Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকার গণতন্ত্রের লেবাসে মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত করছে -মির্জা ফখরুল

| প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : গণতন্ত্রের লেবাস পরে সরকার ‘মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে মানবতা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে, সবচেয়ে বেশি হচ্ছে এই অঞ্চলে। আজকে গণতন্ত্রের নামে, গণতন্ত্রের লেবাস পরে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আমাদের ওপরে চাপিয়ে দিয়েছে। আমাদের এখানে মানুষের কোনো স্বাধীনতা নেই, কথা বলার স্বাধীনতা নেই, মুক্ত চিন্তা বলে কিছু নেই। এখানে জীবনের নিরাপত্তা নেই, এখানে মানুষ তার সংগঠিত হওয়ার কোনো রকমের কোনো সুযোগ নেই। আজকেও তো আমাদের পার্টি অফিসের সামনে থেকে একজনকে ধরে নিয়ে গেল। তারা (সরকার) যা করছে তা-ই করছে।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য, তার মানবতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য, গুম হওয়া পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য এখন সকলকে উঠে দাঁড়াতে হবে। এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেয়ার জন্য। মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটে এই ধরনের ইনক্লুসিভ নির্বাচনের মাধ্যমে সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই রাজনৈতিক সংকটসহ সকল সংকটের অবসান হবে বলে আমরা মনে করি।
সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে সেন্টার ফর ন্যাশলিজম স্টাডিজের উদ্যোগে ‘রোহিঙ্গা সংকট : রাষ্ট্র নাকি মানবতা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মিয়ানমারের ব্যাপারে আমাদের স্পষ্ট অবস্থানÑ আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলছি, মিয়ানমারের এই দুঃস্থ অসহায় মানুষগুলোকে আশ্রয় দিতে হবে। একই সঙ্গে তাদেরকে সসম্মানে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে যায়, তার জন্য কূটনীতিক সফল ব্যবস্থা নিতে হবে, বিশ্বজনমত গড়ে তুলতে হবে। আমাদের সরকারকেই এই উদ্যোগ নিতে হবে কারণ আমরা এর ভুক্তভোগী।
১৯৯৩ সালে বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে রোহিঙ্গা সমস্যার কথা তুলে ধরে সাবেক প্রতিমন্ত্রী বলেন, যখন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, ওই সময়ে একইভাবে মিয়ানমারে  রোহিঙ্গাদের ওপরে নির্যাতনের ফলে হাজার হাজার সম্ভবত ৩০ হাজার পরবর্তীকালে সেটা এক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। সেদিন বিএনপি প্রধান তাদের নৌকা ফেরত দেননি, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেননি। তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন, তাদের জন্য সাময়িক ছাউনি করে দিয়েছেন, তাদের খাবার সরবরাহ করেছেন। শুধু তাই নয়, মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড সীমান্তে মোতায়েন করেছিলেন।
অসহায় রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সরকারের নীতির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছেন, তারা অন্যের ওপর নির্ভরশীল, নিজেদের কিছু করার শক্তি নেই, সেই মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত করে দিচ্ছে। এক সময় বাংলাদেশের সুনাম ছিল মানবতা দিয়ে। একাত্তর সনে বিশ্ববিবেক জাগ্রত হয়েছিল আমাদের ওপর পাকিস্তানি হানাদারকে নির্যাতনের ফলে। এই সরকার কোনোভাবে কোমর সোজা করে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের যে চেহারা সেই চেহারা নিয়ে দাঁড়াতে পারছে না। পারছে না এ জন্য যে, তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। জনগণের ওপরে তাদের ভিত্তি নেই। মানুষের পালস তারা বুঝে না। জনগণ কি চায়, তাদের ভাষা উপলব্ধি করতে পারে না। তারা গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সংগঠনের প্রধান ব্যারিস্টার মীর মো. হেলালউদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ