পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও শাওনের মৃত্যুর প্রতিবাদে রাজধানীর ১৬টি স্থানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে ৬ নম্বর সেকশন বাজারের পশ্চিম পাশে মুকুল ফৌজ মাঠে সমাবেশের প্রস্তুতি নেয় দলটির নেতাকর্মীরা। অনুমতি নিয়ে সেখানে সমাবেশের মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করে বিএনপি, মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলের দিকে আসতে শুরু করে দলের নেতাকর্মীরা। কিন্তু সমাবেশ শুরুর আগেই বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। বিএনপি নেতাকর্মীরাও পাল্টা ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এসময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় বিএনপির অন্তত ৬১ জন আহত হয়েছেন এবং পুলিশ ৮ জনকে বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ২টার পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা খÐ খÐ মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলের দিকে আসতে শুরু করেন। এসময় তাদেরকে বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। একই সময়ে সমাবেশের জন্য মঞ্চ তৈরি করা হলে সেটিও ভেঙে দেয়া হয়। এসময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে আবার তারা সঙ্ঘটিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায় এবং কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। জবাবে নেতাকর্মীরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এসময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হটিয়ে দিয়ে সমাবেশস্থলে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। তারা ওই এলাকায় লাঠিসোটা নিয়ে শোডাউন দিতে থাকে। বিকেল ৪টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ৬১ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং পুলিশ ৮ জনকে আট করেছে। আহতরা হলেন- আদাবর থানা মহিলা দলের রাজীয়া বেগম, বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের সিয়াম মুত্তাকিন, মো. অভী, মো. জনি, তেজগাঁও কলেজের সেলিম রেজা, ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম, মাসুদ করিম মোল্লা, মো. ইমরান, সিরাজ মিয়া, ৯নং ওয়ার্ডের ইমন মুন্সি, ৩১ নং ওয়ার্ডের হুমায়ুন কবির, মো. স্বপন, আদাবর থানার মো. নাসু, ১৩নং ওয়ার্ডের মো. ইউনুস মিয়া সুজন, মো. রিপন, ভাষাণটেক থানা যুবদলের মোরশেদ আলম, ছাত্রদলের সাকিল আহমেদ, রনি, বিএনপির ইমান হোসেন কিরণ, রূপনগর থানা বিএনপির মো. আ. কাদের সেন্টু, মো. মানিক মিয়া, আরিফ হোসেন, হাসান, সালাহ উদ্দিন মোল্লা সিপু, ছাত্রদলের মেহেদী হাসান, তুরাগ থানা বিএনপির আমান উল্লাহ ভূইয়া, ১৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির মো. নাসির, বিমানবন্দর থানার মো. জাহেদুল ইসলাম, অনিক, সাব্বির, ৯৪নং ওয়ার্ড বিএনপির মো. মনির, টিপু সুলতান, মো. জমসের, মোখলেছ, মো. হুমায়ুন কবির, ৯২নং ওয়ার্ড বিএনপির নবী হোসেন, পশ্চিম ছাত্রদলের জুয়েল হোসেন রাজ, রূপনগর সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু, থান বিএনপির নাসিম, রুবেল, হেদায়েত, শাওন, জামান, ইয়াসিন, ফরিদ জমির, ইমরান, মিজান, জাকির, ইস্টার্ন হাউজিং সভাপতি কামাল, ছাত্রদলের সভাপতি মনিুরুজ্জামান রনি, খিলক্ষেত বিএনপির মো. জাফর ইকবাল, আশরাফুল হোসেন তানবীর, লোকমান, কবির, ৯৫নং ওয়ার্ড বিএনপির রহমান, ভাষাণটেকের বিপ্লব চৌধুরী, ক্যান্টনমেন্টের ফেরদৌস আহম্মেদ, ৫নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের মানিক সিরাজ, পল্লবী থানা বিএনপির বাপ্পী।
এছাড়া আটককৃতরা হলেন- রূপনগর থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন জসীম, ৯২নং ওয়ার্ডের সাবেক আহŸায়ক নজরুল ইসলাম নজু, দুয়ারীপাড়ার সাবেক সভাপতি সালাউদ্দিন খান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম আকতার হোসেন, তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের মামুন মজুমদার, জসিম রানা, এমএম হাবিব, রূপনগর থানা ছাত্রদলের মেহেদী হাসান।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, পুলিশের মিরপুর জোনের উপকমিশনার (ডিসি) তিনটি জায়গা পরিবর্তন করে মিরপুর-৬ নম্বর কাঁচাবাজারের পাশে মুকুল ফৌজ মাঠে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে সমাবেশের মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালান।
তিনি বলেন, শুরুতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলাকারীদের প্রতিরোধের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে থাকে।
পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহŸায়ক আমান উল্লাহ আমান। তিনি বলেন, অনুমতি নিয়েই আমরা সমাবেশ করে গিয়েছি। কিন্তু যখন আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসতে শুরু করে তখনই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। বিএনপি প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যখন পিছু হটে ঠিক সেই সময় পুলিশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পক্ষ নেয়।
আমান বলেন, পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীরা যেদিক থেকে এসেছে সেদিকেই টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। এতে আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা ডিসিকে আগেই বলেছিলাম- শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবো। কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যে কর্মসূচি শুরু করেছি। এটা চলবে। যেকোনো প্রতিরোধ আমরা প্রতিহত করবো।
এদিকে, হামলার প্রতিবাদে বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমান উল্লাহ আমান, আমিনুল হক, নাজিম উদ্দিন আলম, রওনকুল ইসলাম টিপুসহ নেতাকর্মীরা। মিরপুর ১৩ নম্বর সেক্টরে বিক্ষোভ করেন তারা।
এখন পর্যন্ত রাজধানীর ৪টি স্থানে সমাবেশ হয়েছে। এর মধ্যে মিরপুরের আগে উত্তরার কামপাড়া সমাবেশেও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।