বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোরের চৌগাছায় বলুহ মেলা মঙ্গলবার ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। চলবে ১০ দিন আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। যশোর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে সোমবার রাতে এই অনুমতিপত্র দেওয়া হয়েছে। মেলার অনুমতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা।
মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইউপি সদস্য মনিরজ্জামান মিলন জানান, ঐতিহ্যবাহী বলুহ মেলা কেবল মাত্র এ জনপদের মানুষের মেলা নয়। দেশ ও দেশের বাইরে এ মেলার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। প্রতিবছর ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার এ মেলা শুরু হয়। মেলা শুরুর মাস খানিক আগে থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসতে শুরু করেন। কোন রকম প্রচার বা মাইকিং ছাড়াই ৭/৮ দিন আগে থেকে শুরু হয়ে যায় মেলা। চলে ১৫/২০ দিন। বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনার কারণে গত দুই বছর মেলা বসেনি। এবছর জাঁকজমক পূর্ণভাবে মেলা বসবে বলে এলাকাবাসীর প্রত্যাশা। হাজরাখানা গ্রামে নদের পশ্চিম তীরে উঁচু ঢিবিতে অবস্থিত এ অঞ্চলের বিখ্যাত পীর বলুহ দেওয়ান (র.) এই পীরের রওজা শরীফ। এ রওজা শরীফকে ঘিরে প্রতি বছর বাংলা সনের ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার শুরু হয় ওরশ ও মেলা।
যাকে ঘিরে এতো কিছু সেই পীর বলুহ দেওয়ান (রঃ) সম্পর্কে এলাকায় ব্যাপক জনশ্রুতি রয়েছে। বয়স্করা জানান, পীর বলুহ দেওয়ান (র.) এর জন্ম সাল বা তারিখ কারো জানা নেই। তবে তার জন্ম ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বড় ধোপাদি গ্রামে, তার পিতার নাম ছুটি বিশ্বাস। চরম দারিদ্রতার সংসারে জন্ম নেয়া বলুহ খুব ছোট বেলায় হাজরাখানা গ্রামে মামার বাড়িতে চলে আসেন। বলুহর মামারাও গরীব ছিলেন। তাই বলুহ মামার বাড়ীতে থেকে অন্যের বাড়িতে ও ক্ষেত খামারে কাজ করতেন। একদিন বাড়ি ওয়ালা বলুহকে বেদন বিলের মাঠে গরু চরাতে বলেন, বলুহ গরু মাঠে নিয়ে অন্যের ফসলের ক্ষেতে ছেড়ে গাছের নিচে বিশ্রাম করছিলো। ক্ষেত মালিক এসে গরুগুলো খোয়াড়ে নেয়ার জন্য রওনা হয়। বলুহ তখন গরু গুলো বক বানিয়ে গাছের উপর বসিয়ে রাখেন। একদিন খেজুরের গুড় জ্বালাতে বললে তিনি জ্বলন্ত চুলায় খড়ি না দিয়ে নিজের একটি পা ঢুকিয়ে দেন, এক দিন তাকে সরিষা মাড়ায় করতে বললে সরিষার গাদায় আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ছায় করে দেন। পরে তাকে বকা-ঝকা করলে তিনি ছায় বাতাসে উড়িয়ে সরিষা বের করে দেন। এ ধরনের অসংখ্য অলৌকিক কিংবদন্তি রয়েছে তাকে ঘিরে। যে কারণে তিনি পীর উপাধি পান। তার মৃত্যুর পর হাজরাখানা গ্রামে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে যুগযুগ ধরে বলুহর রওজাকেঘিরে বসে মেলা, যার নামকরণ করা হয় বলুহ মেলা।
এ বিষয়ে বলুহ মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজরাখানা গ্রামের বাসিন্দা ইউপি চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ১৭টি শর্ত সাপেক্ষে প্রশাসনের পক্ষ হতে মেলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। চলবে ১০দিন। এ বছর মেলায় কোন ধরনের অশ্লীলতা আমরা হতে দেব না। গ্রামসহ এলাকার সবাই মেলার অশ্লীলতা প্রতিহত করতে একাট্রা হয়েছি। ফলে এবার মেলার পরিবেশ নষ্ট হতে দেওয়া হবে না। মেলায় আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।