Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দী লাশটি খুলনার রহিমা বেগমের বলে দাবি মেয়ে মরিয়মের

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৩:৪৯ পিএম

ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বওলা ইউনিয়নের বওলা পূর্বপাড়া গ্রামে একটি কবরস্থান থেকে গত ১০ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দী লাশ খুলনার রহিমা বেগমের (৫২) বলে দাবি করেছেন নিহতের ছোট মেয়ে মরিয়ম মান্নান। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফুলপুর থানায় এসে লাশের সাথে থাকা সুরতহাল তথ্য অনুযায়ী নিশ্চিত করেন লাশটি তাঁর মায়ের। এ সময় লাশের সাথে বিভিন্ন আলামত দেখে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মেয়ে মরিয়ম বলেন, ‘এ লাশটি আমার মায়ের।’ নিখোঁজ হওয়া ওই নারীর নাম রহিমা খাতুন (৫২)।

জানা যায়, দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদারকে নিয়ে খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা খানাবাড়িতে থাকতেন রহিমা। গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। কিন্তু এক ঘণ্টা পরও তিনি বাসায় না ফেরায় তাঁর সন্তানেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। নলকূপের পাশে তাঁদের মায়ের জুতা, ওড়না ও পানির পাত্র পড়ে থাকলেও মাকে তাঁরা খুঁজে পাননি। এ ঘটনায় ওই রাতেই রহিমা বেগমের ছেলে দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন তাঁর মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পরিচয়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন। এ ছাড়া বিষয়টি র‌্যাবকেও জানানো হয়। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মায়ের সন্ধান চেয়ে ঢাকায় মানববন্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাঁপ করে আসছেন সন্তানেরা। আরও জানা যায়, নিখোঁজ রহিমা খাতুনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশীদের জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছিল।

এদিকে ফুলপুর থানা পুলিশ জানায়, ১০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১১টার দিকে ফুলপুর উপজেলার বওলা ইউনিয়নের বওলা পূর্বপাড়া গ্রামের ফজলুর রহমানের বাড়ির দক্ষিণ পাশে একটি পারিবারিক কবরস্থানে স্থানীয়রা লাশের গন্ধ পেয়ে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সে কবরস্থানের ঝোপঝাড় থেকে বস্তাবন্দি অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। ওই নারীর পরনে ছিল গোলাপি রংয়ের সেলোয়ার, গায়ে ছিল সূতি ছাপা গোলাপি, কালো, বেগুনি ও কমলা মিশ্রণ রংয়ের কামিজ। গলায় গোলাপি রংয়ের ওড়না প্যাঁচানো ছিল। ময়না তদন্তশেষে পরিচয় না পাওয়ায় অজ্ঞাত হিসেবে ঐ নারীর লাশ আঞ্জুমানের কবরস্থানে দাফন করা হয়। হত্যাকাণ্ডটি বেশ কয়েক দিন আগে হওয়ায় এবং এ লাশের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে না পারায় লাশ শনাক্ত করা যায়নি। উক্ত অজ্ঞাতনামা লাশ পরিচয় পাওয়ার জন্য স্থানীয় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়াতে সংবাদ প্রচার করে পুলিশ। ফুলপুর থানার পুলিশ লাশের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগানোর ব্যবস্থা করে। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা থেকে মরিয়ম মান্নানসহ পরিবারের ছয় সদস্য এলে লাশের সাথে থাকা আলামত দেখান আলামত সংগ্রহকারী ভ্যানচালক জামাল উদ্দিন। মরিয়ম মান্নান মায়ের লম্বা চুলের বিবরণ শোনেন জামালের কাছ থেকে। তখন পরিবারের সবাই চিৎকার করে বলেন, এ লাশ আমাদের।

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অজ্ঞাত মহিলার লাশ সনাক্তের জন্য জনৈকা মরিয়ম আক্তার শুক্রবার সকাল অনুমান ১০ঃ৩০ ঘটিকায় ফুলপুর থানায় এসে জব্দকৃত কাপড়-চোপড় দেখে শুধুমাত্র সেলোয়ারের রং দেখে ধারনা করছেন যে সেলোয়ারটি তার মায়ের হতে পারে। এবং উক্ত লাশের ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচ করতে আগ্রহী। বিষয়টি আদালতে জানানো হবে। রবিবার আদালতে এ বিষয়টি তুলে ধরা হবে। ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত করা হবে লাশটি মরিয়মের মায়ের কি না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ