Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নেছারাবাদে মেম্বরের সহযোগীডায় দশম শ্রেণী পড়ুয়া সুস্থ ছেলেকে প্রতিবন্ধি বানালেন মা

নেছারাবাদ(পিরোজপুর)সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৫ পিএম

নেছারাবাদ উপজেলার সমেদয়কাঠি গ্রামে মনিরজ্জামান নামে দশম শ্রেণি পড়ুয়া সুস্থ সবল একটি ছেলের নামে প্রতিবন্ধি কার্ড করিয়েছেন অর্থ লোভী মা শান্তা বেগম বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ছেলের নামে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন কার্ড,মেডিকেল সার্টিফিকেট সহ পার্সপোর্ট সাইজের ছবি ব্যবহার করে ছেলের নামে প্রতিবন্ধি ভাতা তুলতে ওই কার্ড করিয়েছেন। সমেদয়কাঠি ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: সোহেল এর সহযোগীতায় শান্তা বেগম কাজটি করিয়েছেন। শান্তার সাথে ইউপি সদস্য সোহেলের গভীর সখ্যতার রয়েছে। তাই সোহেল শান্তার কথামত কাজটি করতে সহযোগীতা করেছেন। প্রতিবন্ধি কার্ডধারি ছেলে মনিরউজ্জামান এর পিতা শান্তার স্বামী ব্যবসায়ি ফারুক হোসেন এ অভিযোগ করেছেন।

মনিরুজ্জামান (মনির) এর পিতা মো: ফারুক হোসেন অভিযোগ করে বলেন,আমার ছেলে মনির সম্পপূর্ন সুস্থ সবল। সে দশম শ্রেনীর ছাত্র। সোহেল মেম্বারের সাথে আমার স্ত্রী শান্তার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে আমাদের দাম্পত্য জীবনে দীর্ঘদিন কলহ বেধেই আছে। তিনি বলেন, আমরা ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আমাদের ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গৌতম পাল। অথচ, ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোহেল পারভেজ আমার স্ত্রী শান্তার কথামত আমার সুস্থ সবল ছেলের নামে প্রতিবন্ধি কার্ড করিয়েছেন। যা আমার ও আমার ছেলের জন্য লজ্জাজনক ব্যাপার। তিনি বলেন সোহেল মেম্বর ভুয়া জন্ম নিবন্ধন,মেডিকেল সার্টিফিকেট ছবি ব্যবহার করে ছেলের নামে ওই কার্ড করিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমি বিষয়টি সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। আমি ওই কার্ড বাতিল সহ এর সাথে যারা জড়িত তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনার জোড় দাবি জানাচ্ছি।

৪নং ওয়ার্ডের ইউপিসদস্য সোহেল পারভেজ বলেন, মনির সত্যিকারের প্রতিবন্ধি। তার মেডিকেল সার্টিফিকেট আছে। ওর মায়ের কাছে জিজ্ঞাসা করেন। ভূয়া জন্মনিবন্ধন, নাম, ছবি পরিবর্তন করে অন্য ওয়ার্ডের লোকের জন্য সুপারিশ কেন করেছেন জানতে চাইলে। এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এক জনের জন্ম নিবন্ধন ৪/৫ টিও থাকতে পারে বলে তিনি আর কোন উত্তর দিতে পারেননি।

ওই ছেলে মনিরুজ্জামান বলেন, আমি সম্পূর্ন সুস্থ। আমি কোন অফিসে যাইনি। মা আমার নামে প্রতিবন্ধি কার্ড করিয়েছেন। আমি কিছু জানিনা।

এ বিষয়ে ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গৌতম পাল বলনে, আমি মনিরের নামে কোন প্রতিবন্ধী কার্ড দেইনি। কে বা কারা করাইছে আমি জানিনা। যারা সত্যিকারের প্রতিবন্ধি তাদের জন্য সুপারিশ করেছি।

ওই ছেলের মা শান্তা আক্তার স্বামীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার স্বামী ঠিকমত আমার খোজ খবর নেয়না। তার সাথে বুনি বোনা হয়না। কাজের সুবাধে আমি ভিবিন্ন লোকের সাথে কথা বলি। মেম্বর সোহেল পারভেজ এর সাথেও প্রয়োজনে কথা বলি। মাজে মধ্য তার সাথে একটু চা কফি খাই। আমার ছেলে নরম স্বভাবের। বিদ্যালয়ের আর পাচটা ছেলের মত লেখা পড়ায় মনযোগী না। কারো সাথে বেশি কথা বলেনা। তাই ওর ভবিষৎ নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। এলাকার মানুষের কথায় সোহেল মেম্বরের সহযোগীতায় ছেলের নামে প্রতিবন্ধি কার্ডটি করিয়েছি।

এ বিষয়ে সমাজ সেবা কর্মকর্তা তপন বিশ্বাস এর অফিসে গিয়ে তাকে না পেয়ে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে অফিসে আইসেন। তখন বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। ফোনে কিছু বলা যাবেনা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ