Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাত্র ২ দিনের ব্যবধানে বান্দরবানের মিয়ানমার সীমান্তে প্রচন্ড গুলাগুলি

আতংকিত এলাকাবাসী

বান্দরবান থেকে স্টাফ রিপোটার | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৫:৪৫ পিএম

মাত্র ২ দিনের ব্যবধানে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তুমব্রু এলাকার ওপারে মিয়ানমারে ফের প্রচন্ড গোলাগুলির শব্দে এ পারের বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সীমান্তের ওপারে প্রচন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। তুমব্রু বাজারের বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তে এসব গুলির শব্দে এলাকাবাসীর ঘুম ভেঙে যায়। । এছাড়া রেজু সীমান্তের কাছে হেলিকপ্টার টহল দিতে দেখা গেছে। সকাল থেকে সীমান্তে গুলির আওয়াজ শোনার পর সীমান্তের নো মেন্স ল্যান্ডের কাছাকাছি বসবাসরত রোহিঙ্গারা ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মিয়ানমার রাষ্ট্রদূত কে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানালে ও কোন কিছুর তোয়াক্কা করেছে না মিয়ানমারের জান্তা সরকার।

জানা যায়, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তুমব্রুর ওপারের মিয়ানমার অভ্যান্তরে তাদের বিদ্রোহি গোষ্টি আরাকান আর্মি (এএ) এর সাথে সেই দেশের সেনাবাহিনী-বিজিপির সাথে ভাবে প্রচন্ড লড়াই চলছে । এতে রক্তে রঞ্জিত হয়ে পড়েছে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চল। সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় সেখানের সীমান্ত সড়কে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।

সীমান্তে বসবাসরতরা মনে করেন, এসব ঘটনা ঘটতে থাকলে আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সীমান্তে বিজিবির তৎপরতার বহুগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

সীমান্তের ওপারের সূত্রগুলো জানিয়েছে, মিয়ানমার সরকারের সীমান্তরক্ষী, সেনা বাহিনী ও পুলিশ অমানবিক আচরণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর। আর এদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে কেউ কেউ ধারণা করছেন এই ঘটনার সূত্রধরে ফের ওই দেশে নতুন ভাবে রোহিঙ্গাবিরোধী রক্তাক্ত অভিযানের আশঙ্কা করছে।

বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী মিয়ানমারে সরকারী বাহিনী ও আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যকার লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ফলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবির সদস্যরা সীমান্ত টহল জোরদার করায় রোহিঙ্গাদের পক্ষে সহজে অনুপ্রবেশ সম্ভব হয়ে উঠছে না। গোলাগুলির আওয়াজের ভয়ে কিছু কিছু রোহিঙ্গা পরিবার বাঁচার তাগিদে তারা পাহাড়ের গহীন অরণ্যে আশ্রয় নিয়েছে।

গত দু,সাপ্তাহ ধরে শুরু হওয়া দু’পক্ষের ওই হামলায় পুলিশ- সেনাসহ আরাকান আর্মি কয়েক শতাধিক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। রাখাইনে মংডু, বুচিদং, ওয়ালি দং ও রাচিদং অঞ্চল গুলোতে বসবাসরত রোহিঙ্গারা ও স্থানীয় রাখাইনদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, প্রায় দু,সপ্তাহ ধরে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘুমধুমের তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, ফাত্রাঝিরি, রেজু,আমতলীসহ বিভিন্ন এলাকা এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এদিকে,সেনাবাহিনীর প্রকৌশল ব্যাটালিয়ন ২০ ইসিবির অধিনায়ক লে: কর্ণেল সৈয়দ রিয়াসত আজিম জানিয়েছেন সীমান্ত উত্তেজনার কারনে গত ১৫ দিন যাবৎ সীমান্ত সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সড়কটির নির্মাণ কাজ ফের চালু হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস জানিয়েছেন সীমান্তে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বরাবর সীমান্তের মিয়ানমার অভ্যান্তরে অজস্র গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরতরা।নিরাপত্তার কারনে সীমান্তের সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছে। সীমান্ত এলাকার পাহাড়গুলো থেকে গাছ, বাঁশ, লাকড়ি সংগ্রহকারী দিনমজুরেরা এখন সেখানে যেতে পারছেনা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ