Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেওয়ানগঞ্জ ভ্যাকসিন আছে মানুষ নেই

দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ৩য় ডোজ ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত রয়েছে। কিন্তু টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিসংখ্যান সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, সারা দেশের সাথে তালমিলিয়ে ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম ডোজ সিনোফার্ম ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়। উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,৮২,৪৭০। এর ৮০.৩৪% ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। ছাপ্পান্ন দিন পর এপ্রিল মাসে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হয়। জনসংখ্যার ৭৮.৮৯% মানুষ ভ্যাকসিন নেয়। যা জামালপুর জেলার সর্বোচ্চ টিকা প্রদান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হিসাবে স্থান পায়। বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রে পুরোটাই ভিন্ন চিত্র। চলতি বছর ৬ জানুয়ারি থেকে বুস্টার ডোজ মর্ডানা ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়। বুস্টার নিতে পারবে ১,৮৪,৫২৪ জনসংখ্যার মধ্যে ডোজ গ্রহন করেছেন মাত্র ৪১.৮২%। প্রথম দিকে দিনভর বুস্টার টিকা গ্রহণকারীরা উপস্থিতি ছিলো। বর্তমানে তা কমে গেছে। দিনে মাত্র দশ বারো জন ভ্যাকসিন গ্রহনকারী পাওয়া যায়। দুপুরের পর কোন টিকা গ্রহনকারীর উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অথচ হাসপাতালে আটজন ভ্যাকসিনেটর সেবা প্রদানের জন্য নিয়োজিত থাকেন। বুস্টার ডোজে অনিহা বিষয়ে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়- ডোজ গ্রহণের পর সামান্য জ¦র, শরীর ব্যাথাসহ তিন থেকে চারদিন শরীর দুর্বল থাকে। এই ভয়ে অনেকেই বুস্টার ডোজ নিতে চায় না। আবার অনেকের বাড়ি প্রত্যন্ত গ্রামে হওয়ায় এসএমএস পাওয়ার পরও ৩য় ডোজ সম্পন্ন করতে আসেনি। কারণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি থেকে প্রায় ৫০ কিঃমিঃ দূরত্বে রয়েছে পাররামরামপুর, চরআমখাওয়া ও ডাংধরা ইউনিয়ন। দূরত্বের কারণে এসব ইউনিয়নের অনেকেই পাশের বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেও ভ্যাকসিন গ্রহন করেছে।
দূরবতী এসব এলাকায় ভ্যাকসিন সেবা পৌছে দিতে স্বাস্থ কমপ্লেক্সের উদ্যোগে ইতোমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যায়ে তিনবার করে ক্যাম্পাইন করা হয়েছে। যাতে টিকা গ্রহণ করা থেকে কেউ বাদ না পড়ে। যারা টিকা গ্রহণ করতে চায়নি তাদের টিকা গ্রহনের উপকারিতা বুঝিয়ে টিকা গ্রহন করতে আগ্রহী করা হয়। যার ফলে প্রতি ক্যাম্পেইনে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টিকা প্রদান সম্ভব হয়েছে।
ডা. ফরহাদ হোসেন জানান, একজন মানুষ দুটো ভ্যাকসিন গ্রহন করার পর তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ৬০-৭০% পর্যন্ত গড়ে উঠে। ৩য় ডোজে মর্ডানা ও ফাইজার দেয়া হয়। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ৮০-৯০% পর্যন্ত বেড়ে যায়। তাই ৩য় ডোজ নেয়া জরুরি।
আরো জানা যায়, দেশের অন্যান্য উপজেলার চেয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা অনেক কম। করোনা পরীক্ষার মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয় ২০৪৬ জনের। এর মধ্য আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৫৩ জন। সুস্থ হয় ২৪৯ জন এবং মৃত্যু বরণ করেন ৪ জন। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে কোন করোনা রোগী নেই বললেই চলে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহসান হাবীব জানান, আগামী মাসে আমরা তিনটি ক্যাম্পেইন করে বুস্টার ডোজ দিবো। এতে আমাদের টিকা গ্রহনকারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। সেই সাথে জামালপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি টিকা প্রদানকরী স¦াস্থ্য কমপ্লেক্স হিসাবে আবারও প্রথম স্থান অধিকার করবে বলে আশা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ