Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খানাখন্দ ও পানিবদ্ধতায় করুণ দশা

মানিকগঞ্জ পৌরসভার দুই কিলোমিটার সড়ক

শাহীন তারেক, মানিকগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

সামান্য বৃষ্টিতেই পানিতে পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয় মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বেউথা আন্দারমানিকের দুই কিলোমিটার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে। দুই মাস আগেই ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়েছে। সংস্কার করা হলেও প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কটিতে খানাখন্দের কারণে ২৫টি স্থানে বৃষ্টির পানিতে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ছোট-বড় মিলিয়ে খানাখন্দ রয়েছে শতাধিক।
সরেজমিনে জানা যায়, পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড, সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নসহ হরিরামপুর উপজেলার মানুষজন মানিকগঞ্জ শহরে যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ন সড়ক হচ্ছে বেউথা আন্দারমানিক সড়ক। সড়কটি বেউথা সেতুর থেকে শুরু হয়ে হরিরামপুর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে আন্দারমানিক মোড় পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়েছে। এই সড়কের উভয় পাশে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বসবাস। কালিগঙ্গা নদীর ওপর বেউথা সেতু ও মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বেউথা পর্যন্ত চার লেনের সড়ক এবং হেমায়েতপুর থেকে বেউথা পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন হওয়ার কারণে এই সড়কের গুরুত্ব বেড়ে যায় অনেক গুন। ঢাকার হেমায়েতপুর থেকে মানিকগঞ্জের বেউথা হয়ে এই সড়ক দিয়ে অল্প সময়ে পাটুরিয়া ঘাটে যাতায়াত করা যায়। কালিগঙ্গা নদীতে সেতু হওয়ার পর পৌর সভার ৮নং ওয়ার্ড ও নবগ্রাম ইউনিয়নের মানুষজন এবং হরিরামপুর উপজেলার মানুষজন এই সড়কের কারণে মানিকগঞ্জ শহরের দূরত্ব কমে যায় প্রায় ৭ কিলোমিটার।
গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুযোগি হওয়ার কারণে মাত্র দুই মাস আগে পৌরসভা থেকে ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়। কিন্তু সংস্কার করা হলেও সড়কটি সেই আগের অবস্থায় থেকে বেশি খারাপ হয়ে গেছে।
ট্রাক ড্রাইভার আব্দুর রহীম জানান, রাস্তায় বড় বড় গর্ত থাকায় গাড়ি চালানো খুবই কষ্টকর। এতে গাড়ির যন্ত্রাংশ ঘন ঘন নষ্ট হয়ে যায়। দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করা দরকার।
আন্দারমানিক গ্রামের ফুল চান জানান, পৌরসভা সৃষ্টির হওয়ার পর থেকে ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা কালিগঙ্গা নদীর কারণে বিচ্ছিন্ন ছিলো। নদীতে সেতু হওয়ার পর আমাদের এলাকায় উন্নয়নসহ গুরুত্ব বেড়ে যায়। বেউথা আন্দারমানিক সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কের খানাখন্দে জমা থাকা কাঁদাপানি গাড়ি চাকায় ছিটকে জামাকাপড় নষ্ট করে দেয়।
পৌরবাসী আশরাফ আলী জানান, সড়কের খানাখন্দের কারণে অসাবধান হলেই রিকশা, মোটরসাইকেল, হ্যালোবাইক উল্টে যায়। এছাড়া এই সড়ক দিয়ে বড় বড় গাড়ি চলার কারণে সংস্কার করা হলেও সড়কটি ভেঙে নতুন নতুন খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে।
হরিরামপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাশার সবুজ জানান, বেউথা আন্দারমানিক সড়কটি দিয়ে হরিরামপুরবাসী মানিকগঞ্জ শহরে যাতায়াত করেন। সড়কটি বর্তমান অবস্থা অত্যান্ত নাজুক। সম্প্রতি সংস্কার করা হলেও এর সুফল পাওয়া যায়নি। সড়কটি আরসিসিসহ পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবু নাহিদ জানান, বেউথা আন্দারমানিক সড়কটি চলাচলের অনুপযোগি হওয়ার কারণে পৌরসভা থেকে ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে তা সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত মালামালবাহী যানবাহন ও ভাড়ি যান চলাচলে সড়কটি পুনরায় ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। তিনি সড়কটি আরসিসিসহ ড্রেনেজ করার দাবি জানান।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী বেল্লাল হোসেন জানান, সড়কটি শুধু পৌরসভার মানুষজন চলাফেরা করে না। সড়কটি অন্য উপজেলার সাথে সংযোগ থাকায় এর গুরুত্ব অনেক বেশি। চলাচলের অনুপযোগি হওয়ার কারণে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ ইট দিয়ে সংস্কার করা হয়। পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে সড়কটি সংস্কার করা সম্ভব নয়। পৌরসভা থেকে সড়কটি চলাচলের উপযোগি করার জন্য দাতাসংস্থার সহযোগিতায় ড্রেনেজসহ বড় ধরণের প্রকল্প গ্রহন করার পরিকল্পনা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ