বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা ভূমি অফিসটি যেন ঘুষের জন্য উন্মুক্ত! অপেন ভাবে চলে ঘুষ বাণিজ্য। ঘুষ দিলেই কাজ, না দিলে পড়তে হবে বিপাকে। অনিয়ম-দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্যের আখড়ায় পরিণত হয়েছে এই ভূমি অফিস। বলা যায় ঘুষের রাম রাজত্ব কায়েম হচ্ছে উপজেলা সহকারী কমিশনার এ (ভূমি) অফিসে।
অপেন ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে, ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এডিএম রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এডিএম রুহুল আমিন তিনি তার অফিসের চেয়ারে বসে অনেকটা খোলামেলা ভাবে জনৈক এক নারীর কাছ থেকে ঘুষের টাকা গ্রহণ করেন। ভিডিওটি বিভিন্ন লোকজনের কাছে ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে হয়রানিসহ এখানে ঘুষের রাম-রাজত্ব কায়েম করে আসছেন। ঘুষ গ্রহণের ভিডিও হাতে হাতে প্রকাশ হওয়ার পর ঘুষখোরকে বাঁচাতে তাদের দালালরা বেশ তৎপর হয়ে উঠেছেন। ভূমি অফিসের ওই সার্ভেয়ার রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে ঘুষ ক্যালেঙ্কারীসহ অনিয়ম-দুর্নীতির নানান অভিযোগ থাকলেও রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। জানা যায়, উপজেলার ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের ব্রাক্ষনঝুলিয়া গ্রামের আজিজুর রহমানের ব্রাক্ষনঝুলিয়া মৌজায় ০.১৮ শতক জমি তার দখলে রয়েছে। দখল থাকার পরেও গ্রামের একটি পক্ষ জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালায়। যে কারণে ওই জমি নিয়ে একই গ্রামের ইছবর আলীর পুত্র সিরাজ উদ্দিন গংদের বিরুদ্ধে আদালতে বিবিধ মামলা দায়ের করেন প্রবাসী আজিজুর রহমানের স্ত্রী জহুরা বেগম। এ মামলার প্রেক্ষিতে গত ২৭ জুলাই সুনামগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত থেকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি)›র কাছে নির্দেশ আসে। পরে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এডিএম রুহুল আমিন। বাদীনির বাড়ি ঘর, জায়গা-জমি দীর্ঘদিন ধরে তার নিজ ভোগ দখলে থাকলেও ঘুষ না দিলে প্রতিবেদন তার বিপক্ষে দেবেন এমন ভয়-ভীতি দেখান এডিএম রুহুল আমীন। পরে বাধ্য হয়ে সার্ভেয়ারকে তিন দফায় দাবিকৃত ২৫ হাজার টাকা দেন ওই ভুক্তভোগী নারী। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর উপজেলা ভূমি অফিসের যমুনা কক্ষে সার্ভেয়ার এডিএম রুহুল আমীন ভুক্তভোগী ওই নারীর কাছ থেকে ঘুষের ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করে নিজ ড্রয়ারে রাখছেন। ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে আবারো ঘুষের ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করে নিজ পকেটস্থ করেন সার্ভেয়ার রুহুল আমীন। এসময় নারীর কন্ঠে শুনা যায় এখানে ১০হাজার টাকা আছে, বাকি ৫ হাজার টাকা আগামী কালকে দেব।
উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার রুহুল আমিন ছাড়াও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে এখানের অফিস সহকারী সত্যবাবু, পিয়ন, ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোর তহসিলদারদের বিরুদ্ধে। নামজারি, মিস কেস, মিস আপিল, সার্ভে রিপোর্ট, চান্দিনা ভিটা, খাস জমি বন্দবস্তি, ভিপি খাজনাসহ সবকিছুতেই ঘুষ চলে। ঘুষ ছাড়া কিছুই হয়না। রয়েছে তাদের দালাল চক্র। খুব বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। ভিডিও দৃশ্যটি তার স্বীকার করলেও টাকা বা ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেন, অভিযুক্ত সার্ভেয়ার এডিএম রুহুল আমিন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসলাম উদ্দিন জানান, ভিডিওটি নজরে আসার সাথে সাথে তাৎক্ষনিক সার্ভেয়ার রুহুল আমিনকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্ত পূর্বক তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।