পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই সরকারকে অবশ্যই সরে যেতে হবে এবং নিরপেক্ষ একটা তত্ত্বাধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। একইসাথে একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এই লক্ষ্যেই আমরা এগুচ্ছি। আমাদের আন্দোলনের কর্মসূচি চলতেই থাকবে। ১০ তারিখ পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি আছে সারা দেশে। এরপর আবার নতুন কর্মসূচি জানাবো, এই আন্দোলন চলবে চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত।
গতকাল রোববার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় বিএনপি মহাসচিব গত ২২ আগস্ট থেকে সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের দমনপীড়নের চিত্র তুলে ধরেন।
বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম গঠন করে আন্দোলনকে বেগবান করার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, এই বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আমাদের আলোচনা এখনো চলছে। দাবিগুলো, ন্যূনতম যে কর্মসূচি সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলছি। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে এটাকে চূড়ান্ত করে আমরা জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।
গত ২২ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশ বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, নরসিংদী, ঢাকা, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, লক্ষীপুর, যশোর, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, খুলনা, বাগেরহাট, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, জামালপুর ও ময়মনসিংহে দলীয় কর্মসূচি পালনের সময়ে ক্ষমমতাসীন দল ও পুলিশী হামলার ঘটনায় হতাহত ও গ্রেফাতার তালিকা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, সারাদেশে নিহত হয়েছে তিনজন, আহত হয়েছে ২ হাজারের অধিক নেতা-কর্মী। গ্রেফতারের সংখ্যা ২শ জনের অধিক। সারাদেশে নাম উল্লেখ করে আসামী করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৮১ জনের অধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এবং অজ্ঞাত আসামী প্রায় ২০ হাজার। সারাদেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে ২০/২৫টি স্থানে ও বাড়িঘর, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে ৫০টি স্থানে।
মির্জা ফখরুল বলেন, কর্তৃত্ববাদী গণবিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষদের হত্যা, গ্রেফতারের যে অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে তা বন্ধের আহবান জানাচ্ছি। যারা নিহত হয়েছে তাদের নিরপেক্ষ তদন্ত করে হত্যাকারী ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানাচ্ছি। হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সরকার যদি অশুভ তৎপরতা বন্ধ না করে তাহলে জনগণের ঐক্যের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা ক্রমান্বয়ে গণবিস্ফোরণে পরিণত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো ছলের অভাব নেই। ওরা প্রতিমুহূর্তে ছল তৈরি করে এবং আন্দোলনকে বিপথে পরিচালিত করে, গণতন্ত্রকে ধবংস করে, এগুলো তাদের একটা কমন ব্যাপার। আমি সব সময় আপনাদের বলি, আওয়ামী লীগের বডি কেমেস্ট্রিতে আছে সন্ত্রাস। সন্ত্রাসে তাদের জন্ম, সন্ত্রাস দিয়ে তারা রাজনীতি করে এবং সন্ত্রাস দিয়ে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, মাঠে হাজার হাজার মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, প্রতিবাদ করছে এটাতে তাদের (সরকার) মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমি প্রতিবাদ করছি যেকোনো বিষয়ে। আপনি আমাকে গুলি করে দেবেন। এর থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘন কি হতে পারে।
নারায়ণগঞ্জে মামলা দায়ের: মির্জা ফখরুল বলেন, যুবদল কর্মী শাওন হত্যা মামলা আমরা দায়ের করেছি। আমাদের দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের নেতৃত্বে ২২ জনকে আসামী করে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা প্রত্যেক খুন-জখম-হত্যার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো। একদিকে রাজপথে আন্দোলন করছি। এটাকে আরো বেগবান করব। রাজপথের আন্দোলনে অলরেডি জনগণ সম্পৃক্ত হচ্ছে-এটাতেই আওয়ামী লীগের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। জনসমুদ্র দেখে তারা ঘাবড়ে গেছে, ভয় পেয়েছে। এজন্য তারা পাল্টা ভয় দেখাতে শুরু করেছে।
মিয়ানমার সীমান্তে মটার প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটা অনির্বাচিত সরকার দিয়ে এসব হয় না। যারা নির্বাচিত না, যাদের পিপলস সাপোর্ট নেই তাদের তো শক্তি থাকে না। এই সরকারের তো কোনো শক্তি নেই। সে টিকে আছে অন্যদের শক্তিতে। যে কারণে তার নিজের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে তার যে ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন সেই ভূমিকা সে নিতে পারে না। ওই বিদেশীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেটা আমি সব সময় বলি একটা নতজানু পররাষ্ট্র নীতি-এটা ছাড়া সে টিকেও থাকবে না। সেজন্য ওটাই সে করে। এই ঘটনার যেভাবে প্রতিবাদ হওয়া উচিত ছিলো, যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার ছিলো। এটা সেকেন্ড টাইম হলো। এখন তারা (সরকার) যেটা করবে অ্যাম্বেসেডরকে ডেকে বলবে। পরে বলবে যে শক্ত ভাষায় তাকে বলা হয়েছে।।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সমস্যার সমাধান এমনিতে হবে না। মিয়ানমারের সাথে সমস্যার সমাধান করতে হলে তার ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করতে হবে। রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত নেয়ার জন্য তাকে একটা আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এই আন্তর্জাতিক সৃষ্টির জন্য সবচেয়ে যেটা প্রয়োজন হেড অব গর্ভামেন্ট তাকেই বিভিন্ন দেশে যেতে হবে এবং যারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্পর্ক আছে ভারত ও চীন এই দুইটা দেশকে কনভিনস করতে হবে যে, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য। এটা প্রথম কথা। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে যে, শক্তি অর্জন করতে হলে যে এদিকে মটার মারলে ওদিকেও যাতে মটার যায়। সে ব্যবস্থা অবশ্যেই তাকে করতে হবে।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।