Inqilab Logo

রোববার ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

দৌলতখানে ভাঙারি ব্যবসার আড়ালে চোরাকারবার

দৌলতখান (ভোলা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ভোলার দৌলতখানে ভাঙারি ব্যবসাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী অপরাধ চক্র। চক্রটি চুরি, ছিনতাই, মাদক বিক্রিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। এতে উপজেলার পাড়া-মহল্লা, গ্রাম-গঞ্জে চুরি ও ছিনতাই বেড়ে গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দৌলতখানের চরখলিফা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হেলিপোর্ট রোড, দৌলতখান পৌর বাসস্ট্যান্ড ও বিউটি রোডসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অর্ধশত ভাঙারি দোকান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব দোকানে ভাঙাড়ি ব্যবসার আড়ালে চলছে জমজমাট চোরাকারবার। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় চলছে এ কারবার। এনিয়ে ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না কেউই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, হেলিপোর্ট রোডে সন্ধ্যার পর অপরাধীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। মাদকের আসর বসে নিয়মিত। আন্তঃজেলা চোর চক্রের সদস্যরা অটোরিকশা, ভ্যান, সাইকেল, বোরাক, ভবনের দরজা, জানালা, গ্রিল, লোহার রডসহ নানা চোরাই মাল এখানে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করছে। প্রকাশ্যে এ কারবার চললেও প্রশাসন নিরব। দোকানগুলোতে প্লাস্টিক ও কাচের বোতল, তামা, বই, খাতা লোহার রড, মোটর, স্টিলের আলমারি, বৈদ্যুতিকপাখা, ইঞ্জিনের যন্ত্রপাতি কেনা-বেচা হয়।
দৌলতখান পৌর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী আকরাম ওরফে আকরাম হুজুর কাভার্ডভ্যানে করে পাইকারি দরে কেনা চোরাই মাল ঢাকায় পাচার করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বিউটি সিনেমা হল রোডে এক ব্যবসায়ী ভাঙারি ব্যবসার নামে চোরাই পন্য কেনা-বেচা করছে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় অটোরিকশা চালক নুর মোহাম্মদ, নবু ও সবুজ জানায়, কয়েক মাস আগে তাদের তিনটি অটোরিকশা চুরি হয়। অনেক খোঁজাখুজি করেও পাওয়া যায়নি। কীভাবে পাবো? চোরেরা এগুলো কম দরে ভাঙারি দোকানে বিক্রি করে দেয়।
স্থানীয়রা জানায়, হেলিপোর্ট রোডে মিজান স্টোর, বিছমিল্লাহ স্টোর ও ফারিয়া স্টোরসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙারি ব্যবসার আড়ালে চোরাকারবার চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, মিজান মোটরস-এ চোরাই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ক্রয় করে ভাঙাড়ি হিসেবে বিক্রি করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দোকানের সামনের রাস্তার পাশে ও বাগানে পুরনো ১০/১২টি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও বোরাক। দোকানের ভেতরে অটোরিকশার নানা যন্ত্রাংশ।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী মিজান ইনকিলাবকে জানায়, ‘স্টাম্পে লিখিত করে পুরনো ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা ক্রয় করে ভাল যন্ত্রাংশগুলো আলাদা করে বিক্রি করা হয়।’ তবে তিনি চোরাই অটোরিকশা ক্রয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘যারা চোরাই মালামাল বেচা-কেনা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।’ তিনি বৈধভাবে ব্যবসা করছেন বলে দাবি করেন। ব্যবসায়ী আকরাম বলেন, ‘আমি কোনো চোরাই মাল কেনা-বেচা করিনা।’ হেলিপোর্ট এলাকায় ভাঙারি ব্যবসার আড়ালে মাদক ও চোরাকার এখন ওপেন-সিক্রেট। ইতোপূর্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ওই এলাকা থেকে কয়েকজন মাদক কারবারি ও চোর চক্রের সদস্য আটকও হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ