বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাকে দলীয় সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার ঘটনায় রংপুরে নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্তি ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। অব্যাহতি দেয়ার দিন থেকেই রংপুরে জাপা নেতাকর্মীরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত বুধবার রাঙ্গাকে দলীয় পদ -পদবি থেকে অব্যাহতি দেয়ার ঘোষণা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই রংপুর মহানগরীতে জাপা নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। দিনভর আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকে লোকমুখে। বিষয়টি সাধারণ মানুষের মুখে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়ে থাকে। তাকে বহিস্কারের প্রতিবাদে রাতে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের কুশপুত্তলিকা পোড়ায় রাঙ্গাপন্থীরা। গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাঙ্গার নির্বাচনী এলাকা (রংপুর -১) গঙ্গাচড়া জিরো পয়েন্টে এবং রংপুর নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়ে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শেষে জিএম কাদেরের কুশপুত্তলিকা পোড়ায় মোটর মালিক, শ্রমিক ও দলীয় একাংশের নেতাকর্মীরা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় থেকে জেলা মোটর মালিক সমিতির নেতা ও জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নানের নেতৃৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এতে মোটর মালিক ও শ্রমিকরা ছাড়াও জাতীয় পার্টির রাঙ্গাপন্থীরা অংশ নেন। মিছিলটি প্রেসক্লাব চত্বর হয়ে জাহাজ কোম্পানি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বিক্ষুব্ধ রাঙ্গাপন্থীরা পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের কুশপুত্তলিকায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা মসিউর রহমান রাঙ্গাকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলে পুনর্বহাল করা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন। পরে মিছিল নিয়ে ফেরার পথে জি এম কাদেরবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। এ সময় দৈনিক দাবানলের সামনে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় গত বুধবার রাত থেকে নগরীতে জাপার দুই গ্রুপের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দলীয় চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে পরে রাত ১২ টার দিকে নগরীতে রাঙ্গারও কুশপুত্তলিকা পোড়ায় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
রাঙ্গাকে বহিস্কারের বিষয়ে জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি ও মোটর মালিক সমিতির নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, মসিউর রহমান রাঙ্গাকে দলে ফিরিয়ে নিতে হবে। তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। তার অব্যাহতি আমরা মানছি না। এর তীব্র্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে রাঙ্গাকে দলে বহাল করতে হবে। তা নাহলে আগামীকাল থেকে কঠোর আন্দোলন হবে।
অন্যদিকে, গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, রংপুর সিটি কর্পোরেশন মেয়র ও মহানগরের সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, রাঙ্গা সাহেব পার্টির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন তা ঠিক করেননি। সবার আগে দল বড়। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ কোনোদিন সুফল ভোগ করতে পারেনি। পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের রংপুরে এলে প্রয়োজনে দলের নেতাকর্মীরা তাকে সাপোর্ট দেবেন।
মেয়র আরও বলেন, দলের ভেতরে থেকে দলের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না। দলের স্বার্থে চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাতে আমরা একমত। তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সময় হলে আবার দলে ফিরে আসার সুযোগ হতে পারে। তিনি দলের স্বার্থে রাঙ্গাকে উত্তেজিত না হয়ে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।