পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : অভিবাসন নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্টে (জিএফএমডি) অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অতিথিরা এখন ঢাকায়। আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী অভিবাসনবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এ সম্মেলনে যোগ দিতে আজকের মধ্যেই আরও কয়েকশ’ বিদেশি প্রতিনিধি ঢাকায় আসবেন।
অবশ্য জিএফএমডি সম্মেলন শুরুর আগেই বিদেশি প্রতিনিধিরা ঢাকায় এসেছেন পিপলস গ্লোবাল অ্যাকশন ফোরামের (পিজিএ) দুই দিনব্যাপী অধিবেশনে অংশ নিতে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, মেক্সিকো, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, হংকং, কানাডা, মিশর, লেবানন, বাহারইনসহ ২৫ দেশের প্রায় তিনশ’ বিদেশি এই অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। আজ ৮ ডিসেম্বর থেকে জিএফএমডি’র নাগরিক সম্মেলন শুরু হবে এবং সেখানে পিজিএ’র ঘোষণাগুলো তুলে ধরা হবে।
এবারের সম্মেলনে অভিবাসন ও উন্নয়নের অর্থনীতি, সামাজিক প্রেক্ষাপট ও সুশাসন- এই তিনটিকে মূল ধরে মোট ছয়টি বিষয়ের ওপর আলোচনা হবে। অভিবাসন খরচ, মানুষে মানুষে যোগাযোগ, অভিবাসীদের গন্তব্য, অভিবাসীদের স্বার্থরক্ষা, সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি ও দুর্যোগ চলাকালে কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে, নিরাপদ অভিবাসনের জন্য করণীয় এমন বিষয়গুলো নিয়ে এই সম্মেলনে আলোচনা ও করণীয় ঠিক করা হবে।
অভিবাসন ও বৈশ্বিক শরণার্থী পরিস্থিতির বর্তমান- ভবিষ্যতের করণীয় নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে এবারের এই সম্মেলনে। আজ বৃহস্পতিবার ও আগামীকাল শুক্রবার অভিবাসন নিয়ে কাজ করা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অভিবাসন, উন্নয়ন ও সুশাসন সংক্রান্ত নানা বিষয়ে আলোচনা করবেন। নাগরিক প্রতিনিধিদের এ আলোচনার সারবস্তুু উঠে আসবে সরকারি প্রতিনিধিদলের বৈঠকে। ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে সরকারি পর্যায়ের ওই আলোচনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি গ্রেগরি মানিয়াতিস, ইউএন উইমেনের উপনির্বাহী পরিচালক লাকসমি পুরি, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মহাপরিচালক গাই রেডার, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি সুইং, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল উ হংবো উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রীও উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ১২ ডিসেম্বর অধিবেশনের সমাপনী ঘোষণা করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে সউদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফিলিস্তিনসহ অন্তত ২০টি দেশের মন্ত্রীরা আসবেন। প্রায় অর্ধশত দেশের সচিবেরা আসছেন। থাকবেন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। এছাড়া এবারের জিএফএমডিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন ও তুরস্কের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় যুক্ত হচ্ছে। এবারের সম্মেলনে কানেকটিভিটি ইস্যুকেও অভিবাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, অভিবাসন ও উন্নয়ন নিয়ে জাতিসংঘের উদ্যোগে এক দশক আগে জিএফএমডি সম্মেলনের উদ্যোগ নেয়া হয়। গত বছর তুরস্কের কাছ থেকে বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান পদ লাভ করে। ২০০৭ সালে বেলজিয়ামে প্রথম এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০৮ সালে ফিলিপাইনে, ২০০৯ সালে গ্রিসে, ২০১০ সালে মেক্সিকোতে, ২০১১ সালে সুইজারল্যান্ডে, ২০১২-১৩ সালে মরিশাসে, ২০১৩-১৪ সালে সুইডেনে ও ২০১৫ সালে তুরষ্কে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে নবম সম্মেলন। আগামী সম্মেলন হবে জার্মানীতে।
জিএফএমডি’র এবারের চেয়ারম্যান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বাংলাদেশে ইতিপূর্বে এত বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়নি। তবে সম্মেলন সফলভাবে আয়োজনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পররাষ্ট্রসচিব বলেন, এবারের জিএফএমডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে বিশ্ব সম্প্রদায় অভিবাসন ইস্যুতে একটি গ্লোবাল কমপ্যাক্ট প্রণয়নে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের প্রস্তাবিত একটি বৈশ্বিক চুক্তি। এর মাধ্যমে অভিবাসন, শরণার্থী ও মানব পাচারবিষয়ক সমস্যার সমাধান খোঁজা হবে। ২০১৮ সালে বিশ্বনেতারা এ চুক্তিটি অনুমোদন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এবারের জিএফএমডি সম্মেলনে এই বিষয়গুলো উঠে আসবে।
তিনি আরো বলেন, ইরাক, লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সহিংসতা চলছে। এসব পরিস্থিতিতে অভিবাসীদের কী হবে, কীভাবে তাদের উদ্ধার করা হবে, সেসব নিয়েও আলোচনা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।