Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

যশোরে মুখ থুবড়ে পড়েছে বোরো ধান চাল সংগ্রহ অভিযান

সরকারিভাবে ধান ১৬% সংগ্রহ চালও ২ হাজার ৮শ’ মেট্রিক টন কম

যশোর ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

যশোরে সরকারিভাবে বোরো মৌসুমের ধান সংগ্রহ অভিযান চলতি বছর মুখ থুবড়ে পড়েছে। চাল সংগ্রহ প্রায় কাছাকাছি পেঁছালেও ধান সংগ্রহ হয়নি বললে চলে। চলতি মৌসুমে জেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৭২৮ মেট্রিক টন। সেখান্ েসংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ১২৪ মেট্রিক টন। ১৬ হাজার ৬০৪ মেট্রিক টন কম সংগ্রহ হয়েছে। মাত্র ১৬% ভাগ সংগ্রহ। আর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার ৭৫৫ মেট্রিক টন, সেখানে সংগ্রহ করা হয়েছে ২৪ হাজার ৯৫৬ মেট্রিক টন, প্রায় ৮৮% ভাগ সংগ্রহ। গত ২৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত চলে বোরো মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান।

জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জেলার ৮টি উপজেলার মধ্যে সদর, চৌগাছা, ঝিকরগাছা, শার্শা ও কেশবপুর উপজেলায় কৃষি অ্যাপের মাধ্যমে এবং অভয়নগর, মনিরামপুর ও বাঘারপাড়া উপজেলায় ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে ধান কেনা হয়েছে। এ সময়ে জেলার হাটবাজারে মোটা ধান ৯৯০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং চিকন ধান ১ হাজার ১৮০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। গুদামে ধানের নির্ধারিত দাম ১ হাজার ৮০ টাকা মণ। গুদামে ধান বিক্রি করা বেশ ঝামেলার। তা ছাড়া ধানের বাজার দর ও সরকার নির্ধারিত দাম প্রায় কাছাকাছি। চিকন ধানের দাম বেশি। গুদামে ধান পৌঁছে দিতে কৃষকের পরিবহন খরচ বেশি পড়ে, শ্রমও ব্যয় হয় বেশি। এ জন্য কৃষকেরা গুদামে ধান বিক্রি করতে চান না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোর কার্যালয় সূত্র জানায়, কৃষকদের একটি করে কৃষি কার্ড আছে। জেলায় কার্ডধারী কৃষকের ব্যাংকে ১০ টাকার হিসাব রয়েছে। ধান কেনার পর কৃষকের ব্যাংক হিসাবে টাকা দেওয়া হয়। কৃষক ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা তোলেন।

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রামের গ্রামের কৃষক নাজমুল আলম এবার ৫ বিঘা জমিতে জিরা মিনিকেট এবং রড-৩ ধান চাষ করে দেড়শ’ মণ ধান পেয়েছেন। নিজেদের খাওয়ার ৫০ মণ ধান রেখে অবশিষ্ট একশ মণ ধান তিনি ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, এবার সরকারি দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি। সরকারি গুদামে ধান দেওয়া অনেক ঝামেলার। আর্দ্রতার কথা বলে অনেক সময় ধান ফেরত দেওয়া হয়। এতে সমস্যায় পড়তে হয়। কিন্তু স্থানীয় বাজারে এসব ঝামেলা নেই। নগদ দামও পাওয়া যায়। এ জন্য সব ধান স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দিয়েছি।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দফতর সূত্র জানায়, চলতি বোরো সংগ্রহ মৌসুমে যশোর জেলায় কৃষকের কাছ থেকে ১৯ হাজার ৭২৮ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া জেলায় ২৭ হাজার ৭৫৫ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল থেকে ধান এবং গত ১২ মে থেকে চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয় এবং তা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলে। চাল সরবরাহের জন্য ২৫০ জন চালকলের মালিক চুক্তিবদ্ধ হন। চাল ৪০ টাকা ও ধান ২৭ টাকা কেজি দরে কেনা হয়েছে।

যশোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু বলেন, কৃষক স্থানীয় বাজারে ধান বিক্রি করার কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এতে তার পরিবহন ব্যয়, শ্রম ও সময় কম লাগে। তবে চুক্তিবদ্ধ চালকলের মালিকেরা ঠিকমতো চাল সরবরাহ না করায় চাল সংগ্রহ কিছুটা কম হয়েছে। যারা কম দিয়েছে তাদেরকে আমরা ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি ইস্যু করব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ