Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনজিওগ্রাম ও সিটি স্ক্যান মেশিন সচল হল

অনেক ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট অচল জনবল সংকটেও রোগ নির্ণয় ব্যাহত হচ্ছে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:২৮ এএম

বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদ রোগীদের চিকিৎসায় এনজিওগ্রাম এবং ¯œায়ু রোগীদের রোগ নির্ণয়ে সিটি স্ক্যান মেশিন দুটি দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরে চালু করা সম্ভব হয়েছে। খুব শিঘ্রই এ দুটি মেশিন দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম চালু হচ্ছে বলে হাসপাতালের পরিচালক জানিয়েছেন। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক রোগী সরকারী এ হাসপাতালটিতে কিছুটা হলেও চিকিৎসা সহায়তা পাবেন বলে আশা করছেন সাধারন মানুষ।
দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত সরকারী চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান, বরিশালের শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতে সিটি স্ক্যান, এমআরআই, কোবাল্ট-৬০ মেশিন ছাড়াও সেল সিরাম সেপারেটর এবং একাধিক আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন ও ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনগুলো বিকল ছিল দীর্ঘদিন। হাসপাতাল কতৃপক্ষ অনেক দিন ধরেই এসব মেশিন মেরামত বা পূণর্বাশন সহ নতুন মেশিন সরবারহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দেন দরবার করে আসছে।
কিন্তু এতদিন সেসব প্রচেষ্টা খুব একটা ফলপ্রসু না হলেও অতি সম্প্রতি হাসপাতালটির বিকল এনজিওগ্রাম এবং সিটি স্ক্যান মেশিন দুটি সচল হয়েছে। তবে অন্যান্য মেশিনগুলো কবে নাগাদ সচল বা পূণর্বহাল হবে, সে বিষয়ে আপতত কতৃপক্ষ কিছু বলতে না পারলেও ‘প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে’ বলে জানিয়েছেন পরিচালক সহ দায়িত্বশীল মহল।
তবে সদ্য মেরামত হওয়া সিটি স্ক্যান ও এনজিওগ্রাম মেশিন দুটি সচল হলেও তার সাহাজ্যে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালু করতে আরো কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানগন জানিয়েছেন, এসব মেশিন সচল হলেও রোগীদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সহায়তায় আরো কিছু অক্সিলরী সরঞ্জাম সংযোজন করে অন্তত ৩মাস রোগীদের পরিপূর্ণ সেবা প্রদানের পরেই তারা পরিপূর্ণ আস্থা রাখতে পারবেন। তার আগে মেরামতকারী প্রতিষ্ঠানকে কোন ছাড়পত্র দেয়া হবে না। এ দুটি স্পর্ষকাতর মেশিন সচল হওয়ায় সরকারী এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা কিছুটা হলেও উন্নত ও সহজতর হবে বলে কতৃপক্ষ আশা করছেন।
এক হাজার শয্যার এ হাসপাতালে ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুপমেন্ট ও জনবল সংকট সুষ্ঠু চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমে সব চেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে আছে। এক হাজার শয্যার এ হাসপাতালটিতে এখনো ৫শ শয্যার জনবল মঞ্জুরী থাকলেও তার অর্ধেকেরও বেশী শূণ্য। অথচ দৈনিক গড়ে ১৮শ রোগী চিকিৎসাধীন থাকছে। এর বাইরে হাসপাতালটির আউটডোরেও প্রতিদিন আরো প্রায় দেড় হাজার রোগীর ব্যাবেস্থাপত্র দেন চিকিৎসকগন।
চিকিৎসক থেকে শুরু করে রেডিওলজিস্ট, রেডিওথেরাপিস্ট ও ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট-এর অনেক পদ দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য থাকায় হাসপাতালটিতে ভর্তিকৃত রোগীদের দূর্ভোগের সীমা নেই। চিকিৎসকগনও অনেকটা অসহায়। বিশেষকরে গরীব ও অসহায় রোগীরা বাইরে থেকে ক্লিনিক্যাল পরিক্ষা সহ এক্স-রে করাতে না পাড়লে দিনের পর দিন হাসপাতালের বেড বা মেঝেতে অবস্থান করতে গিয়ে আরো দূর্বল হয়ে পড়ছেন।
হাসপাতালটির প্যাথলজি বিভাগে ৪ জন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট পদের বিপরিতে আছেন দু জন। ১০ জন টেকনিশিয়ানের ৪ জনই অন্য হাসপাতালে প্রেশনে নিযুক্ত। ফলে বিশাল এ হাসপাতালটিতে রোগ নির্ণয় কার্যক্রমে যথেষ্ঠ বিপত্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪শ রোগীর রক্ত সহ বিভিন্ন নমুনা পরিক্ষার জন্য গ্রহন করতে হলেও ১জন সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট ও দুজন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট-এর পক্ষে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত কাজ করেও এ বিপুল সংখ্যক নমুনা পরিক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
হাসপাতালটির রেডিও এ্যন্ড ইমেজিং বিভাগে ১৫টি এক্স-রে মেশিনের ১৩টি বিকল। সচল দুটি এক্স-রে মেশিনের সাহায্যে হাসপাতালের ইনডোর ও আউট ডোরের ১০ভাগ রোগীরও এক্স-রে করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে সিংহভাগ রোগীকেই হাসপাতালের বাইরে এক্স-রে করাতে হচ্ছে । ৪টি পর্টেবল এক্স-রে মেশিনের দুটি শিশু বিভাগ ও হৃদরোগ বিভাগে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এখানেও রেডিওলজিস্ট থেকে শুরু করে অন্যসব পদেও জনবল সংকট ব্যপক। হাসপাতালটির রেডিওলজি, জেনারেল রেডিওলজি ও নিউরো রেডিওলজি বিভাগে অধ্যাপকের পদ শূণ্য। দুজন সহযোগী অধ্যাপকের মধ্যে একজন দায়িত্বে থাকলেও ৩জন সহকারী অধ্যপকের বিপরিতে কর্মরত একজন।
এসব ব্যাপারে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা এ হাসপাতালের অচল সব মেশিন সচল করা ছাড়াও পরিবর্তনেরও চেষ্টা করছি। অতি সম্প্রতি এখানে নতুন আল্ট্রাসোনো গ্রাম মেশিন ও ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন সহ কয়েকটি অত্যাধুনিক রোগ নির্ণয় ইলেট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট স্থাপন করা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরেই এমআরআই মেশিন সহ আরো কিছু অত্যাধুনিক মেডিকেল ইকুইপমেন্ট আসবে বলেও আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ