Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আর্সেনিক ঝুঁকিতে রূপগঞ্জ!

প্রায় ৪ হাজার টিউবওয়েল : তিন ইউনিয়নের ৪২ গ্রাম ঝুঁকিতে

মো. খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

রূপগঞ্জের ভোলাবো, দাউদপুর ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ৪০ গ্রামের ঘরে ঘরে আর্সেনিক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এর ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। ইতোমধ্যে ৮ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গত এক যুগ ধরে ওইসব গ্রামের মানুষ আর্সেনিক সমস্যায় ভুগলেও এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কার্যকর কোনও পদক্ষেপ ছিলো না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ঝুঁকি এড়াতে আর্সেনিকযুক্ত পানি না খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ফলে এলাকার জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
রূপগঞ্জের ভোলাবো, দাউদপুর ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ৪০ গ্রামের মানুষ অনেকটা জেনে বুঝেই আর্সেনিকযুক্ত পানি (বিষ) পান করে চলছেন। এসব গ্রামের প্রায় ৩ হাজার ৯৮৭টি টিউবওয়েলের পানিতে আর্সেনিক রয়েছে। সরকারিভাবে কিছু গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলেও সেগুলো অকেজো। বাধ্য হয়েই মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে। আক্রান্তদের হাতে-পায়ে গুটি ও ঘা, সারা শরীরে কালো দাগসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময়েও মানুষকে সচেতন করতে বা আর্সেনিকমুক্ত পানির উৎস তৈরি করতে সরকারি বা বেসরকারি কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। দাউদপুর ইউনিয়নের বাসুন্দা গ্রামের নুরুল হক, একরাল হোসেন, লতিফা বেগম, ফুলেরা বেগমসহ আরো অনেক নারী-পুরুষ চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শরীরে চর্মরোগের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের কাছে যাওয়ার পর তারা বলেন, এই চর্মরোগ হয়েছে পানিবাহিত কারণে।
চিকিৎসকরা সেই সাথে বিষয়টি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে অবহিত করতে বলেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে রোগিরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপরই টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করা হলে আর্সেনিক ধরা পড়ে। এ পর্যন্ত ওইসব রোগিদের সরকারি- বেসরকারীভাবে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ভোলাবো ইউনিয়নের গুতুলিয়া এলাকার মোতালিব মিয়া জানান, তার টিউবওয়েলে পয়েন্ট ৫ মাত্রায় আর্সেনিক দেখা দিয়েছে। একই গ্রামের মান্নান সরকার, জাকারিয়া ভূইয়া, কবির সরকার, এমরান সরকার, জজ মিয়া, জহিরুল সরকার, হাবিবুর সরকার, ছাদিকুর সরকার, ইউনুস মিয়া, শামীম মিয়া, নাজমুল সহ অনেকের নলকূপে আর্সেনিক দেখা দিয়েছে।
তারা বলেন, আর্সেনিকের কারনে গত কয়েক বছর ধরে তারা টিউবওয়েলের পানি পান করা বন্ধ করে দিয়েছেন। গ্রামবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে রয়েছে। তাদের অভিযোগ, এ পর্যন্ত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের কেউই তাদের খোঁজ নেয়নি।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদফতরের উপ-প্রকৌশলী আয়েশা খাতুন তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, কর্মকর্তারা আর্সেনিক নিয়ে কাজ করছেন। লোকজনদের বুঝানো হচ্ছে। আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলেগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে। উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে আর্সেনিক ঝুঁকি এবং কয়েকজন আক্রান্ত হওয়ার খবরও অধিদফতর জানে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ