Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় গ্রীডে গোলযোগে পশ্চিম জোনের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সঞ্চালন ও সরবরাহ বন্ধ রয়েছে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:৫৩ এএম | আপডেট : ৩:৩২ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

জাতীয় গ্রীডে বড় ধরনের গোলেযোগের কারণে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে দেশের পশ্চিম জোনের ২১ জেলায় একই সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও সরবারহ বন্ধ হয়ে যাবার পর মঙ্গলবার দিনভরই প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষ চরম দূর্ভোগে ছিলেন। ভাদ্রের দুঃসহ গরমে এ অঞ্চলের সব সরকারীÑবেসরকারী হাসপাতালগুলোতে পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ হয়ে যায়। বিপর্যস্ত হয়ে পরে করোনা ভ্যাকসিন সহ ইপিআই কার্যক্রমের টিকা প্রদান। এমনকি বিদ্যুৎ না থাকায় এসব ভ্যাকসিনের কার্যকরিতা বিনষ্টেরও আশংকা করছেন অনেকে। সবগুলো হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অস্ত্রপচারও বন্ধ ছিল দিনের বেশীরভাগ সময়।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে আকষ্মিকভাবেই দেশের পূর্বাংশের সাথে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার বিদ্যুৎ সঞ্চালনকারী ইষ্টÑওয়েষ্ট ইন্টারকানেক্টর সহ ওয়েষ্ট জোনের সবগুলো গ্রীড লাইন বন্ধ হয়ে যায়। সাথে সাথে দক্ষিণাঞ্চলে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের ২টি ইউনিট ছাড়াও ২২৫ মেগাওয়াটোর ভোলা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বরিশাল ও পাটুয়াখালীর সামিট পাওয়ার ও ইউনাইটেড পাওয়ার সহ গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরে পিডিবি’র ১১০ মেগাওয়াটের দুটি এবং মোল্লারহাটে নর্থÑওয়েষ্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর আরো ১টি ইউনিটও একযোগে বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি খুলনা ও ভোড়ামাড়ার সব পাওয়ার স্টেশনগুলিও একই সাথে ট্রিপ করে।
বিকেল পর্যন্ত পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী বা ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর কেউই গোলযোগের সঠিক কারণ বলতে না পারলেও যেকোন ট্রান্সমিশন লাইনের ত্রুটি কারণেই এ বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক দায়িত্বশীল সূত্র। তবে এ গোলযোগের কারণে বরিশাল ও খুলনা বিভাগ সহ বৃহত্বর ফরিদপুর অঞ্চলের ২১টি জেলার পশ্চিম জোনের বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরন ব্যবস্থা সকাল ৯টা ্েরথকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। পাওয়ার গ্রীডের বরিশাল অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, গোলযোগের সঠিক কারণ জানতে আরো অপেক্ষা করতে হবে, তবে আমরা দিনভর চেষ্টা করে দুপুরের পড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও সরবারহ ব্যাবস্থা পুণঃরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তার মতে, সকাল সোয়া ১১টার মধ্যে পশ্চিম জোনের একটি সঞ্চালন লাইন চালুর পরে পর্যায়ক্রমে উৎপাদন কেন্দ্রগুলোও ফিরিয়ে আনতে দুপুর গড়িয়ে গেছে
তবে ওজোপাডিকোর সূত্রের মতে, সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বরিশাল গ্রীড সাব-স্টেশন থেকে ৩৩ কেভী সাব-স্টেশনে ১শ মেগাওয়ঢাট চাহিদার বিপরিতে মাত্র ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রহন করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ অতি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবারহ করা হয়। পাশাপাশি গ্রীড থেকে বিদ্যুৎ সংগ্রহ করে বরিশালে সামিট পাওয়ারের ১১০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করতে দুপুর ২টা গড়িয়ে যায়। পাশাপাশি পটুয়াখালীর ইউনাইটেড পাওয়ারের দেড়শ মেগাওয়াটের উৎপাদন কেন্দ্রটিও দুপুর থেকে পর্যায়ক্রমে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হলে বিকেল নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে।
তবে দেশের অন্যতম বৃহত পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট ছাড়াও ভোলার ২২৫ মেগাওয়াটের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দুপুর ৩টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চালু করা সম্ভব হয়নি। সন্ধা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে এসব তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হবার কথা জানিয়েছেন দায়িত্বশীল সূত্র। ফলে মধ্য রাত থেকে পশ্চিম জোনের ২১টি জেলায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবার আশা করছে পিজসিবি এবং ওজোপাডিকো’র দায়িত্বশীল মহল। পাশাপাাশি ইষ্ট-ওয়েষ্ট ইন্টারকানেক্টর চালু করে জাতীয় গ্রীড থেকে বিদ্যুৎ গ্রহনেরও চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ