। সবার মনে একটা প্রশ্ন যে, " তাহলে ফুলপুরে উদ্ধার বস্তাবন্দি লাশটি কার?

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিখোঁজ ওই নারী রহিমা বেগম জীবিত উদ্ধার হওয়ায় মরিয়ম মান্নানের ডিএনএ আবেদন আদালতে করা হবে না। তবে এ লাশটি কার, এ রহস্য উদঘাটন করতে ফুলপুর থানা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো জানান, যদি কেউ ওই লাশের পরিচয় দাবি করেন, তাহলে লাশের সাথে থাকা আলামতসহ ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল মিলে গেলে তিনিই হবেন লাশের প্রকৃত দাবিদার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ