Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবৈধ যান নিয়ন্ত্রণহীন

মো. শওকত হোসেন, লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের এলজিইডির নির্মাণাধীন গ্রামীণ সড়ক ও মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ যানবাহন। পরিবহনে পন্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে টলী, নসিমন, করিমন, ভটভটির ব্যবহার এখন অহরহর দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে ও মাটি, বালু, ইটবহনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে এসব অনুমোদনবিহীন ট্রাক্টর (টলি), মাহেন্দ্রা এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত অবৈধ যান। এতে করে একদিকে নষ্ট হচ্ছে সড়ক, তেমনি সৃষ্টি হচ্ছে যানজট অন্যদিকে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। তবে প্রশাসনের কাছে এসব অনুমোদনহীন বালু ও ইটবাহী মাহেন্দ্রা, ট্রাক্টর এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল। অবৈধ এসব যানবাহনের বেশিরভাগ চালকের লাইসেন্স না থাকা এবং যানবাহনের যান্ত্রিক ক্রটিসহ নানা সমস্যায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। পাশাপাশি মালির অংক মোড়, ঘোলতলী বাসস্ট্যান্ডসহ ও বিভিন্ন বেইলিব্রিজে যানজট লেগেই থাকে। এসব যানবাহনের কারণে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, লৌহজং উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ ও সংস্কার করা হয় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়ক। এই পাকা সড়কগুলোর ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে অনুমোদনহীন বালু ও ইটবাহী মাহেন্দ্রা, ট্রাক্টর এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত গাড়ি। এতে করে সড়ক নির্মাণের কিছুদিন যেতে না যেতেই উঠ যায় কার্পেটিং এবং সৃষ্টি হয় খানাখন্দের। ফলে ভোগান্তিতে পরতে হয় উপজেলাগামী যাত্রী ও পথচারীদের।
সড়ক-মহাসড়কে কৃষি কাজের যন্ত্রাংশ দিয়ে কনভার্ট করে বানানো এ সব যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ হলেও স্থানীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় ও ট্রাফিক পুলিশ ম্যানেজ করে তা চলছে। এর ফলে এগুলোর চলাচল দিন দিন বাড়ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রলি চালকরা বলেন, এই যানবাহনই তাদের উপার্জনের একমাত্র উপায়। এই যানবাহন মহাসড়কে চলাচলের অনুমতি না থাকায় তাদের উভয় সঙ্কটের মধ্যে চলতে হচ্ছে। তারা আরও জানান, পুলিশকে টাকা দিয়ে তারা সড়কে গাড়ি চালানোর অনুমতি নিয়েছেন। চুক্তিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে তাদের ম্যানেজ করা হয়।
পথচারীরা জানান, এসব অবৈধ যানবাহনের কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় অন্যান্য যানবাহনগুলোকে। অবৈধ এই যানবাহনের চালকরা প্রশিক্ষিত না হওয়ায় ছোট-বড় দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে।
উপজেলার বেজগাঁও ইউনিয়নের রাসেল হোসেন ও মো. দেলোয়ার মোল্লা বলেন, মাটি, বালু ও ইট বহনের ট্রাক্টরের চাকায় কোটি কোটি টাকার সড়ক নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া মারাত্মক শব্দদূষণ ও ধুলাবালির কারণে সড়কসংলগ্ন বাড়িতে বাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এসব টলী গাড়ি বেপরোয়া গতিতে গ্রামের রাস্তায় চলাচলের কারণে ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যাওয়া আসার সময় আতংকের মধ্যে থাকে। তাই এইসব গাড়ির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই কর্তৃপক্ষের কাছে।
এ বিষয়ে মাওয়া হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ জিয়া বলেন, এ সকল অটোরিকশা, নসিমন, টলী যানবাহনগুলো মানুষের সুবিধার জন্য ফিডার রুটগুলোতে চলতে পারে, তবে হাইওয়েতে চলাচলের সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, কৃষি কাজের যন্ত্রাংশ দিয়ে কনভার্ট করে এসব যানবাহন (বিআরটিএ) অনুমোদিত না। অনুমোদন নেই এমন কিছু আরোও যানবাহন সড়কে চলাচল করছে। যেমন আটোরিকশা, নসিমন, মাহেন্দ্রা (টলী)সহ কিছু যানবাহন। অনিয়মের মধ্য চলাচল করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ