বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অভয়নগরে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আবারও কাট পুড়িয়ে কয়লা বানানোর অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তির উপর। এতে ওই এলাকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। উপজেলার সিদ্দিপাশা এলাকায় প্রতিনিয়ত কাঠ পুড়িয়ে কয়লার ব্যবসা করে যাচ্ছে। তারা ট্রলিতে করে কাঠ নিয়ে শতাধিক মাটির কাঁচা চুল্লি তৈরি করে কয়লা বানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় করছে।
সরেজমিনে, দেখা গেছে গাছপালা কেটে চুল্লির মধ্যে জ্বালানো হচ্ছে। এক পাশ দিয়ে ছোট কয়লা বের করা হচ্ছে। অন্যপাশে শুকানো হচ্ছে। বাকি জায়গায় বস্তা ভর্তি করে রাখা হয়েছে। চুল্লির মধ্যে সারিবদ্ধভাবে কাঠ সাজিয়ে চুল্লির খোলা মুখ দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়। প্রতিটি চুল্লিতে প্রতিবার ২৫০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। কাঠ পুড়ে কয়লা হয়ে গেলে সে গুলো বের করে ঠান্ডা করে বিক্রির উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সচেতন মহল বলেন, এ এলাকায় অনেক গাছপালা ছিল। বর্তমানে গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এই কাট পুড়িয়ে কয়লা বানানোর কারণে আমাদের শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে দেখা দিয়েছে। সরকারি নিয়মনীতিকে কেয়ার করে এসকল ব্যক্তি কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছে।
সূত্র জানায়, উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতর থেকে চারবার অভিযান চালিয়ে চুল্লিগুলো গুড়িয়ে দিলেও বন্ধ হয়নি এ অবৈধ ব্যবসা। প্রতিবারই আরও নতুন নতুন চুল্লি তৈরি হয়েছে। ফলে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, উজাড় হচ্ছে গাছপালা অপরদিকে স্থানীয়রা শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে ভুগছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন বলেন, এদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের উপর নানা হুমকি ধামকি নেমে আসে বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই সাথে এই এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকেও পোহাতে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনা। এর আগে অনেকবার এলাকাবাসীরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগও দিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, কতিপয় ব্যক্তি জোটবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে মাটির চুল্লি বানিয়ে কাঠ ও শিসা পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছে। এমনকি সরকারি দাতব্য চিকিৎসালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকাতেও তারা এ ক্ষতিকর কয়লা তৈরির চুল্লি নির্মাণ করেছে। উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে অবাধে কয়লা তৈরি হওয়ায় নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের জিয়া মোল্লা, ছোট্ট মোল্লা, শহিদ মোল্লা, হারুন মোল্লা, রফিক মোল্লা, তৌকির মোল্লা, কবীর শেখ, হাবিব হাওলাদার, তসলিম মিয়া, মনির শেখ কামরুল ফারাজী এবং ধূলগ্রামের হরমুজ সর্দার, রকশেদ সর্দার, ফারুক হাওলাদার এ অঞ্চলে ১০০টি চুল্লি তৈরি করে কয়লা বানিয়ে আসছেন। কিন্তু তারা এতটাই দুর্র্ধষ যে স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো দূরের কথা মুখ খুলতেও সাহস করেনা। মাটি, ইট ও কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি করা চুল্লিতে প্রতিদিন কয়েক’শ মণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে কয়েকজন চুল্লি মালিকের সাথে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে আমাদের ব্যবসা চালাতে হয়। স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সব মহলকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই তারপর ব্যবসা চালাই। এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলার নিবার্হী অফিসার মেজবাহ উদ্দীন বলেন, খোজ খবর নিয়ে দ্রুতই অভিযান চালানো হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।