Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাল সার্টিফিকেট দিয়ে তিনি প্রধান শিক্ষক!

যশোরের শার্শা সরকারি পাইলট মডেল স্কুল

মহসিন মিলন, বেনাপোল থেকে : | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

যশোরের ঐতিহ্যবাহী শার্শা সরকারি পাইলট মডলে মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি করা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের ২৫ জন শিক্ষক ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ৩ বছরের জন্য বহিস্কার ও ১৫ দিনের জেল দেওয়া হলেও তিনি বহাল তবিয়তে স্কুলেই রয়েছেন।
শার্শা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন তোতা জানান, সরকার জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করলেও প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন কৌশলে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি আদায় করেন। অন্যদিকে স্কুলের নির্মাণ কাজের বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে নিজের বাড়ি বানিয়ে ধরা পড়েছেন।
তাছাড়া বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে লাখ লাখ টাকা নিজের পকেটে ঢুকানোসহ বই ও পরীক্ষার খাতা বিক্রির সুস্পস্ট অভিযোগ করা হয়েছে শিক্ষাবোর্ডে। তদন্ত কমিটি সাটিফিকেট জাল ও দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। এসব ঘটনায় হতাশা ও ক্ষোভ বেড়েছে অভিভাবক ও শিক্ষর্থীদের মাঝে।
স্কুলে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হচ্ছে দুই হাজার। প্রতিবছর জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা শতকরা ৭০ শতাংশ। শার্শা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান জানান, বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক বিগত দিনে পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব থাকা অবস্থায় বিলম্বে খাতা দেওয়া ও খাতা বিক্রির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সবচেয়ে অবাক বিষয় প্রধান শিক্ষকই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোবাইল ফোন চুরি করেন। আর সে ঘটনা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লেও তিনি কি ভাবে এবং কোন খুঁটির জোরে রয়েছেন তা নিয়ে সবার মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন তৎকালিন শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্র্মকর্তা এটিএম শরিফুল আলম। প্রধান শিক্ষক ১৯৮৫ সালে এসএসসি ও ৭ বছর পর এইচএসসি পাশ করনে। ৫ বছর বিরতির পর যশোর এমএম কলেজের নিয়মিত ছাত্র বলে দাবি করেন তদন্ত কমিটির কাছে। তদন্ত কর্মকর্তা এটিএম শরিফুল আলম জানান, প্রধান শিক্ষক ২০০৯ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দারুল এহসান বারিধারা ক্যাম্পাস থেকে ইংরেজিতে মার্স্টাস পাশ করেন বলে দাবি করেন। কিন্তু ওই সময় ইউজিসি শুধুমাত্র ধানমন্ডি ক্যাম্পাসকে অনুমোদন দিয়েছিল। বারিধারা ক্যম্পাসকে কোন অনুমোদন দেয়নি। বর্তমান শার্শা উপজলো নির্বাহী কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র পাল জানান, প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি ও সার্টিফিকেট জালিয়াতির একাধিক অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে সংশ্লষ্টি দফতরে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে অভিযোগ সম্পর্কে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, তার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয়। কোন ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততা নেই বলে তিনি দাবি করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ